বিডি প্রতিবেদক :
কক্সবাজারের পরিবেশ সংকট ও করনীয় শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর কক্সবাজার শহরের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে গতকাল দুপুরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় কক্সবাজারের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
শারমিন মুর্শিদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, এডভোকেট সুলতানা কামাল। প্রধান আলোচক ছিলেন শরীফ জামিল।
বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল কাদের চৌধুরী,আবদুল করিম চৌধুরী কিম,এজেএম গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী,বীর মুক্তিযোদ্ধা আকতার উজজামান চৌধুরী,শওকতুল ইসলাম চৌধুরী বাহাদুর,ফরিদুল আলম শাহীন,জাহাঙ্গীর আলম,তৌহিদ বেলাল,অ্যাডভোকেট আবু মুসা মুহাম্মদ,মুকিম খান,মুহাম্মদ হাসান,আরিফুল্লাহ নুরী,নুরুল হোসাইন,শহিদুল ইসলাম,মুহাম্মদ ইউনুস,দেলোয়ার হোসেন,রেজাউল করিম,সাঈদুল হক চৌধুরী,ছেনুয়ারাবেগম সানী,হারুনর রশীদ সিকদার।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন,
ধ্বংসের মুখে কক্সবাজারের পরিবেশ-প্রতিবেশ।
নদী, বন, পাহাড়, জীববৈচিত্র্য, সাগরতীর ধ্বংস করে একদিকে চলে সরকারের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ, আরেকদিকে ক্ষমতাসীনদের দখলে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে কক্সবাজার।
অতিরিক্ত ইট-পাথরের ভবনের ভারে সেন্টমার্টিন ডুবন্ত অবস্থায়।
তেমনি দখল-দূষণে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঁকখালী, ঈদগাঁওর ফুলেশ্বরী, চকরিয়ার মাতামুহুরী আর মহেশখালীর কোহেলিয়াসহ অসংখ্য নদী।
সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার করালগ্রাস থেকে রক্ষা পাচ্ছে না ভার্জিন দ্বীপ সোনাদিয়াও।
হোটেলের পয়ঃবর্জ্যে ভারী হচ্ছে সাগরের পানির দূষণ।
আমলাতন্ত্র আর রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাবশালীরা মিলেমিশে শেষ করে দিচ্ছে কক্সবাজারকে।
এখনই উদ্যোগ না নিলে নৈসর্গিক কক্সবাজারকে বাঁচানো কঠিন হবে।
কক্সবাজারের ভবিষ্যতের সঙ্গে জাতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে, তাই এটি আর কক্সবাজারের সমস্যার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটি এখন জাতীয় সমস্যা।
সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নিয়ে পরিবেশ ধ্বংসকারীরা যত বড়ই হোক না কেন তাদের চিহ্নিত করে কক্সবাজারকে বাঁচাতে হবে। না হয় আমরা যতই আন্দোলন আর লেখালেখি, মামলা-মোকদ্দমা করিো না কেন, কাজে আসবে না।
পর্যটন নগরীর পরিবেশের লাগাম এখনই টেনে ধরতে হবে। সরকারের উচিত আগে পরিবেশ রক্ষা করা, এরপর উন্নয়ন করা।
এ মুহূর্তে ধরা-র মতো পরিবেশ সংগঠন করে সাংবাদিক, পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকা দরকার। তাহলে সমন্বিত উদ্যোগে পর্যটন শহর কক্সবাজার বাঁচবে।
সমুদ্র নগরীর সবখানে সব বাহিনীর দখল রয়েছে। বড় বড় স্থাপনা এখন তাদের। চলমান এ রাজনৈতিক সংস্কৃতি বদলাতে না পারলে পরিবেশ প্রকৃতির সঙ্গে মানুষও একদিন হারিয়ে যাবে।
কক্সবাজারের নদী কারা দখল করছে, কারা বালি উত্তোলন করছে, কারা শক্তি ও ইন্ধন দিচ্ছে; তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। পাহাড় কাটা রোধে এখন থেকে কমিউনিটি গ্রুপ তৈরি করে প্রতিরোধ গড়তে হবে।
বাঁকখালী রক্ষায় প্রশাসনকে শক্তিশালীভাবে মোকাবেলা করতে হবে। মামলা ও স্থানীয় প্রভাব এগুলো দেখে লাভ নেই। যারা রক্ষার জন্য বিভিন্ন অফিস-আদালতে তদবির করে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। ক্ষমতার ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার থেকে সরে আসতে হবে।
পরে ফজলুল কাদের চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট কক্সবাজারে ধরার আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।