রহমান তারেক
কক্সবাজারে জেন্ডার রেসপন্সিভ সাংবাদিকতা বিষয়ক ৩ দিনব্যাপী কর্মশালা শেষ হয়েছে গতকাল বুধবার (১১ অক্টোবর)। এর আগে সোমবার (৯ অক্টোবর) শহরের তারকা মানের হোটেলে জাতিসংঘের নারী বিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেনের উদ্যোগে ও জার্মানভিত্তিক সংবাদ সংস্থা ডয়েচে ভেলে একাডেমির সহযোগিতায় কর্মশালা শুরু হয়।
কর্মশালার সমাপনী দিনে ইউএন উইমেন কক্সবাজার সাব অফিসের হেড সিলিয়া রাজেন্দার বলেন, টেকসই সমাজ বিনির্মানে লিঙ্গ ভিত্তিক সমতা দরকার।
তিনি বলেন, ‘সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা বিষয়টি মাথায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমাজীকরণের ক্ষেত্রে নারীদের অধিকারকে গুরত্ব দিতে হবে। নারীদের কথা শুনতে হবে এবং তারা কী বলতে চায় তা জানার চেষ্টা করতে হবে। বর্তমান সমাজে নারীরা নির্যাতন সহ্য করে, কিন্তু তা প্রকাশ করে না। ফলে নারী নির্যাতনের ব্যাপারটি প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। ফলে এসব বৈষম্য থেকে নারীদের মুক্তি দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের একটি বিরাট অংশ বসবাস করছে। তাদের ক্ষেত্রেও জাতিগত বিদ্বেষের ধারণা দূর করতে হবে। নারী-পুরুষকে সমানভাবে বিবেচনা করতে হবে। সমাজে বিভিন্ন লিঙ্গের মানুষ বসবাস করে। এতে লিঙ্গ বৈষম্য না করে সকলকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা ও সম্মান করতে হবে। এতে করে আমাদের সমাজ ব্যবস্থাপনা অনেক সুন্দর হবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার সামছো-দ্দৌজা নয়ন বলেন, ‘সমাজের প্রতিটা ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারলে দেশ ও জাতি এগিয়ে যাবে। নারীরাও অনেক কিছু পারে। কিন্তু তারা সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকায় তা প্রকাশ করতে পারে না। নারীদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ রাখতে হবে। তাদের সম্মানের পাশাপাশি কাজে উৎসাহিত করলে পুরুষদের কাজও সহজ হবে।’
কর্মশালার প্রশিক্ষক ছিলেন ডয়েচে ভেলে একাডেমির প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাইনুল ইসলাম খান প্রজেক্ট অফিসার মাফিয়া মুক্তা, ইউএন উইমেনের গ্রোগ্রাম অ্যানালিস্ট নাদিরা ইসলাম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউএন উইমেনের কক্সবাজার কমিউনিকেশন্স অ্যাসোসিয়েট মাগফুজুর রহমান সানা, ডয়চে ভেলে একাডেমির প্রডিউসর জিসান পাল, কমিউনিটি কমিউনিকেশন স্কিলস ডেভেলপমেন্ট ফর সোশ্যাল অ্যাওয়ারনেস ইন কক্সবাজার প্রকল্পের ব্যবস্থাপক শিহাব জিশান প্রমুখ।
কর্মশালার মূল লক্ষ্য গণমাধ্যমে নারী—পুরুষের ভারসাম্য রক্ষা, সংবাদে নারীকে সংবেদনশীলভাবে উপস্থাপন, নারীর প্রতি সহিংসতা বিষয়ক প্রতিবেদনে সংবেদনশীল শব্দ, ছবি ব্যবহার ও নির্ভরযোগ্য তথ্যের উৎস সম্পর্কে স্থানীয় সাংবাদিকদের সম্যক ধারণা দেওয়া।
কর্মশালায় শান্তিপূর্ণ ও সমতার সমাজ বিনির্মানে সাংবাদিকরা যে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে সেই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এ ছাড়া জেন্ডার রেসপন্সিভ সাংবাদিকতা ও প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সমতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা এবং গ্রুপ ওয়ার্কে অংশগ্রহণ করা হয়।
এ কর্মশালায় প্রথম দিনে ৮ জন নারী ও ৮ জন পুরুষসহ ১৬ জন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক অংশ নেন। শেষ হবে। এর আগে গেল ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর একই প্রক্রিয়ায় আরও একটি কর্মশালা শেষ করে সংস্থাটি।