সাকলাইন আলিফ :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সমগ্র বাংলাদেশ থেকে যেন রেলে কক্সবাজার আসা যায় সে ব্যবস্থা করা হবে। আগামী ৩/৪ বছরের মধ্যে রেলকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। রেল সম্প্রসারণে বর্তমান সরকার উল্লেখযোগ্য কাজ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শনিবার দুপুরে দোহাজারী কক্সবাজার রেলপথের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন কালে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন।
দোহাজারী কক্সবাজার রেল লাইনের কক্সবাজার প্রান্তে নির্মিত আইকনিক রেল স্টেশন প্রাঙ্গনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষ নিয়ে জাতির পিতার অনেক স্বপ্ন ছিল। তিন বছর সাত মাসের মধ্যে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। আইন লঙ্ঘন করে যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা দেশের উন্নয়ন করেনি। মাঝখানে একুশ বছর এদেশের মানুষ কষ্ট পেয়েছে। আমরা দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছি উন্নয়নের মাধ্যমে। যারা গণপরিবহনে আগুন লাগায় মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে। তারা এসব উন্নয়ন দেখেনা। তাদের চোখ অন্ধ হয়ে গেছে। তারা চাইলে আই হাসপাতাল থেকে ১০ টাকা দিয়ে চিকিৎসা করাতে পারেন। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারার কারণে তাদের মনও অন্ধ হয়ে গেছে। তারা ধ্বংস করে আর আমরা সৃষ্টি করি।
রেলমন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শুধু সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে শীতের সময় কক্সবাজারে নিয়ে আসতেন। ছোট ছোট কটেজে আমরা থাকতাম। সেখানে রান্না করে খেতাম। আর আজ কক্সবাজারের চেহারা পাল্টে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হয়নি বলে একবার আমরা ক্ষমতায় আসেনি। আমি বলেছি দেশকে বিক্রি করে আমি ক্ষমতায় আসতে চাই না।
সাধারণ মানুষ রেল ব্যবহার করে তাই বিগত সরকার গুলো রেলের উন্নয়ন করেনি। আমরা যখন কোন কাজ করি তখন সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে সেই কাজটি করি। আর সে কারণে রেলের উন্নয়নে আমরা হাত দিয়েছি। এরপর প্রধানমন্ত্রী রেলের জন্য তার সরকারের আমলে করা বিভিন্ন উন্নয়নের ফিরস্তি তুলে ধরেন।
সুধী সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ডঃ মোঃ হুমায়ুন কবির। বক্তব্য রাখেন এডিবির বাংলাদেশপ্রতিনিধি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, রেইলি ওয়াইফাই ব্যবস্থা চালু করা হবে। রেলকে আরো আধুনিক করা হবে। ঝিনুকের আদলে গড়ে তোলা কক্সবাজারের আইকনিক রেলস্টেশন টি দেশের সবচেয়ে সুন্দর স্টেশন উল্লেখ করে, দেশের এই সম্পদ কে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানান সবাইকে।
এ রেল স্টেশন ওরা নির্মাণে যেসব শ্রমিকরা কাজ করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর সাথে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম, স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সারওয়ার কমল, রেলের মহাব্যবস্থাপক, দোহাজারী কক্সবাজার রেললাইনের প্রকল্প পরিচালক সহ অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য সংসদ সদস্য সরকারি বেসরকারি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা সামরিক অসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজার আইকনিক রেল স্টেশনে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত হলে স্থানীয় শিল্পীরা নৃত্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
শুধু সমাবেশ শেষ করে নানা শ্রেণী পেশার যাত্রীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেই টিকিট কেটে কক্সবাজার থেকে রামু যান রেলের যাত্রী হয়ে।
রামু থেকে প্রধানমন্ত্রীর চলে যান মহেশখালীর মাতার বাড়িতে। সেখানে তিনি গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেলের উদ্বোধন, প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শুভ কক্সবাজার জেলায় ১৪ টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও চারটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
এরপর মাতার বাড়িতে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। জনসভায় তিনি সমসাময়িক বিষয় নির্বাচন সহ নানা বিষয়ে কথা বলেন। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।