
স্টাফ রির্পোটার পেকুয়া:
পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ও রাজাখালী ইউনিয়নের সংযোগ নয়াকাটা ব্রীজের নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে রয়েছে দুই ইউনিয়নের আনুমানিক লক্ষাধিক মানুষ। ইতোমধ্যে প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলেও ব্রীজের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে মাত্র দশ শতাংশ। দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত সাত মাস আগেই ব্রীজের নির্মাণকাজ অসমাপ্ত রেখে ফেলে চলে যায়। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে যান চলাচলে ব্যাপক জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এনিয়ে দুর্ভোগের কারণে জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে নির্ধারিত সময়ে ব্রীজের কাজ সম্পূর্ণ করতে ব্যর্থ হলে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানেে টেন্ডার বাতিল করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজাখালী (মগনামা) ভোলা খালের শাখা নদী টইটং খালের উপর ৩১ ফিট দৈর্ঘ্য ও ২৪ ফিট প্রস্থ সেতু নির্মাণে ৭ কোটি ৯২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিলো। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কাজটি মেসার্স আবুল কালাম আজাদ কনস্ট্রাকশনের নামে দিনাজপুরের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিলো।
স্থানীয়রা জানায়, গত দুই বছর ধরে নাপিতখালী ভোলাখালের ওপর নির্মিত পুরাতন সেতু ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণের কার্যক্রম করার নামে স্থানীয় সরকার ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একধরনের পায়তারা করেছে। জোয়ার ভাটার এই খালে গত দুই বছর ধরে বাঁধ দিয়ে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে রাখে। এতে বর্ষা মৌসুমে টইটংয়ের পাহাড় থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হতে না পেওে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে নদীর পাশর্^বর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। জোয়ার ভাটার এই নদীতে নৌকা চলাচলে ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি খাল ভরাট সহ পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। জোয়ার ভাটার খালের ওপর (প্রস্তাবিত সেতুর পাশে) বিকল্প সড়ক হওয়ায় দীর্ঘ পথ ঘুরে সাগরে ট্রলার বের করছে মাঝিরা। যার ফলে বিভিন্ন শ্রেণির পেশার মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নির্মাণাধীন সেতুর
নির্মাণস্থলে ৪৪ টি পাইলিংয়ের স্থানে ১৬ টির আংশিক কাজ শেষ হয়েছে। বিকল্প সংযোগ সড়কটি ও প্রায়ই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অস্থায়ী ভাঙা সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। বড় কোন গাড়ি পারাপার হলেই সড়ক দেবে যাচ্ছে।
এই বিষয়ে জানতে বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফাঁশিয়াখালী কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা বদিউল আলম জিহাদি জানান, বারবাকিয়া রাজাখালী সংযোগ সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে অনেক আগে, এই কারণে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তাঁরা জানায় তাঁদের টেন্ডার বাতিল হয়েছে এবং তাদের কে জরিমানা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক নাগরিক সংগঠন “ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)র” পেকুয়া উপজেলার সমন্বয়ক দেলোয়ার হোসাইন বলেন, প্রাণ চঞ্চল জোয়ার ভাটার একটি নদীতে বাঁধ দিয়ে ব্রীজ নির্মাণে ধীরগতির কারণে নদীর নাব্যতা হারিয়ে যাচ্ছে, যা একটি নদীটিকে হত্যার সামিল। শুধু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নয়, এতে কর্তৃপক্ষও দ্বায় এড়াতে পারে না।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস আবুল কালাম আজাদ কনস্ট্রাকশনের (প্রতিনিধি) চঞ্চল সাহার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদে নির্মাণাধীন ব্রীজের দৃশ্যমান কোন কাজ করতে না পারায় আমাদের টেন্ডার বাতিল হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পেকুয়া উপ সহকারি প্রকৌশলী শাহজালাল সাংবাদিকদের জানান, ব্রীজের নির্মাণ কাজে অনিয়ম ও গাফেলতির কারণে মের্সাস আবুল কালাম আজাদ কনস্ট্রাকশনের টেন্ডার বাতিল হয়েছে এবং তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে। আমরা নতুন করে কার্যাদেশ পাটিয়েছি।