শিরোনাম :
শরীফ উসমান হাদির সুস্থতা কামনায় কক্সবাজারে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সর্বদলীয় ঐক্যমঞ্চের উদ্যোগে গণ দোয়া মাহফিল উখিয়ায় দুস্থ ও শীতার্তদের মাঝে সেনাবাহিনীর শীতবস্ত্র বিতরণ কক্সবাজার প্রেসক্লাবে মহান বিজয় দিবস উদযাপন সামনের নির্বাচন সুষ্টু না হলে সংকট আরো বাড়বে-সুজন কক্সবাজার প্রেসক্লাবে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপন ওসি প্রদীপের সাজানো মামলা প্রত্যাহার ও সাংবাদিক ফরিদুলের পাসপোর্ট ফেরতের দাবি ড্রাইভার কল্যাণ একতা সমিতির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভা সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে কর্মকর্তারা বদ্ধপরিকর ওসি প্রদীপের আক্রোশের শিকার সাংবাদিক ফরিদুলের ৬ মামলা প্রত্যাহার না হওয়ায় অসন্তোষ

গহীন পাহাড়ে আরসার আস্তানায় র্যাবের অভিযান :উদ্ধার গ্রেনেড রকেট সেল ধ্বংস

নিউজ রুম / ১৩৪ বার পড়ছে
আপলোড : শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৯ অপরাহ্ন

বিডি প্রতিবেদক :

কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন অরণ্য লাল পাহাড়ে রাখাইনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ  আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির আরসার আস্তানায় আবারো অভিযান চালিয়েছে র্যাব ১৫ এর আভিযানিক দল। আস্তানা থেকে হেন্ড গ্রেনেড রকেট সেল অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে র্যাব। এ সময়

বাংলাদেশে আরসার অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক ও কমান্ডার মোঃ শাহনুর প্রকাশ মাস্টার সলিম ও তার এক সহযোগীকে আটক করে র‌্যাব।

র্যাব সদর দপ্তরের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মোহাম্মদ আরাফাত ইসলাম আজ বুধবার দুপুরে উখিয়া উপজেলায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন অভিযান স্থলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান।

আজ বুধবার (১৫ মে) ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত  উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-২০ এক্সটেনশনের পশ্চিমে  লাল পাহাড়ে আরসার আস্তানায় র‍‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এ অভিযান পরিচালনা করে।

এদিকে উখিয়ায় আরসার আস্তানায় এই প্রথম উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন হেন্ড গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে। দুপুর ১টার দিকে রামু সেনানিবাসের ক্যাপ্টেন নাদিয়া নুসরাতের নেতৃত্বে একটি বম্ব ডিস্পোজাল টিম

র‍্যাবের অভিযানে উদ্ধারকৃত বিস্ফোরক, গ্রেনেড, আইইডি এবং রকেট সেল ধ্বংস করে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরাফাত ইসলাম জানান মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সংঘাতকে কাজে লাগিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পেউ নতুন করে খুন খারাবি ও অস্থিরতা সৃষ্টির পায়তারা করছে মিয়ানমারের রাখাইন ষ্টেট ভিত্তিক সন্ত্রাসী গ্রুপ আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা)। তারা রাখাইন থেকে অস্ত্রশস্ত্র এনে নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে।

  প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি আরো জানান, উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন এই পাহাড়ে মিয়ানমারের রাখাইন ষ্টেটের সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যরা নতুন করে আস্তানা গড়ে তুলার গোপন সংবাদ পেয়ে র্যাব ১৫ এর একাধিক টিম গতকাল মংগলবার মধ্য রাত থেকে ঐ পাহাড়ে অভিযান শুরু করে। আজ বুধবার ভোরের দিকে আস্তানা ঘেরাও করলে আরসার সন্ত্রাসীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। র্যাব সদস্যরা পাল্টা গুলি ছুড়লে দু পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। এ সময় আরসার সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় র্যাব সদস্যরা আরসার কমান্ডার মাস্টার সলিমুল্লাহ ও তার সহযোগী রিয়াজকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ০৫টি গ্রেনেড, ০৩টি রাইফেল গ্রেনেড, ১০টি দেশীয় তৈরী হ্যান্ড গ্রেনেড, ১৩টি ককটেল, ০১টি বিদেশী রিভলবার, ০৯ রাউন্ড 9MM পিস্তলের এ্যামুনিশন, ০১টি এলজি এবং ০৩টি ১২ বোর কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, বেশকিছু দিন ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝিসহ কয়েক রোহিঙ্গাকে গুলি ও গলা কেটে হত্যার ঘটনা ঘটছে। এরই প্রেক্ষিতে র‌্যাব ক্যাম্পে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। তারই ধারাবাহিকতায় সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে উখিয়ার ক্যাম্পসংলগ্ন গহিন পাহাড়ে মিয়ানমারের সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার আস্তানা অবস্থান শনাক্ত করা হয়।

তিনি জানান বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মূর্তিমান আতঙ্কের নাম আরসা’র সন্ত্রাসী গোষ্ঠি। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যা, অপহরণ, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, অগ্নিসংযোগ ও মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছে আরসা’র সন্ত্রাসী গোষ্ঠি। এই আরসা সন্ত্রাসীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাধারণ রোহিঙ্গাদের উপর প্রভাব খাটায়। কেউ আরসার অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরোধিতা করলে কিংবা তাদের কথা না শুনলে তারা বেশিরভাগই অপহরণ ও হত্যা শিকার হয়। রোহিঙ্গা নাগরিক প্রর্ত্যাবাসনের পক্ষে কাজ করায় ২০২১ সালে রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মহিবুল্লাহ আরসার সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছিল। এছাড়াও ২০২২ সালে গোয়েন্দা সংস্থা ও র‌্যাবের মাদকবিরোধী যৌথ অভিযানের সময় আরসা সন্ত্রাসীদের হামলায় গোয়েন্দা সংস্থার একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিহত হন। উক্ত সন্ত্রাসী হামলায় একজন র‌্যাব সদস্য গুরুত্বর আহত হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করা হয় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার সহ বিভিন্ন কারনে ২০২৩ সালে আরসার সন্ত্রাসীদের হাতে ৬৪ জন সাধারণ রোহিঙ্গা ও রোহিঙ্গা কমিউনিটি লিডার এবং চলতি ২০২৪ সালের এই পর্যন্ত ১৬ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।

এ ছাড়া ক্যাম্প ও ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে র্যাব এ পর্যন্ত ১১০ জন আরসা সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাদের নিকট থেকে ৫১.৭১ কেজি বিস্ফোরক, ১২টি বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র, ৫৩টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ১৫৩ রাউন্ড গুলি কার্তুজ, ৬৭ রাউন্ড খালি খোসা, ০৪টি আইডি ও ৩৫টি ককটেল উদ্ধার করা হয়।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর