বিডি প্রতিবেদক :
সোমবার রাত ৮ টা। সমুদ্র শহর কক্সবাজারের লাবনী পয়েন্টের হোটেল কল্লোলের নীচের কাসুন্দি রেস্তোরায় ডুকলেন নারী পর্যটক। রাতের খাবার হিসেবে অর্ডার করলেন খাসির মাংস। অল্প কিছুক্ষন পরেই টেবিলে মাংস চলে আসলো। গল্পের ছলে সেই মাংস খেলেনও ওই নারী পর্যটক। কিন্তু বিলে গরুর মাংস লেখা দেখেই তার চোখ ছানাবড়া। করে দিলেন বমি। কারন গরুর মাংস খাওয়া তাঁর বিশ্বাসে নিষিদ্ধ। বিষয়টির তাৎক্ষনিক প্রতিবাদও করলেন তিনি। তবে প্রতিবাদে কোন সুরাহা না হওয়ায় রবিবার দুপুরে ট্যুরিষ্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়ন কার্যালয়ে সাধারন ডায়েরী ( জিডি) করেছেন ওই নারী ।
সেসময় রেস্তোরায় থাকা প্রত্যেক্ষদর্শীরা বলেন , শনিবার রাতে এক নারী খাসির মাংস চাইলে তাকে না জানিয়ে গরুর মাংস খাওয়ান কাসুন্দি রেস্তোরা কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি জানতে পারে ওই নারী বমি করে দেন এবং গরুর মাংস খাওয়ানোর কারণ জানতে চান। কিন্তু সেসময় রেস্তোরায় দায়িত্বরতরা তাদের দোষ স্বীকার না করে উল্টো ওই নারী কর্মকর্তার সাথে রুঢ় ব্যবহার করেন। সেসময় ওই নারী পর্যটক বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করবে বললে রেস্তোরা কর্তৃপক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। এমনকি হোটেল মালিকের সাথে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলের ভালো সম্পর্ক দাবী করে ওই নারীকে শাসায় হোটেলের লোকজন। পরে ওই নারী সেখান থেকে চলে যায়।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই নারী কর্মকর্তা সিলেটে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে কর্মরত রয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি জানান, আমি ছুটি কাটাতে কক্সবাজার এসেছি। ওই রেস্তোঁরায় বিষয়ে ট্যুরিষ্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের কাছে একটি সাধারন ডায়েরী (জিড়ি) করেছি।
তবে বাংলাদেশ রেস্তোরা মালিক সমিতির মহাসচিব ও কাসুন্দি রেস্তোরার মালিক ইমরান হাসান বলেন, এটি একটি অনাকঙ্খিত ভুল। ওই ভুলের কারণে যে ছেলেটা খাবার দিয়েছে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ম্যানেজার ও রেস্তোরায় পরিচালনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ওই পর্যটককে উর্ধত্বণ কর্তৃপক্ষের কথা বলে হুমকি দেয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি একটি অপপ্রচার। আমার সাথে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে ঠিকই ছিল তখন কিন্তু ভুলটা আমাদের । কাজেই এখনো হুমকি দেয়ার প্রশ্ন আসেনা। উল্টো আমার ম্যানেজার , টেবিল বয় ওই পর্যটকের পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েছে বিষয়টির জন্য।
ক্ষমা চাইলে কেন অভিযোগ করবে আবার এর জবাবে ইমরান বলেন, আমাকে কেউ যদি শুয়োরের মাংস খাওয়ায় তবে এতক্ষনে আমিই তুলকালাম করে ফেলতাম। তাই উনি অভিযোগ কেন মামলাও করতে পারেন। এরজন্য যদি আমি কোথায়ও যেতে হয় আমি যাব। আমার ভুল স্বীকার করে শাস্তি মেনে নেব।
ট্যুরিষ্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের পুলিশ মো, জিল্লুর রহমান বলেন, ওই নারী পর্যটক আমাদের কাছে একটি সাধারন ডায়েরী করেছে। এবিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।