আলম নুরুল :
কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদী সীমান্তে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, সেনাবাহিনীর সদৃশ কয়েক সেট পোষাক ও সহ সংঘবদ্ধ ডাকাতদলের সদস্য ছয়জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে কোস্টগার্ড।
কোস্টগার্ড জানিয়েছে, আটকরা নাফ নদী ও সাগরের জলসীমাসহ সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ডাকাতির পাশাপাশি মাদক, অস্ত্র ও চোরাচালান সহ নানা অপরাধ সংঘটন করে আসছিল।
মঙ্গলবার দুপুরে কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান স্টেশন ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. মহিউদ্দিন জামান।
তিনি জানান, সোমবার দুপুরে নাফ নদীর টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালী খড়েরদ্বীপ এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়েছে।
আটকরা হল, উখিয়া উপজেলার থাইংখালী ১৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হোসেন আহমদের ছেলে মোহাম্মদ ইব্রাহিম (২৩), একই ক্যাম্পের সুলতান আহমেদের ছেলে মোহাম্মদ আরিফ (৩৩), নূর হাকিমের ছেলে মো. মাহমুদুর রহমান (১৮), বালুখালী ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সৈয়দ আহমেদের ছেলে মো. নবী হোসেন (২৮) এবং টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং ২২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নুরুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ আমিন (৩৩) ও একই ক্যাম্পের মোহাম্মদ হাশেমের ছেলে মোহাম্মদ কানিজ (২৪)।
সংবাদ সম্মেলনে লে. কমান্ডার মহিউদ্দিন জামান বলেন, সোমবার দুপুরে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ সংলগ্ন নাফ নদীর মোহনায় সংঘবদ্ধ ডাকাতদল মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে খবরে কোস্টগার্ডের একটি দল অভিযান চালায়। এতে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে কোস্টগার্ড সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে ট্রলারে থাকা ডাকাতদলের সদস্যরা টেকনাফের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। এসময় ধাওয়া দিলে ডাকাতদলের ট্রলারটি নাফ নদীর রঙ্গীখালী এলাকার খড়েরদ্বীপ এলাকায় পৌঁছে ডাকাতদের নামিয়ে দেয়। পরে ট্রলারটি মিয়ানমার দিকে ডুকে পড়ে।
” পরবর্তীতে কোস্টগার্ডের আরেকটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে খড়েরদ্বীপটি ঘিরে ফেলে। এসময় কোস্টগার্ড সদস্যরা অভিযান চালিয়ে দ্বীপের বনে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় ৬ ডাকাতকে আটক করে। ”
” পরে দ্বীপটিতে তল্লাশী চালিয়ে ২ টি বিদেশি পিস্তল, ১২ টি দেশিয় তৈরী বন্দুক, ৪ টি পিস্তলের ম্যাগজিন, ৪৫০ টি গুলি, ৩৬ টি গুলির খোসা, ৪ টি রামদা, ২০ হাজার ইয়াবা, ২১ বোতল বিদেশি মদ, ৫৫১ ক্যান বিয়ার, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সেনাবাহিনীর সদৃশ ৭ সেট পোষাক, ১ টি হ্যান্ডকাফ, ১ টি ল্যান্ডফোন ও ৪ টি মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করা হয়। ”
কোস্টগার্ডের এ কর্মকর্তা বলেন, ” নাফ নদীর খড়েরদ্বীপটি মূল-ভূখন্ড থেকে জনশূণ্য এলাকায় অবস্থানের কারণে অপরাধীদের নিরাপদ আস্তানায় পরিনত হয়। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি, মাদকপাচার, অস্ত্রপাচার ও মানবপাচারসহ নানা অপরাধ সংঘটন করে আসছিল। ”
আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের অন্য সদস্যদের আটকে কোস্টগার্ড অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. মহিউদ্দিন জামান।