:: গিয়াস আহমেদ ::
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের (বোরি) প্রাকৃতিক হ্যাচারিতে ফোটানো অলিভ রিডলি টার্টল বা জলপাই রঙা সামুদ্রিক কাছিমের আরো ৩২টি বাচ্চা গতকাল বুধবার দুপুরে সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে। গতকাল উখিয়ার সোনারপাড়া সৈকতে অবস্থিত বোরির হ্যাচারিতে এসব বাচ্চা ফুটে মাটি থেকে বের হয়ে আসে। এরপর দুপুরে সাগরে পূর্ণ জোয়ার চলাকালে কাছিমের বাচ্চাগুলো সাগরে অবমুক্ত করেন বোরির সমুদ্রবিজ্ঞানীরা।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্র বিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর জানান, দেশে প্রথমবারের মতো ইনসিটু বা স্বস্থান পদ্ধতিতে সফলভাবে হ্যাচারিতে রিডলি বা জলপাই রঙা কাছিমের বাচ্চা ফুটিয়েছে বোরির বিজ্ঞানীরা। এরমধ্যে মঙ্গলবার হ্যাচারিতে ফুটে বের হওয়া ৪৬ বাচ্চা এবং গতকাল বুধবার ফুটে বের হওয়া আরো ৩২টি বাচ্চা সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে। আর সবগুলো বাচ্চাই ছিল সুস্থ ও সবল। এদেরকে সৈকতে অবমুক্ত করার পর সফলভাবে ও স্বচ্ছন্দে পায়ে হেঁটে সাগরের পানিতে চলে যায়। এরআগে সোমবার একটি বাচ্চা পরীক্ষামূলকভাবে সাগরে অবমুক্ত করা হয়। এছাড়া আরো দুটি বাচ্চা বোরির ক্যাম্পাস অভ্যন্তরে অবস্থিত হ্যাচারিতে বড় করা হচ্ছে, যেগুলো এখনও সুস্থ ও সবল রয়েছে।
তিনি জানান, গত ২১ মার্চ কক্সবাজার শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে সোনারপাড়া সৈকতে তিনটি কাছিম ডিম পাড়ে। এরমধ্যে দুটি কাছিমের ডিম একদল লোক চুরি করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে বোরির বিজ্ঞানীরা একটি কাছিমের ৯০টি ডিম স্বস্থান পদ্ধতিতে বা যেখানে ডিম পেড়েছে সেখানেই সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে। আর এসব ডিম ফুটে গত চারদিনে ৮১টি বাচ্চা বের হয়। বাকী ৯টি ডিমের ভ্রæণ গঠিত হয়নি।
বোরির কাছিম গবেষণা দলের প্রধান ও সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, অ্যারিবদা বা একযোগে ডিম পাড়তে আসার জন্য বিশ^বিখ্যাত অলিভ রিডলি কাছিম বা জলপাই রঙা সামুদ্রিক কাছিম নিয়ে এটিই বোরির প্রথম গবেষণা এবং এখান থেকে পাওয়া ফলাফলও আশাতীত। এখানে ডিম ফোটার হার ৯০% হলেও বাকী ডিমগুলোতে কেন ভ্রæণ গঠিত হয়নি, তা নিয়েও বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালাচ্ছেন।