
সাকলাইন আলিফ :
সিন্ডিকেটের কবল থেকে লবণ শিল্পকে রক্ষা ও ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতসহ দেশীয় লবণ শিল্প রক্ষায় প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করেছে কক্সবাজার লবণ চাষী ও ব্যবসায়ী সংগ্রাম পরিষদ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ জানান কিছু মিল মালিক সিন্ডিকেটের কারসাজিতে মাঠ পর্যায়ে লবণের দাম কমে যাওয়ায় ইদ্বিগ্ন ও হতাশ লবণ চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে কক্সবাজার লবণ চাষী ও ব্যবসায়ী সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব মিজানুর রহমান চৌধুরী খোকন মিয়া বলেন, দেশের একমাত্র কক্সবাজার জেলাতেই লবণ উৎপাদন হয়ে থাকে। বর্তমানে দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ লবণই কক্সবাজারে উৎপাদিত হয়। কক্সবাজার জেলার রামু ছাড়া বাকী ৮ উপজেলা এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সমুদ্র উপকূলীয় নিম্নভূমিতে প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে লবণের চাষ হয়ে থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন,চলতি মৌসুমে দেশে লবণ উৎপাদনের অতীতে রেকর্ড ভাঙ্গতে চাইলেও লবণ মিল মালিকদের একটি সিন্ডিকেট দেশে লবণ উৎপাদন কমানোর জন্য চাষীদের উপর মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ শুরু করেছে। যাতে চাষীরা মৌসুমের শুরুতেই লবণ চাষের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং লবণ উৎপাদনে ঘাটতি তৈরি হয়। এরই অংশ হিসাবে লবণ মৌসুমের শুরুতেই লবণ মিল মালিকরা বস্তা প্রতি (প্রতিবস্তা ৮০ কেজি) ১৪শ টাকা থেকে দফায় দফায় কমাতে কমাতে এখন ৬৮০ টাকা থেকে ৭শ টাকায় এসে ঠেকেছে। আবার প্রতিবন্তা ৮০ কেজির পরিবর্তে ৯০ থেকে ৯৫ কেজি লবণ নেওয়া হয় চাষীদের কাছ থেকে। নিকট অতীতে মাঠ পর্যায়ে লবণের এমন দরপতন হয়নি। তবে মাঠ পর্যায়ে লবণের দাম কম হলেও বাজারে প্যাকেটজাত লবণের মূল্য কমেনি। বাজারে প্রতি কেজি ভোজ্য লবণ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়,বর্তমানে প্রতি কেজি লবণ উৎপাদনে পলিথিন, জ্বালানী তেল ও শ্রমসহ প্রায় ১৫ টাকা খরচ হলেও মাঠ পর্যায়ে লবণ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮ টাকারও কম দরে। এরফলে লবণ চাষী ও ব্যবসায়ীদের মাঝে চরম হতাশা তৈরি হয়েছে। অথচ এ স্বয়ংসম্পূর্ণ খাত থেকে সরকার প্রায় ৫শ কোটি টাকার বৈদেশিক মূদ্রা সাশ্রয় করে। আর লবণ মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে দেশীয় এই লবণ শিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে। এরই অংশ হিসাবে তারা লবণ চাষীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে।
তারা এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুছের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তাদের মতে অন্যথায় দেশীয় লবণ শিল্পটি আবারও পরনির্ভরশীল হয়ে পড়তে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার লবণ চাষি ও ব্যবসায়ী সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক মকছুদ মিয়া ও সদস্য সচিব মিজানুর রহমান চৌধুরী খোকন মিয়া।, সংবাদ সম্মেলনে বিবিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন জেলা বিএনপির সহ সভাপতি নুরুল বশর চৌধুরী, জামিল ইব্রাহিম চৌধুরী প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মোহাম্মদ শুয়াইবুল ইসলাম, নুরুল আজম, আনিসুর রহমান, মৌলভী সেলিম উদ্দিন ,মৌলভী আবদুল্লাহ, আখতার আহমদ ,ফরিদুল আলম, হাবিবুল্লাহ মিজান, হারুনুর রশিদ, মাস্টার আব্দুল মালেক ও লিয়াকত আলী মেম্বার।