বিডি প্রতিবেদক :
জার্মানির মাল্টিজার ইন্টারন্যাশনাল এর অর্থায়নে কোস্ট ফাউন্ডেশন কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ২৪ পরিবার এবং ১৯ দোকানদারকে নগদ অর্থ এবং ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) মধ্যরাতে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের অমজাখালী আল-আমিন মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এতে মোট ২৪টি ঘর বাড়ি ও ১৯টি দোকান পুড়ে যায়।
কোস্ট ফাউন্ডেশন এবং মাল্টিজার ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে গত ২৩ নভেম্বর, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এবং দোকানদারদের উপর একটি জরুরী জরিপ পরিচালনা করে।
পাশাপাশি কোস্ট ঘটনাকালীন সময়ে অগ্নিনির্বাপণের জন্য জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) এবং বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে তাৎক্ষনিক যোগাযোগ করে।
এ জরুরী সহায়তা প্রদান কর্মসুচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুল হক মার্শাল।
বিতরণকালে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) জর্জ মিত্র চাকমা, কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান,জেলা পরিষদ সদস্য তানিয়া আফরিন,জেলা পরিষদ সদস্য ফরিদুল আলম,
মাাল্টিজার ইন্টারন্যাশনাল এর কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজন ঘিমির এবং প্রোগ্রাম ও পার্টনার কো-অর্ডিনেটর মতিন সরদার।
কোস্ট ফাউন্ডেশন মাল্টিজার ইন্টারন্যাশনালের অর্থায়নে বাংলাদেশে “জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিক এবং কক্সবাজার জেলার স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য জরুরি সাড়াদান প্রস্তুতি” নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
উক্ত প্রকল্পের অধীনে কুতুবদিয়ায় অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে মোট ৭,৬৫,০০০ টাকার নগদ অর্থ এবং ত্রান সামগ্রী বিতরন করা হয়।
অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে জরুরী ভিত্তিতে পরিচালিত জরিপ থেকে দেখা যায় যে ক্ষতিগ্রস্থ ১০০% পরিবারের এই সংকট পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে গুরুত্বপূর্ণ এবং জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রয়োজন।
জরিপে দেখা যায় ৮৮ % অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের নিজস্ব প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য নগদ সহায়তা প্রয়োজন। বাড়ি পুনর্নির্মাণের জন্য ৬৩% পরিবারের, টয়লেট নির্মাণের জন্য ৪২% পরিবারের, বাড়ি মেরামতের জন্য ২৫% পরিবারের এবং ঘর মেরামতের উপকরণের জন্য ১৩% পরিবারের নগদ অর্থসহায়তা প্রয়োজন।
রাজন ঘিমিরে বলেন, বিপর্যয়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সহায়তা করার জন্য কোস্ট এবং মাল্টিজার ইন্টারন্যাশনাল নগদ সহায়তা এবং ত্রান সামগ্রী নিয়ে এগিয়ে এসেছে। প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য খাদ্য, নন ফুড উপকরণ এবং অন্যান্য উপকরণ কেনা, তাদের ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ বা জীবিকার বিকল্পের জন্য তহবিল ব্যবহার করা যেতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন, কারণ তারা অগ্নিকান্ডে তাদের সবকিছু হারিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ২৪ পরিবারের প্রত্যেকে ২০০০০ টাকা, ১৯ জন দোকানদার প্রত্যেকে ১৫০০০ টাকা করে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়। এছাড়া ২৪ পরিবারের মধ্যে একসেট করে স্যানিটারি প্যাড, লুঙ্গি, পুরুষদের জন্য প্লাস্টিকের স্লিপার, মহিলাদের জন্য প্লাস্টিকের স্লিপার, সাধারণ কাপড়, টি-শার্ট, কম্বল এবং মশারি বিতরন করা হয়।
কোস্ট ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম নেতৃত্বে এই বিতরণ কর্মসুচি পরিচালনা করা হয়। এছাড়া এই জরুরি বিতরণ কর্মসুচিতে কোস্টের মোঃ শাহিনুর ইসলাম, মোঃ ইউনুস, জিয়াউল করিম চৌধুরী, মোঃ দিদারুল ইসলাম এবং অন্যান্য কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।