ফরিদুল আলম দেওয়ান :
বলছি সেই আশির দশকের কথা। যখন কক্সবাজার জেলা শহর থেকে নিয়মিত কোন সংবাদপত্র প্রকাশিত হতো না। ৮০’র দশকের শেষের দিকে জেলা শহর থেকে দু’টি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হওয়া শুরু হলো মাত্র। পত্রিকা দুটি হচ্ছে, সাপ্তাহিক স্বদেশ বাণী ও সাপ্তাহিক কক্সবাজার বার্তা। লেটারপ্রেসের লোহার অক্ষর বিন্যাসের ছাপাখানার সনাতনী পদ্ধতির তখনকার যুগে জেলা পর্যায়ে দৈনিক পত্রিকা ছাপা তো দূরের কথা সাপ্তাহিক পত্রিকা ছেপে বের করা ছিল অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। দেশ স্বাধীনের পরে কক্সবাজার জেলা সদর পর্যায়ের হাতে গোনা গুটিকয়েক সাংবাদিক ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় পত্রিকা ও চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত আঞ্চলিক পত্রিকায় সাংবাদিকতা শুরু করেন। আমার দেখা ও জানামতে কক্সবাজারে যাদেরকে আমি ছাত্র জীবনের প্রথম দিকে সাংবাদিক হিসেবে দেখেছি এবং যারা বর্তমানে কক্সবাজারের সাংবাদিকতার ইতিহাসে দিকপাল হিসেবে বিবেচিত তারা হলেন, তখনকার সাপ্তাহিক স্বদেশ বাণীর সম্পাদক, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সর্বজন শ্রদ্ধেয় মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ বদিউল আলম, মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম, প্রিয়তোষ পাল পিন্টু, হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট তোফায়েল আহমদ, মাহবুবুর রহমান, মোহাম্মদ আমীন, কামাল হোসেন আজাদ, মমতাজউদ্দীন বাহারি, মুহাম্মদ আবু তাহের চৌধুরী, আতাহার ইকবাল, ফজলুল কাদের,,শমসের বেলাল, মোহাম্মদ আলী জিন্নাত, এডভোকেট আয়াছুর রহমান, ইবনে আমিন,নুরুল ইসলাম হেলালী, মরহুম নজরুল ইসলাম বকসী, শামসুল হক শারেক, জাকের উল্লাহ চকোরী, এইচ এম এরশাদ সহ আরো বেশ কয়েকজন উল্লেখযোগ্য।
১৯৮৮ সালে তৎকালীন সাপ্তাহিক স্বদেশ বাণী পত্রিকার শ্রদ্ধাভাজন সম্পাদক মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম সাহেবের সাথে আমার প্রথম পরিচয়। কক্সবাজারের সাংবাদিকতা জগতের এই মহান দিকপালের পবিত্র হাত ধরেই আমার সাংবাদিকতার হাতে করি। তিনি আমাকে সাংবাদিকতার প্রথম পাঠ দেন এবং সততার পথে পথ চলা শুরু করতে দিক নির্দেশনা দেন। গুরু আজ আপনি দুনিয়াতে নেই। কিন্তু জানেন, বুকে হাত দিয়ে বলছি আজ পর্যন্ত আপনার সম্মান এবং কথা রেখেছি। সেই স্বদেশ বাণী থেকে আজ দৈনিক কক্সবাজার পর্যন্ত আছি আপনার পদাঙ্ক অনুসরণ করে। ১৯৮৯ সালে তাহার দেওয়া পরিচয়পত্রই আজ আমার কাছে কালের সাক্ষী হয়ে রইল। আজ আপনার মৃত্যুবার্ষিকীতে মহান রবের কাছে দুটি হাত তুলে আপনার পরকালীন শান্তি কামনা ছাড়া আমাদের আর কোন গত্যান্তর নেই। আল্লাহ আপনাকে বেহেস্ত নসিব করুক।
লেখক :
মহেশখালী প্রতিনিধি
দৈনিক আমাদের সময়,দৈনিক আজাদী