শিরোনাম :
টেকনাফ উপজেলার হোয়াইকং ইউনিয়নে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১টি বাড়ি পুড়ে ছাই,ক্ষয়ক্ষতি ৪০ লাখ টাকা সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিতকরণ এবং রাত্রিযাপন নিষিদ্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন ডাকাতের কবলে পড়ে মিয়ানমারের আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা ১৬ জেলে ফেরত এনেছে বিজিবি “১ টাকায় হাজার টাকার বাজার” নাফ নদীর মোহনায় স্পিডবোট ডুবি শিশু সহ ২ জন নিখোঁজ, জীবিত উদ্ধার-৮ কক্সবাজারে নাতনির স্বামীর হাতে নানী খুন বিকাশের দোকান চুরিতে ২লাখ ৭০হাজার টাকা উধাওঃব্যথার ওপর সংবাদকর্মী ব্যথা নৌবাহিনীর অভিযান : মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্টের চুরি হওয়া কোটি টাকার মালামাল জব্দ মালয়েশিয়া বলে ইনানী সৈকতে শতাধিক রোহিঙ্গাকে রেখে পালালো দালালরা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কক্সবাজারের অনেক এলাকায় খাবার পানির সংকট :ইয়াছমিন-রহিমার পানির দুঃখ ঘুচালো হাইসাওয়া

কক্সবাজারে ব্যাডমিন্টন খেলার দ্বন্দ্বে জোড়া খুন; অভিযুক্ত সহোদর গ্রেফতার; ছুরি জব্দ

নিউজ রুম / ২১ বার পড়ছে
আপলোড : শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১৪ পূর্বাহ্ন

রহমান তারেক :
কক্সবাজারের বাসটার্মিনাল এলাকায় ব্যাডমিন্টন খেলাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে দু’ভাইকে খুনের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দিনগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের পূর্ব লারপাড়া প্রাথমকি বিদ্যালয় এলাকায় এ জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ভোররাত চারটার দিকে কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল এলাকা হতে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। তাদের কাছ থেকে, হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও লোহার রড় জব্দ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ওসি। এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ।

নিহতরা হলেন, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা পূর্ব লারপাড়া এলাকার আবদুল হামিদ মনু ড্রাইবারের ছেলে কায়সার হামিদ (২৮) ও নুরুল হুদা জুনু ড্রাইভারের ছেলে শহিদুল ইসলাম ওরফে সাইদুল (৩০)। নিহতরা সম্পর্কে আপন চাচাত ভাই।

এসময় আহত হন মুফিজ উদ্দিন (২১) নামে আরো একজন। তিনি একই এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে। তাকে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

দুই ভাইকে ছুরিকাঘাতে খুনের অভিযোগে গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ঝিলংজা ইউনিয়নের পূর্ব লারপাড়ার আবদু খলিলের ছেলে জয়নাল আবেদীন (২৮) ও কামাল উদ্দিন (২৫)। তাদের কাছ থেকে খুনে ব্যবহৃত একটি সুইচ গিয়ার (চাকু) এবং লোহার রড উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনা নিয়ে মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম পিপিএম বলেন, যে কোন প্রকার অপরাধ দমনে আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ। পুলিশ সুপার বলেন,এ ঘটনায় নিহতের বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে কক্সবাজার সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতার পরবর্তী তাদের তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে এবং দেখানো মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত রক্ত মাখা ধারালো ছোরা ও লোহার রড উদ্ধার করা হয়। পলাতক আসামী আতিকাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানায়, ঝিলংজা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের মাঠে ব্যাডমিন্টন খেলার আয়োজন করে এলাকার কিশোররা। অন্যদিনের মতো সোমবার রাতেও সেখানে খেলছিল একদল কিশোর। সে সময় কায়সার ও সাইদুল গিয়ে খেলারত কিশোরদের ব্যাড নিয়ে খেলার চেষ্টা চালায়। তখন এলাকার খলিলের ছেলে আতিক নামের কিশোর তাদের সাথে অশালীন আচরণ করলে কায়সার ও সাইদুল তাকে প্রহার করে। মাইর খাওয়ার পর আতিক বাড়ি গিয়ে তাকে প্রহারের বিষয়টি জানালে তার বড় ভাই জয়নাল, কামাল ও চাচাত ভাই মিজানসহ অন্যরা ধারালো দা, ছুরি নিয়ে বের হয়। পথে কায়সার ও সাইদুলকে পেয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে দু’জনকে বুকের উপর অংশে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় তারা। রক্তাক্ত অবস্থায় তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে সিএনজি যোগে হাসপাতালে নেয়ার পথে কায়সার ও সাইদুল মারা যায়।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম রাতেই কক্সবাজার সদর হাসপাতালে যায়। অপর কয়েকটি টিম যায় ঘটনাস্থল বাস টার্মিনাল এলাকার পূর্ব লারপাড়ায়। ততক্ষণাতই খুনিদের ধরতে অভিযান শুরু করে পুলিশ। কিন্তু গা-ঢাকা দেয়ায় তাদের কাউকে তখন পাওয়া যায়নি। পরে গোয়েন্দা ও সোর্স লাগিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যহত রাখা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ভোররাতেই খুরুশকুল এলাকা হতে তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

ওসি আরো জানান, ভোরেই তাদের নিয়ে এলাকায় যায় পুলিশ দল। তাদের দেখানো মতে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও ধারালো অস্ত্র এবং লোহার রড উদ্ধারের পর জব্দ করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান বলেন, সোমবার রাত পৌনে ১২ টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে আনার আগেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণজনিত কারণে দুজনের মৃত্যু হয়। অপরজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়। মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

স্থানীয় সমাজ নেতা শামশুল আলম শ্রাবণ জানান, অতি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে জোড়া খুনের মতো ঘটনা এলাকাবাসীকে হতবাক করেছে। কায়সার হামিদ মাত্র ছয়মাস আগে বিয়ে করেছেন। বউয়ের হাতের মেহেদি মুছার আগেই স্বামীর মৃত্যুতে আহাজারি চলছে পরিবারে। অভিযুক্ত দুজনকে পুলিশ অতিসহসা ধরতে পারায় নিশ্চিত আরো অঘটন এড়ানো গেছে বলে ধারণা স্থানীয়দের। তা না হলে নিহতদের স্বজনরা অঘটন ঘটানোর সম্ভাবনা ছিল।

এদিকে, ময়নাতদন্তের পর বিকেলে মরদেহ দুটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার মাগরিব নামাজের পর স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।

কক্সবাজার সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নাজমুল হক জানান, ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও চিহ্নিত করে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর