প্রধানমন্ত্রী আসছেন কক্সবাজার

নিউজ রুম / ৩২ বার পড়ছে
আপলোড : শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২১ অপরাহ্ন

সাকলাইন আলিফ :

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ও বর্তমান সরকারের মেয়াদের শেষ প্রান্তে এসে  ১১ নভেম্বর কক্সবাজার আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি স্বপ্নের দোহাজারী কক্সবাজার রেলপথে ট্রেন চলাচল ও মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেল সহ বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন। জনসভা ও সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে পুরো জেলায় সাজসাজ রব পড়েছে। নেয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন কক্সবাজারের মানুষ। মাতারবাড়ির জনসভায় তিন লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

বর্তমান সরকারের নেয়া উন্নয়ন প্রকল্পের মহাযজ্ঞ চলছে কক্সবাজারে। সরকারের নানা উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে বদলে গেছে কক্সবাজারের দৃশ্য। আর এ সরকারের মেয়াদের শেষ পর্যায়ে ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ মুহূর্তে উন্নয়ন যজ্ঞ চলমান থাকা পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে পুরো কক্সবাজার জেলা জুড়ে সাজসাজ রব পড়েছে। ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টার চেয়ে গেছে পুরো কক্সবাজার জেলা। প্রধানমন্ত্রীর আগমন কে কেন্দ্র করে উৎসাহ উদ্দীপনার কমতি নেই কোথাও। দোহাজারী কক্সবাজার স্বপ্নের রেল লাইনের শেষ প্রান্তে আইকনিক রেলস্টেশন দেখে অনেক খুশি কক্সবাজারের মানুষ। কক্সবাজার শহরের গোনারপাড়ার বাসিন্দা হামিদ বলেন, কোনদিন কল্পনাও করতে পারেনি আমরা রেলে করে ঢাকায় যাব। এটা আমাদের জন্য একটি স্বপ্ন।
কক্সবাজার সদর রামু আসনের সংসদ সদস্য ও তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন,প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে এসে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার রেলপথে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করবেন। কক্সবাজার থেকে প্রধানমন্ত্রী ট্রেনের টিকেট কেটে রামু ও যাবেন।
সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল  বলেন২০১০ সালে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্ত ঘুমদুম পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়। এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল কক্সবাজারে যাতায়াত সহজ করা। পাশাপাশি মিয়ানমারসহ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করা। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের জন্য চট্টগ্রামের দোহাজারী পর্যন্ত ব্রিটিশ আমল থেকেই রেললাইন আছে। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে এই প্রকল্পের ব্যয় র্নিধারণ করা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের জুলাইয়ে সরকারের অগ্রাধিকার এই প্রকল্পটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখনো ৯ স্টেশনের মধ্যে বেশ কয়েকটির কাজ চলছে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে। এই প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, শনিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী রামু থেকে মাতার বাড়ি আসবেন। এরপর
মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেলের উদ্বোধন, প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন সহ ১৪ টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও চারটির ভিত্তি প্রস্থ স্থাপন করবেন।
মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কালারমার ছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ জানান ১৯৯৫ সালের ৩০ এপ্রিল তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী হিসেবে আজকের প্রধানমন্ত্রী মাতার বাড়ি এসেছিলেন। দীর্ঘ ২৮ বছর পর আবার সেই মাতার বাড়িতে আসায় স্থানীয় মানুষরা অনেক খুশি। পুরো জেলার মানুষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এক নজর দেখার জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে।
মাতারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হায়দার জানান,প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে আছে মাতার বাড়ির মানুষ। মাতার বাড়ির পুল পাওয়ার মাঠে জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর এই জনসভায় ৩ লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী।
চকরিয়া পেকুয় আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব জাফর আলম বলেন, জনসভায় চকরিয়া পেকুয়া থেকে ৫০ হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করবে।
প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার এসে রেলের টিকিট কেটে রামু যাবেন। উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রয়েছেন কক্সবাজারের মানুষ।
প্রধানমন্ত্রীর এ আগমনে কক্সবাজারকে ঘিরে আরো উন্নয়ন পরিকল্পনার ঘোষণা আসতে পারে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সামনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার এই আগমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কক্সবাজারে অনেক উন্নয়ন করেছে বর্তমান সরকার। প্রধানমন্ত্রীর জনসভা থেকে আরও বড় ধরনের উন্নয়ন প্রকল্পের ঘোষণা আসতে পারে বলেও জানান তিনি।
উন্নয়ন প্রকল্পগুলো প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের আগে দেখার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার কয়েকজন মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী কক্সবাজার সফর করেছেন।
১১ নভেম্বর শনিবার উন্নয়ন প্রকল্প গুলো উদ্বোধন ও মাতারবাড়ীর জনসভায় ভাষণ পর প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর