শিরোনাম :
পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে- টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি পেকুয়া থানার নতুন ওসি মোস্তাফা’র যোগদান নারী-পুরুষ সমতা বিষয়ে শিশুদের সচেতন করতে কক্সবাজারে আরডিআরএস বাংলাদেশের নতুন প্রকল্প মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা। -মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা কক্সবাজারে দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ চিকিৎসা সেবা : রোগি শূণ্য হাসপাতাল # চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় মামলা; গ্রেপ্তার ২ কক্সবাজারে প্রবল বর্ষণ অব‍্যাহত উখিয়ায় ককটেল মৌলভীর সাম্রাজ্যে বনবিভাগের থাবা, বনের জমি উদ্ধার বিভাজনের রাজনীতিতে পা দিলে রাস্ট্র পুনর্গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা যাবে না–সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ কক্সবাজারে সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর ফোন চুরি প্রান্তিক মৎস্যজীবী পরিবারের নারীদের নিয়ে “নারী সম্মেলন”

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের চেষ্টায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন

নিউজ রুম / ১৫ বার পড়ছে
আপলোড : শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:২৩ পূর্বাহ্ন

বিডি প্রতিবেদক :
রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায় এবং মিয়ানমারের উপর চাপ অব্যাহত রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইইউর মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর।

তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্রয়, টানা ৬ বছর অবস্থান নেয়ার জন্য বাংলাদেশ, বাংলাদেশী মানুষ এবং কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠির প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, তারা গত ছয় বছর ধরে রোহিঙ্গাদের জন্য অনেক উদার মনোভাব নিয়ে কাজ করেছে।

বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় কক্সবাজার শহরে ফিরে শরাণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসনের কমিশনের কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল। সন্ধ্যায় সাড়ে ৬ টায় বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন, প্রতিনিধি দলের প্রধান ইইউর মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোর।

তিনি বলেন, এটি বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির এবং এই সময় রোহিঙ্গারা যত বড় সমর্থন পেয়েছে তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ। যে ছয় বছর ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। তা অব্যাহত থাকবে।

গত চার বছর বিশ্ববাসি নতুন সংকটে রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, চার বছরে আমরা অনেক সংকট দেখেছি। আফগানিস্তান, আফ্রিকা সংকট, ইউক্রেন পরিস্থিতি তার অন্যতম। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সকল সংকট নিয়ে কাজ করছেন। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য মিয়ানমারের পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে জাতিসংঘে এবং মানবাধিকার কাউন্সিলের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

তবু মিয়ানমারে পরিস্থিতি পরিবর্তন আনা এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপদে এবং মর্যাদায় প্রত্যাবাসনের জন্য কাজ করছেন তারা।

এর আগে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাওয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের কাছেও দ্রæত সময়ের মধ্যে স্বদেশ মিয়ানমার ফেরত পাঠানোর আকুতি জানিয়েছেন।

একই দাবিতে প্রতিনিধি দলের প্রধান ইইউর মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোরের হাতে চিঠিও দিয়েছেন রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়েরের নেতৃত্বে রোহিঙ্গারা।

প্রতিনিধি দলের সাথে আলাপকারি রোহিঙ্গাদের সাথে আলাপকালে এসব তথ্য মিলেছে।

ইইউর মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোরের নেতৃত্বে ৫ সদস্যদের প্রতিনিধি দলটি বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে কক্সবাজার এসে পৌঁছেন। এরপর প্রতিনিধি দলটি উখিয়ার ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে পৌঁছেন বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে। প্রতিনিধি দলটি পরিদর্শনকালে ৪ নম্বর ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন কেন্দ্র, শিশু শিক্ষা ও খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এসময় তাদের কাছে রোহিঙ্গারা নানা দাবি দাওয়া তুলে ধরেন। এরপর প্রতিনিধি দলটি ডবিøউএফপি পরিচালিত খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে একদল রোহিঙ্গার সঙ্গে আলাপ করেন।

এরপর ১১ নম্বর ক্যাম্পে ঘন্টাব্যাপি ইইউ প্রতিনিধি দল একান্ত বৈঠক করেন রোহিঙ্গাদের সঙ্গে। এর আগে প্রতিনিধি দলের প্রধান ইমন গিলমোরের সঙ্গে দেখা করে চিঠি দেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়ের।

মোহাম্মদ জোবায়ের জানিয়েছেন, চিঠিটিতে গত ৬ বছরের শরণার্থী জীবন অত্যন্ত কষ্ঠকর এবং অসহনীয় উল্লেখ করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। এখানে বসবাসকারি রোহিঙ্গা শিশুদের ভবিষ্যৎ জীবন অনেকটা অন্ধকার। এখন রোহিঙ্গা শিশুরা উন্নত জীবন বা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিশ্বখ্যাত খেলোয়াড় হওয়ার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ যা করেছে তার জন্য কৃতজ্ঞ প্রকাশ করে দ্রæত প্রত্যাবাসনের কথা বলা হয়েছে।

জোবায়ের জানান, প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আশ্বাস করেছেন রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জাতিসংঘের সাথে কাজ করছেন। বিষয় তারা দেখবেন।

প্রতিনিধি দলের বৈঠকে অংশ নেয়া আয়েশা নামের এক নারী জানান, প্রতিনিধি দলের বৈঠকে তাদের কাছে সার্বিক বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। তিনি প্রতিনিধিদের বলেছেন, আগে খাদ্য সহায়তার বাবদ ১২৪০ টাকা পাওয়া যেত। এখন ৮৪০ টাকা করে পাচ্ছি। যা খাদ্য সহায়তার জন্য পর্যাপ্ত না। প্রতিনিধি দলটি এব্যাপারে চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছে।

রোহিঙ্গা গফুর মিয়া জানান, খাদ্য সহায়তা কমিয়ে দেয়ার বিষয়টি প্রতিনিধি দলটিতে জানানো হয়েছে। তারা রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন।

রোকেয়া খাতুন নামের এক রোহিঙ্গা নারী জানান, প্রতিনিধিদলটিতে এখানে ক্যাম্প বন্ধি জীবন কষ্ঠকর এবং মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়েছি। প্রতিনিধিরা চেষ্টা করতে বলে আশ্বাস্ত করেছেন।

মায়মুনা নামের অপর রোহিঙ্গা নারীও বলেছেন প্রতিনিধি দলের কাছে প্রত্যাবাসনের দাবি জানিয়েছেন।

ইইউর মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোরের নেতৃত্বে এই প্রতিনিধি দলটিতে রয়েছেন, ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের (ইইএএস) রাজনৈতিক উপদেষ্টা ভিক্টর ভেলেক, ঢাকায় ইইউর দূত চার্লস হোয়াইটলি ও ফার্স্ট সেক্রেটারি (রাজনৈতিক) সেবাস্টিয়ান রিগার-ব্রাউন, ইইউ বাংলাদেশের হেড আনা অরল্যান্ডিনি।

এর আগে গত ১২ জুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা গনতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার নেতৃত্বে আসা প্রতিনিধি দলের কাছেও প্রত্যাবাসনের জোর দাবি জানিয়ে ছিল রোহিঙ্গারা।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর