শিরোনাম :
পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে- টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি পেকুয়া থানার নতুন ওসি মোস্তাফা’র যোগদান নারী-পুরুষ সমতা বিষয়ে শিশুদের সচেতন করতে কক্সবাজারে আরডিআরএস বাংলাদেশের নতুন প্রকল্প মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা। -মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা কক্সবাজারে দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ চিকিৎসা সেবা : রোগি শূণ্য হাসপাতাল # চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় মামলা; গ্রেপ্তার ২ কক্সবাজারে প্রবল বর্ষণ অব‍্যাহত উখিয়ায় ককটেল মৌলভীর সাম্রাজ্যে বনবিভাগের থাবা, বনের জমি উদ্ধার বিভাজনের রাজনীতিতে পা দিলে রাস্ট্র পুনর্গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা যাবে না–সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ কক্সবাজারে সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর ফোন চুরি প্রান্তিক মৎস্যজীবী পরিবারের নারীদের নিয়ে “নারী সম্মেলন”

কিছু বিছিন্ন স্মৃতি,সামান্য কথা

নিউজ রুম / ১৮ বার পড়ছে
আপলোড : শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন

মুহাম্মদ আলী জিন্নাত :
এ মানুষটির প্রতি আমি নানাভাবে ঋণী। প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতিতে আমার হাতেখড়ি যে কয়েকজন রাজনীতিকের হাত ধরে তার মধ্যে এ মানুষটি অন্যতম একজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন, অপরাজেয় বাংলা, বটতলা, টিএসসি, কার্জন হল, শহীদুল্লাহ হল, হাকিম চত্বর, ঐতিহাসিক বলাকা ভবন, সূর্যসেন হল ক্যাফেটেরিয়াসহ ছাত্র রাজনীতির ‘আঁতুড় ঘর’ এর অনেক জায়গায় আমাকে হাত ধরে নিয়ে গেছেন একজন আদর্শিক রাজনৈতিক সহযোদ্ধা হিসেবে। তিনি ছিলেন জাসদ সমর্থিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং পরবর্তীতে ওই সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা। তাদের সময়ে এই ছাত্রলীগ ছিলো দেশের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন। ডাকসু, রাকসু,ইউকসু, বাকসু, চাকসুসহ দেশের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদগুলোর নেতৃত্ব দিয়েছে এ ছাত্রসংগঠন। ছাত্র রাজনীতির পাঠ চুকিয়ে তিনি জাতীয় নেতা আ স ম আবদুর রব এর হাত ধরে জাসদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। পরবর্তীতে ফৌজি শাসক হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন। এ দলের কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-২ আসন থেকে প্রতিদ্ধন্ধিতা ও করেন।তিনি কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৫ সালে এসএসসি পাশ করেন কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে। এরপর দেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং স্নাতক পর্যায়ের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এক সময় তিনি ঢাকায় কিছুদিন চাকরি পরে নিজে ব্যবসা শুরু করেন। তাঁর ব্যবসায়িক অফিস ছিল আরামবাগ নটরডেম কলেজের সাথে। সেখানে আমার যাতায়াত ছিল নিয়মিত। অফিসে গেলেই খাওয়াতেন। পরে অফিস থেকে ফিরে আসবার সময় আদর করে কিছু সম্মানী-দক্ষিণা ও হাতে দিতেন। দেশের ৮০ দশকের ছাত্র রাজনীতির সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা-সংগঠক মাহমুদুর রহমান মান্না, আখতারুজ্জামান, জিয়া উদ্দীন বাবলু, মুনির উদ্দীন আহমেদ, আবুল হাসিব খান, মুশতাক হোসেন, শিরীন আখতার, নাজমুল হক প্রধান প্রমুখের সাথে তাঁর ছিলো অনেক গভীর ও নৈকট্যের সম্পর্ক। তাঁর পিতা মওদুদ আহমদ ছিলেন প্রথম জীবনে প্রচন্ড মেধাবী ও আদর্শবান শিক্ষক, পরবর্তীতে জাঁদরেল একজন আইনজীবী। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কক্সবাজার জেলায় স্বাধীনতাযুদ্ধ সুচারুভাবে পরিচালনার জন্য সর্বদলীয় যে কমিটি গঠিত হয়েছিল তার কোষাধ্যক্ষ (ট্রেজারার) ছিলেন জনাব মওদুদ আহমদ। তৎকালীন কক্সবাজার মহকুমার সরকারি ট্রেজারি তিনিই পরিচালনা করতেন। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-মাহিনা প্রদান থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সকল কাজ তিনি সম্পাদন করতেন। সর্বদলীয় কমিটির প্রধান ছিলেন বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড.শিরীণ আখতারের পিতা আবছার কামাল চৌধুরী এবং সমন্বয়কারী ছিলেন জনাব এ কে এম মোজাম্মেল হক। সেটি আরেক বিশাল ইতিহাস। জনাব মওদুদ আহমদ এর প্রথম সন্তান হচ্ছেন জনাব মোহিব উল্লাহ। মাত্র ৬৫ বছর বয়সে পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে। আজ বৃহস্পতিবার দিনের প্রথম প্রহর পর রাত সাড়ে তিনটায় রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে অবস্হিত নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্হায় তিনি ইন্তেকাল করেন(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। দীর্ঘ সময় প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন পছন্দের মানুষটিকে। তিনি ও কয়েক বছর আগে প্রয়াত হয়েছেন। পরবর্তীতে আবারো নতুন করে সংসার পেতেছিলেন। প্রথমজনের সংসারে এক কন্যা সন্তান। বর্তমান সংসারে দুই পুত্র সন্তান তাঁর। কনিষ্ঠ সন্তানটির বয়স মাত্র দুই সপ্তাহ। আমি অনেক অনেক লিখতে পারবো। তবে আজকে আর নয়। অন্য সময় অন্য জায়গায় স্মৃতিচারণ করবো তাঁকে নিয়ে। আজ আমার অত্যন্ত প্রিয়জন আপনজন, অনেক অনেক বেশি কাছের স্বজন, পরমাত্মীয়, শ্রদ্ধেয় মোহিব উল্লাহ ভাইয়ের প্রথম জানাযা আছর নামাজের পর কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম সংলগ্ন জেলা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে। পরে দ্বিতীয় জানাযা হবে নিজ গ্রাম মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালীতে কাল শুক্রবার সকাল ১০ টায় । তাঁকে নিজগ্রামের পারিবারিক কবরস্হানে বাবা-মার কবরের পাশে দাফন করা হবে। আমি তাঁর অকাল প্রয়াণে গভীরভাবে শোকাহত, মর্মাহত, ব্যথিত। আমি তাঁর পবিত্র আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করছি। পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার কাছে বিনীতভাবে প্রার্থনা করছি আমার বড়ভাইকে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন পাশাপাশি পরিবার-পরিজন,বন্ধু-সুহূদ,শুভাকাংখি-গুনগ্রাহী সকলকে যেনো এই বিয়োগান্তক শোক সইবার শক্তি দান করেন। আমিন। ছুম্মা আমিন।

:কক্সবাজারের সিনিয়র সাংবাদিক মুহাম্মদ আলী জিন্নাত এর ফেইস বুক থেকে নেয়া :


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর