দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নাশকতাকারীদের নিকট অন্যতম অস্ত্র সরবরাহকারী শাহাদাত হোসেন দোয়েল ওরফে দোয়েল্যাকে ৩টি দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করেছে র‍্যাব।

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দুপুর আড়াই টায় চকরিয়া পৌরসভার মাষ্টারপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন।

গ্রেপ্তার শাহাদাত হোসেন দোয়েল ওরফে দোয়েল্যা চকরিয়া পৌরসভার বাটাখালির  (মাস্টারপাড়া) ফজলুল হকের ছেলে।

র‍্যাব-১৫ অধিনায়ক জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার দুপুরে কক্সবাজারের চকরিয়ার পৌরসভারস্থ মাষ্টারপাড়া এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নাশকতাকারীদের নিকট অন্যতম অস্ত্র সরবরাহকারী শাহাদাত হোসেন দোয়েল প্রকাশ দোয়েল্যাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় দেশীয় তৈরী ২টি ওয়ানশুটারগান, ১টি এলজি, ১টি ধারালো চাকু এবং ৫টি সিগন্যাল বাতি।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় যে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নাশকতাকারীরা তার মাধ্যমে অস্ত্র সংগ্রহ করে। গ্রেফতারকৃত আসামী অস্ত্রের চাহিদা পাওয়ার পর সে বিভিন্ন অস্ত্রের কারিগরদের নিকট থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করতো এবং তার নিজের দু'জন কারিগর রয়েছে তাদের মাধ্যমে অস্ত্র তৈরি করে নাশকতাকারীদেরকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা অর্থের বিনিময়ে এই অস্ত্রগুলো সরবরাহ করতো। সে ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অস্ত্র নাশকতাকারীদের নিকট সরবরাহ করেছে বলে স্বীকার করে।

 লে. কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন জানান, গ্রেপ্তার শাহাদাত হোসেন দোয়েল প্রকাশ দোয়েল্যা একজন আত্মসমার্পণকৃত কুখ্যাত জলদস্যু ও চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। তার পৈত্রিক বাড়ি কক্সবাজারের মহেশখালীর কালামারছড়া হলেও বিগত কয়েক বছর ধরে সে চকরিয়া পৌরসভার মাস্টারপাড়া এলাকায় বসবাস করে আসছিল। সে মহেশখালীতে থাকা অবস্থায় জলদস্যুতা, ডাকাতি, অপহরণ, অস্ত্র সরবরাহ, বিভিন্ন হত্যাকান্ড, নির্বাচনে অরাজকতা, মারামারি ও সহিসংতা সৃষ্টি, হত্যাকান্ড সংঘটিত করতো। এ সকল অপরাধে জড়িয়ে পড়ে সে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে একপর্যায়ে চকরিয়ায় বসবাস শুরু করে এবং সেখানেও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িয়ে পড়ে। গ্রেপ্তারকৃত দোয়েল্যা মূলত এলাকার রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের ভাড়াটে

খুনি হিসেবে কাজ করতো। নির্বাচনের প্রার্থীদের মধ্যে যে কারও হয়ে কাজ করা এবং উক্ত প্রার্থীর নির্দেশনা মোতাবেক বিরোধী প্রার্থীদের অস্ত্রের ভয়-ভীতি প্রদর্শনসহ নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর জন্য হুমকি দিতো। এছাড়াও বিরোধী প্রার্থীদের সমর্থকদেরও ভীতি প্রদর্শন, হুমকি, অপহরণ, গুম'সহ তাদের বসতঘরে অগ্নিসংযোগ এবং ক্ষেত্র বিশেষ হত্যাকান্ড সংঘটিত করতো বলে জানা যায়। রেকর্ডপত্র যাচাইয়ান্তে তার বিরুদ্ধে হত্যা, খুন, অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধে মহেশখালী ও চকরিয়া থানায় সর্বমোট ১০টির অধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে র‍্যাব-১৫ অভিযান পরিচালনা করে সর্বমোট ১১ জন নাশকতাকারীকে গ্রেপ্তারসহ ২টি বিদেশী পিস্তল, ১৬টি এলজি, ৮টি এসবিবিএল, ৪টি ওয়ানশুটারগান, ২৮টি ককটেল, ৬.৯ কেজি বিস্ফোরক এবং ১.৫ কেজি মারকারি (পারদ) উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার শাহাদাত হোসেন দোয়েল ওরফে দোয়েল্যার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।