কক্সবাজার , ২৫ আগস্ট ২০২৩।
নিজ দেশ মিয়ানমারে ২০১৭ সালে চরম বর্বরতার গণহত্যার বিচার দাবি ও নিজেদের ভিটে বাড়িতে পূর্ণ নাগরিক অধিকার দিয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনসহ ৫ দফা দাবিতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছে রোহিঙ্গারা।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা আগমনের ৬ বছর পুর্তিতে গনহত্যা দিবস পালন উপলক্ষে আজ শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টা হতে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত উখিয়া ও টেকনাফের ৪ টি ক্যাম্পে বৃষ্টির মধ্যে পৃথকভাবে এই সমাবেশ চলে বলে জানিয়েছে রোহিঙ্গা নেতারা।
এসব সমাবেশে রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশে দ্রুত প্রত্যাবাশন, জাতিগত পরিচয়ের স্বীকৃতি মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্য সেফ জোন, রাখাইন ষ্টেটে নিজেদের ভিটে বাড়ি এবং নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়া সহ বিভিন্ন দাবী জানিয়েছেন। ২৫ আগষ্ট কে গনহত্যা ও কালো দিবস আখ্যায়িত করে তারা নিজ ভূমি মিয়ানমারের আরাকানে ফিরে যেতে চায় এবং গনহত্যার বিচার দাবী করেন।
‘গো বেক হোম’- প্রতিপাদ্যে সমাবেশে নানা দাবি নিয়ে বক্তব্য রাখেন ক্যাম্প ও ব্লক ভিত্তিক কমিউনিটি রোহিঙ্গা নেতারা। এসময় উপস্থিত রোহিঙ্গাদের একবাক্যের দাবি- ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’।
উখিয়ার কুতুপালং এর লম্বাশিয়া, পালংখালীর জামতলী, ময়নারঘোনা , টেকনাফের লেদা ক্যাম্পে বড়ো সমাবেশ করে। সমাবেশে তারা ২০১৭ সালে তাদের উপর ঘটে যাওয়া হত্যা ও ধর্ষণসহ নিপীড়নের সুষ্ঠু বিচার দাবি, রোহিঙ্গারা পূর্ণ মর্যাদা দিয়ে অবিলম্বে প্রত্যাবাসন শুরু, রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার, ৮২ সালের মিয়ানমারের সিটিজেনশীপ আইন বাতিল, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ঘর বাড়ি ফিরিয়ে দেয়া, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্য সেফ জোন প্রতিষ্ঠা সহ ৫ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এসব দাবী বাস্তবায়নে জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এসময় তাদের নিরাপদ আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ধন্যবাদ জানান। এসব সমাবেশে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) জেলা পুলিশসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে আয়োজিত সমাবেশে এআরএইচপিএইচ এর সভাপতি মোহাম্মদ জোবাইর, সৈয়দ উল্লাহ, মাস্টার নুরুল আমিন, মোহাম্মদ রফিক, জুমাদিলা বেগম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এসব সমাবেশে রোহিঙ্গারা নিজেদের দেশে ফিরে যেতে আল্লাহর কাছে মোনাজাতে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতন ও গণহত্যার শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা দেশ ছাড়া হবার ৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সমাবেশের আয়োজন। এর আগে, ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট ক্যাম্পে প্রথম বড় সমাবেশ করা হয়, যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মাস্টার মুহিবুল্লাহ। পরে তিনি মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গ্রুপ আরসার সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন।