নির্যাতিত সাংবাদিক ফরিদ জানান,প্রায় ৬ বছর আগে জামিনে কারামুক্তির পর এবং এর আগে পরিবারের পক্ষ থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদর দপ্তর, ডিসি, এসপিসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলে আবেদন নিবেদন করা হলেও রহস্যজনক কারণে তা ঝুলে আছে। সর্বশেষ আওয়ামী সরকার পতনের পর কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা, রাষ্ট্রপতি, তথ্য মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন ফরিদুল মোস্তফা খান। কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, মামলার বোঝা আর সইতে পারছি না। দিন দিন আর্থিক দৈন্যদশা বেড়েই চলেছে।
এ নিয়ে কক্সবাজারের সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল তার বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ফরিদুল মোস্তফার ওপর ঘটে যাওয়া ওসি প্রদীপের জুলুমের কথা উল্লেখ করে সহমর্মিতা এবং নিজের সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বক্তব্য দেন।
সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান জানান, সাজানো মামলায় কারাভোগের পর জামিনে এসে প্রদীপ গংয়ের বিরুদ্ধে আদালতে তার দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলাটি আজও রেকর্ড হয়নি। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে গত ৫ বছর ধরে পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বারবার সময়ের দরখাস্ত দিয়ে সময় ক্ষেপণ করায় তার (ফরিদুল মোস্তফা) আইনজীবীরা মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে আমলে নেওয়ার আবেদন করলে তা কার্যকর হয়নি। এ ছাড়া ফরিদুলের সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, থানার রেকর্ড পত্র পর্যালোচনা সিডিএমএস সংশোধন ও জীবনের নিরাপত্তার দাবিতে তার স্ত্রীর দায়েরকৃত হাইকোর্টে রিট আবেদনটিও নিষ্পত্তি হয়নি গত ৬ বছরে। কেন তার জীবনের নিরাপত্তা দেওয়া হবে না- মর্মে স্বরাষ্ট্র সচিব, কক্সবাজারের ডিসি, এসপিসহ বিবাদীদের রুলেই আটকে আছে রিট পিটিশনটি।
অন্যদিকে, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআইকে এ ঘটনার ৪ সপ্তাহের ভেতরে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও পিবিআই রহস্যজনক কারণে গত ৬ বছর ধরে হাইকোর্টে কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি। শুধু তাই নয়, নির্যাতিত এই সাংবাদিক কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে তার নামে পূর্বে ইস্যুকৃত ডিজিটাল পাসপোর্টটি মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নবায়নের আবেদন করলেও পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের অজুহাতে সেটি স্থগিত করে দেন পাসপোর্ট অফিসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। মিথ্যা ও সাজানো মামলাগুলোর বিষয়ে তদন্ত করে দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে তার পরিবার ও স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ।