কাইছার হামিদ মহেশখালীঃ
প্রচুর পোষ্টার, ফ্যাস্টুন ও ব্যানারে ছেঁয়ে গেছে উপকূলীয় অঞ্চল মহেশখালী ব্রিজের পূর্বপার্শ্বে বদরখালী ইউনিয়ন। বহুল প্রতিক্ষিত আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সমবায় প্রতিষ্ঠান কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন।
আসন্ন ২৪ সেপ্টেম্বর এ নির্বাচনকে ঘিরে উপকূলীয় অঞ্চলটিতে রাতও দিনের মতো চলছিলো প্রচার-প্রচারণা। গত ২২ তাং বদরখালী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রঙ্গণে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের উপস্থিতিতে উম্মুক্ত মঞ্চের আলোচনার মাধ্যমে শেষ হয় অানুষ্ঠনিক প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনের আগ মুর্হুতেও প্রার্থীদের বিরামহীন প্রচারনা চোখে পড়ে। প্রদত্ত তফসিলানুসারে সমিতির ১২ পদের বিপরীতে মোট ৩৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা পরবর্তী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীকও বরাদ্দ দেওয়ার মধ্যদিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েছেন। অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে সভাপতি পদে ৪জন, সহসভাপতি-৫ জন, সম্পাদক পদে ৫জন এবং ৯টি ওয়ার্ডে পরিচালক (সদস্য) পদে ২৪ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে রয়েছেন।
নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে সভাপতি-পদে লড়ছেন ৪জন। তারা হলেন প্রবীণ সমবায়ী সাবেক তিনবারের সম্পাদক দেলোয়ার হোছাইন এমএ (গোলাপ ফুল), বর্তমান কমিটির সভাপতি নুরুল আলম সিকদারের ছেলে ছরওয়ার আলম সিকদার (চেয়ার), সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত আবদুল হান্নানের বড়ছেলে নুরে হাবিব তছলিম (ছাতা) ও মনজুর আলম (ডামি প্রার্থী)। তবে সভাপতি পদে মুল লড়াই হবে দুই জনের মধ্যে দেলোয়ার হোছাইন এমএ ও ছরওয়ার আলম সিকদারের মধ্যে। তবে ভোটার মাঠে ন্যায়পরায়ণ ও স্বচ্ছ মানুষ হিসাবে সভাপতি প্রার্থী দেলোয়ার সিংহাসন দখল নিতে পারে।
সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন পাঁচজন। তাদের মধ্যে ভোটের মাঠে আছেন- সাবেক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী চৌধুরী (দেওয়াল ঘড়ি), সাবেক প্রয়াত সম্পাদক এ কে এএম ইকবাল বদরীর সহোদর এ এম এসতেফাজুর রহমান (আনারস), নতুন মুখ মইন উদ্দিন (চাকা)। অন্য দুইজন নজরুল ইসলাম ও আরিফ জুনায়েত রাসেল (ডামি প্রার্থী)। এখানে ত্রি-মূখী ভোট যুদ্ধের আভাস পেলও মুলত দু’মূখী যুদ্ধের মধ্যে জনপ্রিয়তা ধরে রেখে জয়ের লক্ষে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন মোহাম্মদ আলী চৌধুরী ও সাবেক সম্পাদক মরহুম ইকবাল বদরীর সহোদর এসতেফাজুর রহমান। তবে সহোদরের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে গোপনে ভোটারদের মন জয় করে মসনদ নিজের কব্জায় নিয়ে নিতে মরিয়া এ এম এসতেফাজুর রহমান। সমিতির ৯টি ওয়ার্ড থেকে ২৮জন প্রার্থীর মধ্যে নির্বাচিত হবেন ৯জন পরিচালক(সদস্য)।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অবিশ্বাস হলেও সত্যি যে বদরখালী জনপদটি বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় চারদিকে নির্বাচনী উত্তাপ বিরাজ করছে। এ উৎসবের আমেজ উপকূলীয় অঞ্চলের বদরখালী ইউনিয়নটির রাস্তাঘাটসহ অলিগলিতে সাজগোজে ভরে উঠেছে। তিন বছর পর পর অনুষ্ঠঠিত হয় এ নির্বাচন। উপজেলার ২৬২ শেয়াারের অধীন ১৫০০ ভোটের ৬০ হাজার জনগোষ্টির সম্পদ বদরখালী সমবায় ও কৃষি উপনিবেশ সমিতি। তারা আজ প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে আগামী তিনবছরের জন্য নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচিত করবেন। প্রার্থীরা প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের ধারে ধারে গিয়ে প্রচার প্রচারণা ও কুশল বিনিময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নির্বাচন মূখী উপকূলীয় অঞ্চল বৃহত্তর বদরখালী বাজার, গ্রামের অলিগলি প্রার্থীদের তোরন ব্যানার ফ্যাস্টুনে ছেঁয়ে গেছে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন প্রার্থীরা পক্ষে ভোটারদের কাছে ও প্রচারণায় ব্যাপক প্রচারনা চালাচ্ছেন। চারিপাশে প্রার্থীরা তাদের নিজেদের মত করে বিভিন্ন আশা প্রত্যাশা ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে পোষ্টার ব্যানারের মাধ্যমে নিজ নিজ পরিচয় ফুটিয়ে তুলছেন।
প্রচার প্রচারণায় শুধু এখানে সীমাবদ্ধ নয়! তৈরী করা হয়েছে বাজারের মোড়ে মোড়ে সহ মহেশখালী সেতুর পূর্বপাড়-বদরখালী ফেরীঘাট সংলগ্ন এলাকায় প্রার্থীদের লাগানো হয়েছে বিলবোর্ড। তৈরি হয়েছে বদরখালী জুড়ে এক আনন্দঘন পরিবেশ। বিধিনিষেধের পূর্বে প্রতিদিনই প্রার্থীদের মাইকে আওয়াজ ও নির্বাচনী গানে মুখরিত হয়ে উঠেছিলো এ জনপদ। প্রচার রয়েছে, নির্বাচনের শেষ মুর্হুতে এসে বিত্তশালী প্রার্থীরা গতবারের মতো টাকা দিয়ে ভোট কিনবে। এমন ভাষ্য ভোটারদের।
ভোটারদের অভিমত, নির্বাচনের সময় টাকা দিয়ে যে প্রার্থী ভোট কিনবে, তিনি বিজয়ী হলে পরে সমিতির তহবিল নয়ছয় করে সেই টাকা হাতিয়ে নেবে। তাই টাকা দিয়ে নয়, বরং সভাপতি ও সম্পাদক পদে সৎ যোগ্য ও পরীক্ষিত সমবায়ী এবং ন্যায় বিচারক দেখে সেই প্রার্থীকে ভোট দেওয়া সবার উচিৎ। তারা জানান, এমন প্রার্থী নিবার্চিত করবেন, যারা অর্থ নয় সেবাকে প্রধান্য দিয়ে অত্র সমিতির সহায়সম্পদ রক্ষা করবে।