বিডি প্রতিবেদক :
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মৌলভীবাজারের রশিদ আহমদের ছেলে শফিক আহমদ (৩২) ও চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা ইউপি’র কাহারিয়া গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে মোহাম্মদ রাসেল ( ৩২)। প্রবাসে থাকতে এদের দুই জনের পরিচয় হয়। দুবাইয়ের শারজাহ শহরে দিনমজুর কাজ ও একই ভবনে থাকার সুবিধা হয় বন্ধুত্ব। সেই বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়েই শফিককে কক্সবাজার শহরের কলাতলী সড়কের হোটেল মোটেল জোনের টর্চার সেল হিসেবে খ্যাত ওয়ার্ল্ড বীচ রিসোর্টে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করেছে প্রবাসী বন্ধু রাসেল ও তার সঙ্গীরা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ্যাপারে ভোক্তভোগি শফিক মঙ্গলবার ( ১১ অক্টোবর) রাত ১০ টার দিকে কক্সবাজার সদর থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন।
এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, মঙ্গলবার সকালে শফিক টমটম গ্যারেজের জন্য মালামাল কিনতে কক্সবাজার শহরে আসে। হঠাৎ পথে তাঁর সাথে প্রবাসীবন্ধুর রাসেলের দেখা হয়। তখন রাসেল তার বউয়ের সাথে পরিচয় করে দেওয়ার কথা বলে শফিককে ওয়াল্ড বীচ রিসোর্টের ৮২৩ নম্বর কক্ষে নিয়ে তালাবদ্ধ করে দেয়। পরে সেখানে আগে থেকে অবস্থান করা রাসেলের অস্ত্রধারী সহযোগীরা শফিককে এলোপাতাড়ি মারধর করে।
এ ব্যাপারে ভিকটিম শফিক বলেন, রাসেল ও তার সহযোগীরা একপর্যায়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আমার কাছ থেকে ১ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা জোরপূর্বক আদায় করে। পরে এই ঘটনা কাউকে না জানাতে আমার উলঙ্গ ছবি ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিলে আমার নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছি তাঁরা। তবুও আমি ন্যায় বচারের জন্য পুলিশের কাছে এজাহার জমা দিয়েছি।
এদিকে ওয়াল্ড বীচ রিসোর্ট ও আশেপাশে ভবন ও রেস্তোররায় সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষন করে দেখা যায়, মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে জসিম নামের এক যুবক হোটেল পউষীর দিকে হাটছে। তার পেছনে শফিক ও রাসেল কথা বলে বলে এগোচ্ছে। এরপর তারা পউষীর পাশের সিড়ি দিয়ে রিসোর্টে উঠে। পরে তাদের আবার দেখা মিলে ৮২৩ নম্বর কক্ষের সামনে। সেখানে দেখা গেছে আরো ৩ জনকে। ওইসময় ওই তিন যুবক সহ রাসেল ও জসিম মিলে শফিককে ধাক্কা দিয়ে ৮২৩ নম্বর কক্ষে ডুকায় ।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রিসোর্টটির কেয়ারটেকার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী চোচুলা মুরা এলাকার রহমত ছালামের ছেলে খোরশেদ ফ্ল্যাটটি মালিক আজমগীরের থেকে ভাড়া নিয়েছে। ঘটনার পর থেকে লাপাত্তা কেয়ারটেকার খোরশেদ।
এবিষয়ে ফ্ল্যাট মালিক আজমগীর বলেন, আমি ফ্লাটটি বাৎসারিক ভাড়া দিয়েছি। ঘটনার পর থেকে খোরশেদের মুঠোফোন বন্ধ পাচ্ছি।
ওয়ার্ল্ড বীচ রিসোর্টের ল্যান্ড ওনার্স ম্যানেজমেন্টের নির্বাহী পরিচালক শাহীনুল ইসলাম বলেন, এখানে কিছু ফ্ল্যাট বিভিন্ন অপরাধী নিয়ন্ত্রণ করছে। যার কারণে প্রায়ই হরহামেশা এমন ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সোপর্দ করা হবে।
এবিষয়ে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) রাজ্জাক বলেন, আমরা যাবতীয় খোঁজখবর নিচ্ছি। জড়িতদের গ্রেফতারে তৎপরতা অব্যাহত আছে। এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর ওই রিসোর্টে দুই পর্যটককে অপহরন করে বন্দী করা রাখা হয়েছিল। পরে আমরা গিয়ে উদ্ধার করি।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি মোহাম্মদ রফিক বুধবার বিকেলে বলেন, ঘটনাটি আরেকটু তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
4:32 AM