কক্সবাজার শহরের র্জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) কার্যালয়ের সামনের সড়কে শুয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন এক রোহিঙ্গা যুবক। এ সময় সেখানে ছিল তার স্ত্রী, সন্তান ও মা।
আবুল ওসমান নামে ওই যুবক ক্যাম্প সিআইসি, পুলিশ ও পারিবারিক বঞ্চনার বিচার চাইতে ইউএনএইসসিআর এর কক্সবাজার সাব অফিসে আসেন। সেখানে কর্মকর্তাদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হলে তিনি সড়কে শুয়ে পড়েন।
ইউএনএইচসিআর কক্সবাজার কার্যালয়ের লিয়াজু অফিসার ইখতিয়ার উদ্দিন বায়েজীদ এসব নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বুধবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আবুল ওসমান উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পের ই/ব্লকের ৪০ নাম্বার শেডে থাকেন।
তিনি অভিযোগ করেন, পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে ক্যাম্প সিআইসি ও পুলিশ তাকে হয়রানি করছে; পাশাপাশি রেশন দেয়াও বন্ধ আছে। নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে যে সব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা তার কিছুই দেয়া হচ্ছে না তাকে।
তিনি বলেন, ‘নির্যাতনের বিচার চাইতে ইউএনএইচসিআরের সাব অফিসে আসি। কর্মকর্তারা আশ্বস্ত করে। কিন্তু কোনো সমাধান দেয় না। এভাবে তাদের অবহেলার কারণে প্রতিদিন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।’
ওসমান বলেন, ‘৩২ বছর ধরে তারা আমাদের (ইউএনএইচসিআর) নিয়ে ব্যবসা করছে। নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে নিরাপত্তা দেয়ার কথা থাকলেও তার কোনো কিছুই করছে না। আমি বার বার অভিযোগ করার পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমি এখন সপরিবারের আত্মহত্যা করব।’
পারিবারিক কী বিরোধ- জানতে চাইলে তার মা ফাতেমা বেগম বলেন, ‘ওসমানদের বাবা আরেকটি বিয়ে করে। ওই নারী আমার সন্তানদের হত্যার উদ্দেশ্যে বারবার হামলা করে লোকজন নিয়ে। এ নিয়ে বার বার অভিযোগ দেয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
‘এখন পুরো পরিবার শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছি। উল্টো তারা আমার ছেলেকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে হেনস্তা করছে। ইউএনএইচসিআর অফিসেও কয়েক দফা বলার পরও সমাধান হচ্ছে না বা করছে না তারা। এখন কোথায় যাব।’
কার্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহসিন বলেন, ‘সিনিয়র স্যারদের সঙ্গে কথা বলে তারা বের হয়। এক পর্যায়ে ওই যুবক সড়কে শুয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ পর আমরা তাকে বুঝিয়ে একটি ইজিবাইকে তুলে দিয়েছি।’
কার্যালয়ের লিয়াজু অফিসার ইখতিয়ার বলেন, ‘নিবন্ধিত রোহিঙ্গা পরিবার বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। তাদের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে সে অফিসের সামনের সড়কে বেরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে রোহিঙ্গা শিবিরে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’