স্থানীয় ও রোহিঙ্গা জনজীবনের সেবা সুবিধা ও সচেতনতায় ইএমসিআরপি

bdworldbdworld
  প্রকাশিত হয়েছেঃ  ০৬:২৩ PM, ২০ ডিসেম্বর ২০২২

বিডি প্রতিবেদক :
উখিয়া-টেকনাফের স্থানীয় অধিবাসী ও মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জনজীবনের বিভিন্ন সেবা সুবিধা ও সচেতনায় ইএমসিআরপি শীর্ষক সাংবাদিক অভিহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় কক্সবাজার শহরে অভিহিতকরণ সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
বিসিসিপির উপ পরিচালক আবু হাসিব মোস্তফা জামালের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী প্রতিপাদা দেওয়ান। বিশেষ অতিথি ছিলেন, এলজিইডির বহুমুখী দুর্যোগ আশ্রয়ণ প্রকল্পের যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ হাসিম রেজা, বিশ্বব্যাংকের ফিল্ড রেসিডেন্স ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল কবির, এলজিইডির ইএমসিআরপি প্রকল্পের যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ মেহবুব আলম বর্ণ প্রমুখ।
কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় মিয়ানমার হতে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আশ্রয়গ্রহণ করেছেন। যা এই দুই উপজেলার সীমিত সম্পদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে। এই মানবিক সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকার বিশ্বব্যাংকের অনুদান সহায়তায় ‘জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় মাল্টি-সেক্টর প্রকল্প (ইএমসিআরপি)’ হতে বিভিন্ন সেবা সুবিধা সহায়ক অবকাঠামো নির্মাণ করছে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২টি উপজেলার স্থানীয় অধিবাসী ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ বিভিন্ন সামাজিক সেবা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা ইত্যাদি কার্যক্রম চলমান আছে।

বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের অধিনস্থ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

অন্যান্য সুবিধার মধ্যে রয়েছে- গভীর নলকূপ স্থাপন ও নিরাপদ পানি সরবরাহ, পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য প্ল্যান্ট নির্মাণ, সৌরবিদ্যুৎ, বিভিন্ন সেবাকেন্দ্র নির্মাণ, জেটি নির্মাণ, রাবার ড্যাম স্থাপন, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণ ইত্যাদি। এসব সেবাসমূহের যথাযথ ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ খুবই জরুরি।

জনজীবনের সেবা সুবিধা নিশ্চিত ও ফলপ্রসূ করতে অবকাঠামোগুলোর সুষ্ঠু ব্যবহার ও যত্নের বিষয়টিকেও এই প্রকল্পে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তাই জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিউনিকেশন প্রোগ্রামস্ (বিসিসিপি) এই প্রকল্পের কমিউনিকেশন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়মিত কমিউনিটি ভিত্তিক নানান কার্যক্রম পরিচালিত করছে। এবং বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে এসব সেবা সমুহ সম্পের্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

স্থানীয় জনগণ এবং বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সার্বিক জীবনমান রক্ষার্থে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রদান করছে। স্থানীয় জনগণ এবং মিয়ানমার হতে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর এসকল সেবা সুবিধা ব্যবহারে যত্নশীল হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পবাসী বা স্থানীয় জনগণ তাদের নিজ নিজ এলাকার সেবা সুবিধাগুলো যত্নের সাথে ব্যবহার করলে সেগুলোর স্থায়ীত্ব বৃদ্ধি পাবে। এরই প্রেক্ষাপটে আজকের অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য সচেতনতামূলক কার্যক্রমগুলো পরিচালিত হচ্ছে।

ইএমসিআরপি প্রকল্প কর্তৃক গৃহীত সেবা সুবিধা সহায়ক নির্মিত অবকাঠামোগুলো হলো- বিদ্যালয় কাম দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ৫০টি, বহুমুখী কমিউনিটি ও সার্ভিস সেন্টার নির্মাণ ৩৪টি, রাস্তার উন্নয়ন ২৩৭.৩৮ কিমি, মাঠ পর্যায়ের অফিসের সংস্কার সহ সম্প্রসারণ ১টি, রাস্তা মজবুত ও প্রশস্তকরণ ৪২.১৫ কিমি, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, ফুটপাথ, ড্রেনেজ সুবিধা নির্মাণ এবং পার্শ্ব- ঢাল সুরক্ষা ২.৫ কিমি, আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ ৩৭১ মি, রাস্তার পাশের ড্রেন নির্মাণ ২০০০ মি, হাট বাজারের উন্নযন ৬টি, ত্রাণ প্রশাসন ও বিতরণ কেন্দ্র নির্মাণ ১টি, সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন ৪০০০টি, বজ্র নিরোধক সুরক্ষা সিস্টেম সরবরাহ এবং স্থাপন ৯৭৫টি, বিভিন্ন রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণ ২০ কিমি, রাবার ড্যাম নির্মাণ এবং উন্নয়ন ২৬৫ মি, জেটি উন্নয়ন ১৫৫০ মি, সোলার পিডি ন্যানো গ্রিড সরবরাহ ও স্থাপন ১০০টি, উখিয়া ও টেকনাফে বিদ্যমান ফায়ার সার্ভিস অফিসের উন্নয়ন ২টি, কক্সবাজারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জন্য ভবন নির্মাণ ১টি, কক্সবাজারে এলজিইডি ভবনের উন্নয়ন ১টি, কক্সবাজারে এলজিইডির জন্য প্রশিক্ষণ সুবিধা নির্মাণ ১টি।
এছাড়াও ইএমসিআরপি প্রকল্পের অধীনে গভীর নলকূপ স্থাপন, পানির রিজার্ভায়ার নির্মাণ, ওয়াটার পয়েন্ট বা ট্যাপস্ট্যান্ড নির্মাণ, পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য প্ল্যান্ট নির্মাণ করছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
###

আপনার মতামত লিখুন :