শিরোনাম :
টেকনাফ উপজেলার হোয়াইকং ইউনিয়নে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১টি বাড়ি পুড়ে ছাই,ক্ষয়ক্ষতি ৪০ লাখ টাকা সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিতকরণ এবং রাত্রিযাপন নিষিদ্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন ডাকাতের কবলে পড়ে মিয়ানমারের আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা ১৬ জেলে ফেরত এনেছে বিজিবি “১ টাকায় হাজার টাকার বাজার” নাফ নদীর মোহনায় স্পিডবোট ডুবি শিশু সহ ২ জন নিখোঁজ, জীবিত উদ্ধার-৮ কক্সবাজারে নাতনির স্বামীর হাতে নানী খুন বিকাশের দোকান চুরিতে ২লাখ ৭০হাজার টাকা উধাওঃব্যথার ওপর সংবাদকর্মী ব্যথা নৌবাহিনীর অভিযান : মাতারবাড়ি পাওয়ার প্ল্যান্টের চুরি হওয়া কোটি টাকার মালামাল জব্দ মালয়েশিয়া বলে ইনানী সৈকতে শতাধিক রোহিঙ্গাকে রেখে পালালো দালালরা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কক্সবাজারের অনেক এলাকায় খাবার পানির সংকট :ইয়াছমিন-রহিমার পানির দুঃখ ঘুচালো হাইসাওয়া

সংক্ষুদ্ধ হয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মতে’ ডাম্পার ট্রাক চাপায় বনবিট কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে

নিউজ রুম / ২৪ বার পড়ছে
আপলোড : শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০১:১২ অপরাহ্ন

বিডি প্রতিবেদক :

কক্সবাজারের উখিয়ায় সংঘবদ্ধ মাটির পাচারকারি চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি অভিযান অব্যাহত রাখায় ‘সংক্ষুদ্ধ হয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মতে’ ডাম্পার ট্রাক চাপায় বনবিট কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় দায়ের মামলার প্রধান আসামি মো. বাপ্পীকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে মাটি পাচারকারি চক্রের সদস্যদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্যগুলো যাচাই বাছাই করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২ টায় উখিয়া থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন, পুলিশের উখিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারি পুলিশ সুপার ( এএসপি ) মোহাম্মদ রাসেল।
গ্রেপ্তার মো. বাপ্পী (২৩) উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম হরিণমারা এলাকার মো. কাশেমের ছেলে। সে ঘাতক ট্রাকটির চালক।
এর আগে গত ১ এপ্রিল ভোরে উখিয়ার হরিণমারা এলাকা থেকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে মামলার এজাহারভূক্ত ৫ নম্বর আসামি ছৈয়দ করিম (৩৫) কে।
সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ রাসেল বলেন, গত মাসখানেকের বেশি সময় ধরে উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক হারে পাহাড় কেটে মাটির পাচার করে আসছিল সংঘবদ্ধ একটি চক্র। আর পাহাড় কেটে মাটি বিক্রিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে স্বোচ্ছার ছিলেন বনবিভাগের দোছড়ি বিটের কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান সজল। ঘটনার সপ্তাহখানেক আগে অভিযান চালিয়ে তিনি মাটি পাচারকারি চক্রের ৫ টি ডাম্পার ট্রাক জব্দ এবং কয়েকটি মামলা দায়ের করেন। এ নিয়ে চক্রটির লোকজন তার উপর ক্ষুদ্ধ ছিল।
“ গ্রেপ্তার আসামি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, বনবিভাগের অভিযানে ট্রাক জব্দ এবং মামলা দায়ের করায় এজাহারভূক্ত ১০ নম্বর আসামি কামাল উদ্দিন ড্রাইভারসহ মাটি পাচারকারিরা বনবিট কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামানের উপর ক্ষুদ্ধ ছিল। তারা মোবাইল ফোনে কল দিয়ে এবং নানাভাবে তাকে ( সাজ্জাদুজ্জামান ) হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিল। এমন কি তারা সাজ্জাদুজ্জামানকে প্রাণে মারারও হুমকি দেয়। “
সহকারি পুলিশ সুপার বলেন, “ ঘটনার দিন গভীর রাতে উখিয়া উপজেলার হরিণমারা এলাকার সংরক্ষিত বনের পাহাড় কেটে মাটি পাচারের খবরে বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান সহকর্মি আলী আহমদকে সঙ্গে নিয়ে মোটর সাইকেল যোগে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এতে হাতনাতে একটি ডাম্পার ট্রাক করে মাটি পাচার করতে দেখে থামার জন্য নির্দেশ দেন। এসময় ট্রাকটির চালক তাদের ( বনকর্মিরা ) বহনকারি মোটর সাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে সাজ্জাদুজ্জামান নিহত হন এবং তার সহকর্মি আলী আহমদ আহত হয়েছেন। “
ঘটনার সময় ট্রাক চালক বাপ্পীর পাশের সিটে কামাল উদ্দিন ড্রাইভার বসা ছিল এবং তার ইন্ধনে বন কর্মকর্তাদের বহনকারি মোটর সাইকেলটি চাপা দেয়া হয়েছিল সাংবাদিকদের তথ্য দেন মোহাম্মদ রাসেল।
গ্রেপ্তার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে পাহাড় কেটে মাটি পাচারকাজে জড়িত চক্রটির ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে এবং এসব তথ্য যাচাই বাছাই করে করে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে কাজ অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। ওইদিন রাতে এক পর্যায়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার পরিত্যক্ত একটি ইটভাটা থেকে ঘাতক ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। এরপর গত ১ এপ্রিল ভোরে রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভূক্ত ৫ নম্বর আসামি ছৈয়দ করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সহকারি পুলিশ সুপার রাসেল জানান, ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম শহরের বন্দর থানা এলাকায় মামলার প্রধান আসামি ও ঘাতক ট্রাকটির চালক বাপ্পী আত্মগোপন অবস্থায় রয়েছে খবরে পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। এতে সন্দেহজনক স্থাপনাটি ঘিরে ফেললে সে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। এসময় পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
গত ৩১ মার্চ মধ্যরাতে উখিয়ায় সংরক্ষিত বনের পাহাড় কেটে অভিযানে গিয়ে ‘মাটি পাচারকারিদের ড্রাম্প ট্রাকের চাপায়’ বনবিট কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান (৩০) নিহত হন।

তিনি কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বনবিটের বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন এবং মুন্সিগঞ্জ জেলার গজরিয়া উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে।

এ ঘটনায় আহত হন বনরক্ষী মোহাম্মদ আলী (২৭), তিনি টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ঝিমংখালী এলাকার আবুল মজ্ঞুরের ছেলে।

এ ঘটনায় পরের দিন ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া রেজ্ঞ কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম বাদী হয়ে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।

এর আগে এই মামলার ৫ নম্বর আসামি হরিণমারা এলাকার মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে ছৈয়দ করিম (৩৫)কে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর