আহমেদ নেছার বাঙ্গালী :
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে গুলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘটনাস্থলে ৩ জন ও পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে ২জনের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (৭ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে বালুখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৮/ওয়েস্টে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী।
দুই মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৩২ টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটলো।
উখিয়া বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমারের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও আরাকান সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫ জন নিহত হয়েছেন। তারা সবাই আরসার সদস্য বলে জানা গেছে।
নিহতরা হলো, ক্যাম্প-৮ ওয়েস্ট এইচ-৪৯ ব্লকের আনোয়ার হোসেন(২৪),এ-২১ ব্লকের মোহাম্মদ হামীম (১৬), ক্যাম্প-১৩ এর বি-১৭ ব্লকের আবুল বাশারের ছেলে নুরুল আমিন(২৪) ও ক্যাম্প-১০ এর এইচ-৪২ ব্লকের আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. নজিমুল্লাহ ও একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ৮-এপিবিএন পুলিশের এএসপি মো ফারুক আহমেদ জানান শুক্রবার ভোরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী দু’দলের মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তিনজনের মরদেহ পাওয়া যায়। আহত আরও দু’জনকে আইওএম পরিচালিত হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
রোহিঙ্গারা জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে আরসা ও আরএসও’র মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এরই জেরে দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে। এতে ৫ জন মারা গেছেন। এ ঘটনায় ক্যাম্পজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
৮-এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার (অপারেশন অ্যান্ড মিডিয়া) ফারুক আহমেদ বলেন, ক্যাম্পে একাধিক সশস্ত্র গ্রুপের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে খুনোখুনি বাড়ছে। এরইমধ্যে ভোরে দুই সন্ত্রাসী দলের গোলাগুলির ঘটনায় ৫ জন নিহত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে, নিহত ৫ জনই আরসার সদস্য।
ফারুক আহমেদ আরও বলেন, কে আরসা, কে আরএসও–সেটি বিষয় নয়। ক্যাম্পে কোনও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলবে না। যারাই অপরাধে জড়াবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। হত্যাকারীদের ধরতে অভিযান চলছে।
৮ এপিবিএন অধিনায়ক(অতিরিক্ত ডিআইজি) আমির জাফর বলেন,”
" দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে। নিহতরা আরসার সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।"
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান,
ঘটনার পর পরই পালিয়ে গেছে প্রতিপক্ষ গ্রুপ। তাদের ধরতে এপিবিএন ও পুলিশি অভিযান শুরু করেছে। ঘটনাস্থল আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে কুতুপালং ১ নম্বর ক্যাম্পে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে এবাদুল্লাহ নামে এক রোহিঙ্গা মাঝি নিহত হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যানুযায়ী, গত দুই মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই নিয়ে ৩২ টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটলো।