ঘূর্ণিঝড় হামুনে লণ্ডভণ্ড সাগরদ্বীপ মহেশখালী

নিউজ রুম / ১৪ বার পড়ছে
আপলোড : রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২২ অপরাহ্ন

সাকলাইন আলিফ :

ঘূর্ণিঝড় হামুনে মুনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কক্সবাজারের সাগরদ্বীপ মহেশখালীতে। এখানকার ৮৯ শতাংশ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে পড়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। গাছপালা উপরে পড়ে মানুষের বাড়ি ঘর ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পূণবাসন সহ সরকারী সহযোগিতার কথা বলেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী। তবে অনেক এলাকায় এখনো ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছায়নি সরকারি কোন সাহায্য। এমনকি খোঁজ নিতে যায়নি জনপ্রতিনিধিরাও।

মঙ্গলবার রাত সাতটা থেকে নয়টা পর্যন্ত কক্সবাজার উপকূলের উপর দিয়ে চলে ঘূর্ণিঝড় হামুনের তাণ্ডব। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী। সেখানে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটেছে। নেই কোন মোবাইল নেটওয়ার্ক। তবে ফোন কোম্পানি গুলো কিছুটা সময়ের জন্য জেনারেটর দিয়ে তাদের টাওয়ার চালু রাখছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরের পর কক্সবাজার থেকে স্পিড বোট যোগে মহেশখালী আসার পর। উপজেলা সদরের গোরকঘাটা বাজার থেকে সিএনজি নিয়ে মহেশখালীর অপর প্রান্তে জনতা বাজার পর্যন্ত যেতে অনেক সময় লেগেছে। কারণ সড়কের বিভিন্ন স্থানে এখনও পড়ে আছে গাছ। আমার কিছু এলাকায় পড়ে আছে বিদ্যুতের তার। পুরুষ ২৭ কিলোমিটার সড়কের দুপাশে উপড়ে পড়ে আছে গাছ আর বিদ্যুতের খুঁটি।

কালারমার ছড়া ইউনিয়নের চিকনি পাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায় সবগুলো বাড়িঘর কোন না কোন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। পুরো এলাকার ৮০/ শতাংশ গাছ উপড়ে পড়ে গেছে। গাছ পড়ে মানুষের বসত বাড়ি ভেঙ্গে গেছে। এ গ্রামের বাসিন্দা আবু মুসা আনসারী বলেন, তার বাড়ির উপর ২৫ টি গাছ পড়েছে। সে নিজে একজন দিনমজুর তাই গাছগুলো কিভাবে সরাবেন বা কি করবেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। এমনকি এসব গাছ সরানোর জন্য কোন শ্রমিক ও পাওয়া যাচ্ছে না। ওই গ্রামে কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে সবগুলো বাড়িতেই একই অবস্থা। গ্রামের আরেক বাসিন্দা জালাল আহমদ জানান, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরেও সরকারি কোন সাহায্য বা সহযোগিতা এখনো পাইনি তারা। এমনকি কোনো জন প্রতিনিধি ও আসেনি এলাকায়।

মহেশখালী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জয়নাল আবদীন বলেন, পুরো এলাকা বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় রয়েছে। মোবাইল নেটওয়ার্কও নেই। কিছু কিছু এলাকায় জেনেটার দিয়ে স্বল্প সময়ের জন্য চালু করা হলেও তা অস্থায়ী। এই দ্বীপ থেকে কারো সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। ফলে এখানকার ক্ষয়ক্ষতির চিত্র গণমাধ্যমেও আসছে না। কারণ মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় গণমাধ্যম কর্মীরা সেই খবর পাঠাতে পারছেনা।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহেশখালীর ডিজিএম জানান, পুরো মহেশখালীর বিদ্যুৎ অবস্থা স্বাভাবিক হতে দুই মাস সময় লাগবে। পুরো বিদ্যুতের বিপর্যয় ঘটেছে।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মহেশখালী দ্বীপের মানুষ।

মহেশখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শরীফ বাদশা জানান, পুরো উপজেলায় ৮৯ শতাংশ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার মহেশখালী দ্বীপের কিছু ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিবেশন করেছেন

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, কক্সবাজারে যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করা হয়েছিল বাস্তবে তার চেয়ে আরো অনেক বেশি। এ ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার জন্য সরকার জনগণের পাশে রয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দানের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে চাহিদাপত্র চাওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহযোগিতা করা হবে।

প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে জেলার ৯ উপজেলার জেলার ৭১টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় ৪২ হাজার ৯৫৯টি বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত বাড়িঘরের সংখ্যা ৫ হাজার ১০৫ এবং আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ৩২ হাজার ৭৪৯টি বাড়ি।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর