নুরুল আলম:
কক্সবাজার শহরে নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলে ‘ডাকাতির প্রস্তুতিকালে’ অস্ত্র ও গুলিসহ সাত জলদস্যূকে আটক করেছে র্যাব।
রোববার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান,
র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।আটকরা হল, মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের সোনাদিয়া এলাকার মৃত বাহাদুর মিয়ার ছেলে মো. মজ্ঞুর আলম ওরফে মজ্ঞু (৩৮), চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের ছনুয়া এলাকার আবু তাহেরের ছেলে মো. বাহার উদ্দিন বাহার ওরফে মাহবুব (৩২), কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের কালুয়ার ডেইল এলাকার মৃত সামছুল আলমের ছেলে মকছুদ আলম (৩২), পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের কাকপাড়ার মৃত ছৈয়দুল করিমের ছেলে মো. তোফায়েল (২১), চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের পূর্ব মোহাজের পাড়ার বদিউল আলমের ছেলে মো. দিদার (৩০), চট্টগ্রাম জেলার হাটবাজারী উপজেলার মাদরাসা ইউনিয়নের উত্তর মাদরাসা এলাকার মৃত মো. ইছহাকের ছেলে ইকবাল হোসেন (৩৫) এবং কক্সবাজার শহরের উত্তর কুতুবদিয়াপাড়ার ইয়ার মোহাম্মদের ছেলে মোহাম্মদ রাশেদ (২৭)।
র্যাব জানিয়েছে, আটক মো. মজ্ঞুর আলম ওরফে মজ্ঞু একজন চিহ্নিত জলদস্যূ এবং নিজের নামে বাহিনী রয়েছে। তার নামে কক্সবাজার সদর থানাসহ বিভিন্ন থানায় ৯ টির বেশী মামলা রয়েছে।এছাড়া আটক অন্যদের বিরুদ্ধেও সাগরে জলদস্যূতাসহ নানা অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলকে জলদস্যূমুক্ত করতে র্যাবের নজরদারী অব্যাহত রয়েছে। রোববার ভোররাতে কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলে সশস্ত্র একদল লোক মাছ ধরার ট্রলারে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে খবরে র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। এতে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে ১০/১২ জন লোক দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। এসময় ধাওয়া দিয়ে ৭ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়।
“ পরে আটকদের হেফাজত ও ঘটনাস্থল তল্লাশী করে পাওয়া যায় ৩ টি দেশিয় তৈরী বন্দুক, ৭ টি গুলি, ২ টি লম্বা কিরিচ , ২ টি চাকু, ২ টি টর্চ লাইট ও ৭ টি বাটন মোবাইল। “
র্যাবের এ অধিনায়ক বলেন, “ আটকদের মধ্যে মজ্ঞুর আলম ওরফে মজ্ঞু একজন জলদস্যূ সর্দার। আটকদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ নানা অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। “
আটকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করা হয়েছে বলে জানান এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
র্য্যাব থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, একটি জলদূস্য বাহিনী সাগরে ডাকাতি করার প্রস্তুতি নিয়ে উপকূলীয় এলাকা নাজিরটেকে ঝড়ো হয়েছে এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গভীর রাতে অভিযানটি পরিচালিত হয়। এমন খবরে মোস্তাকপাড়ার মাঝের চরে গেলে র্যাব দেখতে পায় ১০/১২ একটি দল ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেসময় র্যাবের উপস্থিতি আচ করতে পরে ডাকাতদল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ধাওয়া করে ওই দলের ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সূত্রটি আরো জানিয়েছে মোঃ মঞ্জুর আলম প্রকাশ মঞ্জু একজন জলদস্যু সর্দার। জেলেদের কাছে আতংকের অপর নাম মঞ্জু ডাকাতের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর ও মহেশখালি থানায় জলদূস্যতা সহ নানা অপরাধে ৯ টি মামলা রয়েছে। এই দলটি প্রায় ৮-১০ বছর যাবত জলদস্যুতাসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছে। তারা প্রতি ১/২ সপ্তাহ পরপর নদী ও সাগরে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত জেলেদের অস্ত্র-শস্ত্রের ভীতি প্রদর্শনসহ ট্রলারে ডাকাতি করে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জলদস্যু সর্দার মঞ্জু সরাসরি সমুদ্রে না গিয়েও জলদস্যুতার কাজে নেতৃত্ব দিয়ে থাকে এবং তার পরিকল্পনা মোতাবেক ট্রলারে ডাকাতির ঘটনাগুলো সংঘঠিত হয়। তার অনুপস্থিতিতে চক্রের ২য় কমান্ড হিসেবে ডাকাত মাহাবুব জলদস্যু দলটির নেতৃত্ব দিয়ে থাকে। তার বিরুদ্ধে ৩ টি মামলা রয়েছে
এছাড়া মকছুদ ডাকাত দলের জনবল সরবরাহকারী ও ২ টি মামলার আসামী, মোহাম্মদ রাশেদ জলদস্যু দলকে নৌকা সরবরাহ করে থাকে। তাছাড়া তারা সবাই সমুদ্রে ডাকাতির কাজে সরাসরি অংশগ্রহণও করে। র্যাব ১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী বলেন ধৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ডাকাতির প্রস্তুতি আইনে কক্সবাজার সদর থানায় এজাহার দায়ের করা হয়রছে। তাদেরকে আদালতে পাঠানোর জন্য পুলিশের কাছে সোপার্দ করা হয়েছে।