:: মনির মোবারক ::
গত ৪০ দিন যেন একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম। কক্সবাজারে একটা ইতিহাস তৈরী হতে চলেছে আর আমিও সেই বিশাল কর্মযজ্ঞের একটা ক্ষুদ্র অংশ হতে চলেছি এই ভাবনাটাই রাতের ঘুম উড়িয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল।
কক্সবাজারে পরিবেশ থিয়েটারের ভাবনায় মঞ্চায়ন হবে গণহত্যা বিষয়ক নাটক- কক্সবাজার গণহত্যা-১৯৭১, এমন ভাবনা থেকেই সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয় তোড়জোড়। ব্যপক পরিসরের এই আয়োজন দেখে আবারও হতবাক হয়ে যাই। ১০০র ও বেশি কলাকুশলী, একেরপর এক দৃশ্য পরিবর্তন এই বিষয়গুলো কতটা মঞ্চে ফুটিয়ে তোলা যাবে ভেবে হয়রান হয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু ভুলে গেছিলাম মঞ্চের পেছনের যাদুকর স্বপনদার কথা। তার অঙ্গুলিহেলন আর অসাধারণ নির্দেশনার জাদু কাল যেন শতদল পদ্মের মত ফুটে উঠল শহীদ দৌলত ময়দানে। মানুষ অবাক হয়ে দেখলো ২৬ টি সিকোয়েন্স কিভাবে মিশে যাচ্ছে একে অপরের সাথে,যন্ত্রচালিত রোবটের মত চরিত্রগুলো যেন অদৃশ্য সুতার টানে নেচে যাচ্ছিল মঞ্চে। আমারও সুযোগ হয়েছিল দুটো চরিত্র করে দেখানোর। চরিত্র বললে ভুল হবে,বাস্তব ইতিহাসের দুটো মানুষকে জীবন্ত করে দেখানোর চ্যালেঞ্জে পাস করেছি কিনা সেই বিচার দর্শকদের ওপর থাকলো। এছাড়াও অবাক হয়ে থাকার মত কাজ করেছেন সাউন্ড এবং লাইটের মানুষগুলো।
সমন্বয়কারীর দায়িত্বটা যেন শিখিয়ে দিয়ে গেল অনেককিছু। ভারী করে দিয়ে গেল অভিজ্ঞতার পাল্লা। এতবড় কর্মযজ্ঞ কাছ থেকে দেখে মনে হল অর্পিত দায়িত্বের সঠিক বাস্তবায়ন কতটা জরুরী। এই বিচারের ভারও থাকলো শিল্পী-কলাকুশলীদের ওপরই। যেকোন অনিচ্ছাকৃত ভুলে কারও মনে দুঃখ দিলে সেটাও নিতান্তই দায়িত্বের খাতিরে। তিনটি অসাধারণ নাচের জন্য কোরিওগ্রাফার অনিকেত পাল এবং নৃত্যশিল্পীদেরও ধন্যবাদ।
জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সহ কক্সবাজারের সকল গণমাধ্যমকর্মীদের ও ধন্যবাদ।
একদম শেষে যারা এই বিশাল আয়োজনের সবটুকু অধিকার করে আছেন সেই নাট্য-শিল্পীদের এবং দর্শকদের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ভালোবাসা।
এমন আয়োজন আরো হোক,সব জেলায় হোক।
আসুন নাটক দেখি,ইতিহাস জানি।