প্রিন্ট এর তারিখঃ মার্চ ১৯, ২০২৫, ১০:২৬ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ মার্চ ৩, ২০২৪, ৮:৩২ পি.এম
এবার টেকনাফ সমুদ্রসৈকতে ভেসে এল মরা পরপইস
আজকের সাহেদ :
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে সামুদ্রিক জোয়ারের সঙ্গে আবারও ভেসে এল মরা পরপইস। বিপন্ন প্রজাতির স্তন্যপায়ী এই প্রাণীটির মৃতদেহ আজ রোববার সকালে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিনড্রাইভ সড়কের টেকনাফ সৈকতের চৌকিদার পাড়ায় ভেসে আসা। বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের(বোরি) বিজ্ঞানীরা মৃত প্রাণীটির নমুনা সংগ্রহ করে মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে চেষ্টা করছেন। এ সময় পাশের শামলাপুর সৈকতে একটি অলিভ রিডলি বা জলপাই রঙের সামুদ্রিক কচ্ছপ ভেসে এসেছে।
এর আগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি হিমছড়ি সৈকতে একই প্রজাতির একটি পরপইসের মৃতদেহ ভেসে এসেছিল। এই পরপইসটি উদ্ধারের পর বোরির বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন,দেশে এর আগে পরপইস ভেসে আসেনি।
গত ১৪ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে এক নাগাড়ে সামুদ্রিক প্রাণীর মৃতদেহ ভেসে আসে। এর মধ্যে চারটি ডলফিন, অন্তত ৮০টি অলিভ রিডলি ও বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণী রয়েছে।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম এ তথয নিশ্চিত করে জানান, রোববার সকালে জোয়ারের সঙ্গে পরপইসটি ভেসে আসে। এটির দৈর্ঘ্য ৪ ফুট ৯ ইঞ্চি।ওজন ৪৫ কেজি। বয়স ৯ থেকে ১০ বছর। দেখতে ইরাবতী ডলফিনের মতো জলজ স্তন্যপায়ী এ প্রাণী ইংরেজিতে ইন্দোপ্যাসিফিক ফিনলেস পরপইস হিসেবে পরিচিত। বৈজ্ঞানিক নাম নিওফোকেনা ফোকেনয়েডস। কিন্তু এদের পৃষ্ঠীয় পাখনা থাকেনা। বাচ্চা অবস্থায় কালো রঙের হলেও বয়সের সঙ্গে রঙ বিবর্ণ হয়ে যায়। এটি ৫-৬ ফিট পর্যন্ত লম্বা হয়। এদের মজবুত শরীর টেপা ফ্লুকের মত এবং মাথা অনেকটা গোলাকার। এই প্রানীটি অগভীর জল, জলাভূমি এবং মোহনায় বিচরণ করতে পছন্দ করে। এরা সাধারণত একাকী চলাফেলা করে। তবে মাঝেমধ্যে খাদ্য সংগ্রহের সময় এদেরকে ৫ থেকে ১২টি বা ৫০ টির অধিক দলবব্ধ অবস্থায় ঘুরতে দেখা যায়। এরা মাছ, স্কুইড, চিংড়ি, অক্টোপাস এবং মাঝে মাঝে সামুদ্রিক উদ্ভিদও খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। সাধারণত বসন্তে বা গ্রীষ্মে প্রাণীটি বাচ্চা প্রসব করে। বাচ্চারা জন্মের পর মায়ের পিঠে লেগে থাকতে দেখা যায়।
পরপইসটির মাথায় রক্তাক্ত আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ মৎস্য করপোরেশনের চেয়ারম্যান(অতিরিক্ত সচিব) ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর। তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে কোনো নৌযানের প্রপেলারের সঙ্গে মাথায় ধাক্কা খেয়ে অনাঙ্খিকভাবে প্রাণীটি মারা পড়েছে। এ ছাড়া মানুষের অবিবেচনাপ্রসূত আচরণ,নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার,অপরিকল্পিত পর্যটন,দখল,দূষণ,জলবায়ু পরিবর্তন,বাসস্থান বিনষ্ট ইত্যাদি কারণে বিশ্বব্যাপী বন্যপ্রাণীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তালিকায় এটি বিপন্ন প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত।
ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সোসাইটির সর্বশেষ
জরিপে বঙ্গোপসাগরে মোট ১৩ জাতের সিটাসিয়ান বা সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৮ প্রজাতির ডলফিন, ৪ প্রজাতির তিমি ও মাত্র এক প্রজাতির পরপইস রয়েছে।
Email : bdworld24net@gmail.com