
বিডি প্রতিবেদক :
কক্সবাজার–৩ (সদর–রামু–ঈদগাঁও) সংসদীয় আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন মোঃ ইলিয়াছ মিয়া। তিনি কক্সবাজার ইনিশিয়েটিভের প্রেসিডেন্ট, “কক্সবাজার মডেল পলিটিক্স”-এর উদ্যোক্তা, একজন এক্টিভিস্ট এবং সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (CEHRDF)-এর প্রধান নির্বাহী।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় কক্সবাজার শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন ও জনসমাবেশে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর নির্বাচনী যাত্রা শুরু করেন।
সংবাদ সম্মেলন ও প্রার্থিতা ঘোষণা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কক্সবাজার ইনিশিয়েটিভের ডেপুটি সেক্রেটারি রুহুল আমিন। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার ইনিশিয়েটিভের এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি আব্দুল মান্নান রানা।
প্রার্থিতা ঘোষণাকালে মোঃ ইলিয়াছ মিয়া বলেন, কক্সবাজারের রাজনীতিকে শোষণ, বৈষম্য ও ক্ষমতাকেন্দ্রিকতার বলয় থেকে মুক্ত করে মানুষের মর্যাদা, মানবিকতা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে গড়ে তুলতেই তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এ সময় তিনি “কক্সবাজার মডেল পলিটিক্স” নামে একটি নতুন, বিকল্প ও জনগণকেন্দ্রিক রাজনৈতিক ধারার ঘোষণা দেন।
তিনি জানান, তাঁর রাজনীতির মূল ভিত্তি হলো মানুষের পাঁচটি মৌলিক অধিকার—খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান ও মর্যাদাপূর্ণ কাজ নিশ্চিত করা। কোনো শিশু যেন দারিদ্র্য বা অবহেলার কারণে পড়ালেখা থেকে ঝরে না পড়ে, কোনো মানুষ যেন চিকিৎসার অভাবে কষ্ট না পায় এবং কোনো বয়োজ্যেষ্ঠ যেন অবহেলায় জীবন কাটাতে বাধ্য না হয়—এটাই তাঁর নির্বাচনী অঙ্গীকার।
মোঃ ইলিয়াছ মিয়া বলেন, প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে প্রান্তিক ও অধিকারবঞ্চিত মানুষের কণ্ঠস্বরকে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের কেন্দ্রে আনতে হবে। কৃষক, জেলে, শ্রমিক, নারী, বয়োজ্যেষ্ঠ, সংখ্যালঘু ও আশাহীন তরুণদের বাদ দিয়ে কোনো উন্নয়নই টেকসই হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, ঔপনিবেশিক ও শোষণমূলক রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করাই তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত প্রশাসন জনগণের কাছেই জবাবদিহি করবে—এই নীতিতে তিনি রাজনীতি করতে চান বলে জানান।
এ সময় তিনি পুঁজিবাদী আগ্রাসনের নামে পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধেও দৃঢ় অবস্থান নেন। কক্সবাজারের উপকূল, বন, নদী ও পর্যটনকে রক্ষা করে জলবায়ু ন্যায়ের ভিত্তিতে টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
স্থানীয়দের মতে, সামাজিক মর্যাদা, রাজনৈতিক অধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার, ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য হ্রাস, অর্থনৈতিক শোষণমুক্তি, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ রক্ষা, পরিবেশগত স্থায়িত্ব এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মতো মৌলিক ইস্যুতে জাতীয়
সংসদের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গণমানুষের প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্যতা রয়েছে ইলিয়াছ মিয়ার।
মোঃ ইলিয়াছ মিয়া পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার, অভিবাসন, শরণার্থী, উন্নয়ন, নেতৃত্ব, বেকারত্ব দূরীকরণ, বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ, টেকসই উন্নয়ন, বৈশ্বিক যুদ্ধ বন্ধের দাবি, শান্তি ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন বিষয়ে জাতিসংঘসহ দেশি-বিদেশি নানা ফোরাম, নেটওয়ার্ক, কনফারেন্স ও সেমিনারে সক্রিয় নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
প্রার্থিতা ঘোষণার বক্তব্যে মোঃ ইলিয়াছ মিয়া বলেন,
“এটি শুধু একটি নির্বাচন নয়—এটি মানুষের মর্যাদা ও অধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলন।
ভোট মানে কেবল প্রতিনিধি নির্বাচন নয়, ভোট মানে শোষণের বিরুদ্ধে সাহসী অবস্থান।”
সংবাদ সম্মেলন ও জনসমাবেশে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ, তরুণ সমাজের প্রতিনিধিসহ স্থানীয় নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন।