শিরোনাম :
৫০ বস্তা সিমেন্টসহ ৫ জন পাচারকারীকে আটক করেছে কোস্টগার্ড গাঁজাসহ একজন রোহিঙ্গা নারী গ্রেফতার সেন্টমার্টিনে প্রায় ৭ কোটি টাকা মূল্যের ইয়াবাসহ ১৭ জন মাদক পাচারকারীকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড জুলাই গনহত্যার বিচার তরান্বিত করে সাম্য ও গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে যেতে হবে কক্সবাজারের জুলাই পদযাত্রা সফল করতে উখিয়ায় সংবাদ সম্মেলন কক্সবাজারে সেমিনার তৃনমুল পর্যায়ের মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে জুলাই যোদ্ধাদের উপর হামলার প্রতিবাদে শহর জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ বিএনপি থেকে আনুষ্ঠানিক প্রার্থিতা ঘোষণা করলেন ইঞ্জিনিয়ার সহিদুজ্জামান মালুমঘাটে সৌদিয়া বাস আর জিপভ্যান গাড়ীর মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত-,আহত-২ অপহরণকারী গ্রেফতার

আজ বিশ্ব শরণার্থী দিবস :অনিশ্চিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাশন

নিউজ রুম / ২৬ বার পড়ছে
আপলোড : শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ০১:২১ পূর্বাহ্ন

সাকলাইন আলিফ :

আজ ২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবস। বিশ্বের সর্ববৃহৎ শরণার্থী ক্যাম্প বাংলাদেশের সর্বদক্ষিনে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে। মিয়ানমারের সেনা নির্যাতন, গণহত্যা থেকে বাচতে ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ঠ থেকে ৭ লাখের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর পুর্ব থেকে আরো ৪ লাখের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে রয়েছে। বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ। নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার নিশ্চয়তা নিয়ে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে বিশ্ববাসীর সহযোগিতা চায় রোহিঙ্গারা। অপরদিকে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার নানা অজুহাত এবং রাখাইন ষ্টেট আরাকান আর্মির দখলে চলে যাওয়ায় রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাশন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ঠের পর মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে ৭ লাখের অধিক রোহিঙ্গা। এর আগে থেকে আসা মিলিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্প এবং ভাসানচরের আশ্রয়ন প্রকল্প মিলিয়ে বর্তমানে রয়েছে প্রায় ১২ লাখের অধিক রোহিঙ্গা। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ শরণার্থী ক্যাম্প বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে অবস্থিত। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা পৃথিবীর সর্ববৃহৎ শরণার্থী ক্যাম্প নিয়ে চ্যালেঞ্জের মূখে রয়েছে বাংলাদেশ। গত বছরের নভেম্বর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন ষ্টেটে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির সাথে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। বর্তমানে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চল সহ রাখাইনের অধিকাংশ এলাকা আরাকান আর্মির দখলে রয়েছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী গত এক বছরে নতুন করে রাখাইনের ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা চলমান সংঘাত ও যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এ ছাড়া গত এক বছরে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আরো দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
এ অবস্থায় জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের রাখাইনে এখনো রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি বলে দাবী করে আসছে।
রোহিঙ্গা নেতা মোঃ ওমর ফারুক, হাফেজ মোহাম্মদ গোলাম হোসেন বলেন, আমরা নিজ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শংকিত। কারন রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর আরাকান আর্মি অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে। প্রতিদিনই বাস্তুচ্যুত করছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। আগে রোহিঙ্গাদের বাস্তুচ্যুত করেছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। বর্তমানে আরাকান আর্মি গনহত্যা চালাচ্ছে নানা নির্যাতন করে যাচ্ছে।
ফলে এ অবস্থায় রাখাইনে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন কঠিন হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মাওলানা রফিকুল ইসলাম, আব্দুল খালেক, রহিম উল্লাহ বলেন,রোহিঙ্গা হিসেবে আমাদের জাতিগত স্বীকৃতি, নাগরিকত্ব প্রদান, নিজ ভিটে-মাঠি ফেরৎ দেয়ার পাশাপাশি স্বাধীনভাবে চলাচলের সুযোগ দিতে হবে। আর এই দাবি নিয়ে আমরা বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইট এর সভাপতি মাস্টার মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন,নাগরিকত্ব প্রদান, নিজ ভিটে-মাঠি ফেরৎ দেয়ার পাশাপাশি স্বাধীনভাবে চলাচলের সুযোগ দিলে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে সকলে প্রস্তুত রয়েছে। আরাকানে সেফ জোন করতে হবে, তা না হলে আমাদের আবার বাংলাদেশে ফিরে আসতে হবে। আমরা এদেশে আর থাকতে চাই না। এদেশে ফিরে আসতে চাই না। স্থায়ীভাবে আমাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে থাকতে চাই। সে ব্যবস্থা যেন আমাদের করে দয় বিশ্ব সম্প্রদায়।
রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতারা জানিয়েছেন জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে রাখাইনে সেফ জোন করা না হলে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসন কোন মতেই সম্ভব নয়।
আর শরনার্থী কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন আরাকান আর্মির হত্যা নির্যাতনের মুখে রাখাইনে রোহিঙ্গারা সত্যিকারের আতংকে রয়েছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কর্মকর্তারা জানান বর্তমানে রাখাইনের পরিস্থিতি রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ নয়। শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাশন কমিশনার জানিয়েছেন মিয়ানমার গত প্রায় ৮ বছরে নানা অজুহাতে একজন রোহিঙ্গাকেও নিজ দেশে ফেরত নেয়নি। তবে তিনি আশা করেন রাখাইনের যুদ্ধ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাশন শুরু করা সম্ভব হবে।
প্রতিবছর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গড়ে ৩০ হাজার শিশু জন্ম নিচ্ছে। মানবিকতার খাতিরে ১২ লাখের অধিক রোহিঙ্গা দ্বীর্ঘদিন অবস্থান করায় কক্সবাজারের আত্মসামাজিক সহ শান্তিশৃঙ্খ্যলা বিঘ্নিত হচ্ছে।
রোহিঙ্গারা নিজ দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে নিরাপদে আবার যেন তাদের দেশে ফিরে গিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে সে প্রত্যাশা আজকের দিনে সকলের।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর