নুরুল আলম :
কক্সবাজারকে আধুনিক ও পরিকল্পিত পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে নতুন করে মাস্টার প্ল্যান (মহা পরিকল্পনা) করা হচ্ছে। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এই মাস্টার প্ল্যান করা হবে।
আজ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরু করা হয়েছে। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মিলনায়তনে আজ দুপুরে কক্সবাজার জেলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন (১ম সংশোধিত)” শীর্ষক সমীক্ষা প্রকল্পের জন্য কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক) ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কন্সট্রাকশন সুপারভিশন কনসাল্টেন্ট (সিএসসি) এর মধ্যে “কক্সবাজার জেলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন (১ম সংশোধিত)” শীর্ষক সমীক্ষা প্রকল্পের পরামর্শ প্রতিষ্ঠান নিয়োগ সংক্রান্ত চুক্তিপত্র স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়।
চুক্তিপত্র স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে কউক-এর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর মোহাম্মাদ নুরুল আবছার (অব.) উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য লেঃ কর্ণেল মোঃ খিজির খান উপ নগর পরিকল্পনাবীদ লেঃ কর্ণেল তাহসিন বিন আলম কক্সবাজার জেলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন শীর্ষক সমীক্ষা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ তানভীর হাসান রেজাউল এবং সিএসসি-এর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সিএসসি-এর ডিরেক্টর (প্ল্যানিং এন্ড কন্সট্রাকশন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ-আল-মামুন ও কক্সবাজার জেলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন শীর্ষক সমীক্ষা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক লেঃ কর্ণেল সাদেক মাহমুদ।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর অব মোহাম্মদ নুরুল আবছার জানান
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন “কক্সবাজার জেলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন শীর্ষক সমীক্ষা প্রকল্পটির আওতায় কক্সবাজার জেলার মোট ৮ টি উপজেলা এবং সমুদ্র সৈকত এলাকাসহ মোট ৬৯০.৬৭ বর্গ কি.মি. এলাকার ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (DAP) এবং সমগ্র কক্সবাজার জেলার মোট ২৪৯১.৮৩ বর্গ কি.মি. এলাকার জন্য স্ট্রাকচার প্ল্যান প্রণয়ন করা হবে। প্রকল্পটি গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর মোট ১৭৪.৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে পরিকল্পনা কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত হয় এবং চলতি বছর ১২ জানুয়ারি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকল্পটির প্রশাসনিক অনুমোদন প্রদান করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালট্যান্ট (সিএসসি) কে নিযুক্তকরণের বিষয়টি গত ১৬ আগস্ট ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদকাল আগামী ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত।
তিনি জানান কক্সবাজার জেলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন শীর্ষক সমীক্ষা প্রকল্পটির সামগ্রিক উদ্দেশ্য হলো আগামী ৫০ বছরের মধ্যে কক্সবাজার ও উহার সন্নিহিত এলাকা সমন্বয়ে একটি আধুনিক ও আকর্ষণীয় পর্যটন নগরী প্রতিষ্ঠাকল্পে ভূমির যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, ভূমির উপর যেকোন প্রকৃতির অপরিকল্পিত উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ এবং উক্ত অঞ্চলের সুপরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পর্যটন নগরী কক্সবাজার জেলার ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (DAP) সহ মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা। এছাড়াও প্রকল্পের আওতায় টেকসই যাতায়াত ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, পাহাড়, বন, জলাশয় ও সমুদ্র অঞ্চল সংরক্ষণ, সমুদ্র সৈকতের নির্দিষ্ট সীমানা সংরক্ষণ, অবৈধ ও অপরিকল্পিত স্থাপনা অপসারণ, জল ও স্থলের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ, দূষণ প্রতিরোধ, বর্জ্য ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা, সকল প্রকার দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ, আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন সুবিধা নিশ্চিতকরণ, আবাসন ব্যবস্থা বিষয়ক পরিকল্পনা, সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্যবর্ধন ও ভূমিক্ষয় রোধকরণের উদ্দেশ্যে কক্সবাজার জেলার মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে।