আহমদ নেছার :
টেকনাফে অপহৃত চার কৃষকের মধ্যে তিনজন সাড়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণে ছাড়া পেয়েছেন। সন্ত্রাসীরা অপহৃত অপরজন আব্দুস সালামের পরিবারের কাছ থেকে দাবিকৃত মুক্তিপণ না পাওয়ায় তাকে ফেরত দেয়নি।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) রাতে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী।
গত ৭ জানুয়ারি ভোররাতে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকায় ক্ষেত পাহারারত অবস্থায় চারজন কৃষককে অপহরণ করে পাহাড়ের ভেতরে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এরপর মুক্তিপণ হিসেবে জনপ্রতি পাঁচ লাখ টাকা করে মোট ২০ লাখ মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল। অবশেষে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে হ্নীলা পাহাড়ি এলাকা থেকে মুক্তিপণ দিয়ে অপহৃত ৩ জন ছাড়া পান। তবে এখনো আব্দুস সালাম নামে একজন তাদের কাছে জিম্মি রয়েছেন।
ফিরে আসা কৃষকরা হলেন- টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকার গুরা মিয়ার ছেলে আব্দুর রহমান, রাজা মিয়ার ছেলে মুহিব উল্লাহ ও ফজলুল করিমের ছেলে আব্দুল হাকিম।
তবে অপহৃত একই এলাকার আবুল হোসনের ছেলে আব্দুস সালামকে সন্ত্রাসীরা ফেরত দেয়নি। সন্ত্রাসীরা তার পরিবারের কাছ থেকে এখনো মুক্তিপণ দাবি করছেন। কারণ হিসেবে ফিরে আসারা জানান, আব্দুস সালামের পরিবারের লোকজন পুলিশ ও গণমাধ্যমে বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি ভিডিও বক্তব্য দিয়েছেন। তাই সালামকে ফেরত পেতে হলে মোটা অংকের মুক্তিপণ দিতে হবে।
ফেরত আসা তিন কৃষকের বরাত দিয়ে চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, আব্দুস সালামের পরিবার ধনী হওয়ায় তার কাছ থেকে আরও বেশি টাকা দাবির কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অপহরণ নিয়ে স্বজনরা বিস্তারিত তথ্য দিতে রাজি হচ্ছেন না। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের সাথে স্থানীয় বাংলাদেশী অপরাধীরাও জড়িত। এ কারণে অপহৃত কার কত টাকার সম্পদ রয়েছে সব জানা রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের।
চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, মুক্তিপণ দিয়েও যারা ফিরে এসেছেন তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধর ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে ভয়ে কেউ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তথ্য দিচ্ছেন না।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো: মাহফুজুল ইসলাম বলেন, টেকনাফে অপহৃত তিনজন ফিরে আসার খবর স্থানীয়দের কাছ থেকে আমি শুনেছি। তবে মুক্তিপণের বিষয়টি নিয়ে শুরু থেকে অপহৃতদের পরিবার পুলিশকে অবহিত করেননি। এমনকি কোনো অভিযোগও তারা দেননি। তারপরও পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে এবং অপরজনকে উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, এর আগেও টেকনাফ বাহারছড়া যারা অপহৃত হয়েছিল তারা কোন তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করেননি। এবারও একইভাবে ফেরত আসা অপহৃতরা কোন তথ্য দিচ্ছেন না। যার কারণে পুলিশের পক্ষে এ্যাকশনে যারা কঠিন।