বেগমগঞ্জ প্রতিবেদক :
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক সৌদি প্রবাসীকে হত্যার অভিযোগে তার স্ত্রীকে আটক করেছে বেগমগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ।
থানা পুলিশ ও এলাকা সূত্রে জানা যায়, আগের রাতে মারা যান সৌদি প্রবাসী মো. ইসমাইল হোসেন (৩৪)। পরদিন দাফনের আগে মরদেহের গোসলের সময় দেখা গেল, গলায় কালো দাগ। বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানার পর খবর দেন বেগমগঞ্জ থানায়। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। একই সঙ্গে আটক করা হয় নিহত ইসমাইলের স্ত্রী লিমা আক্তার(২১) কেও।
নিহত ইসমাইল হোসেনের বাবা মো. ছায়েদুল হক বলেন, ‘গত রবিবার রাতের খাবার খেয়ে পরিবারের সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। তার প্রবাসী ছেলে ইসমাইল স্ত্রীসহ থাকেন আলাদা ঘরে। রাত দেড়টার দিকে ছেলের ঘর থেকে পরপর দুটি আওয়াজ শোনেন। কিন্তু কিসের আওয়াজ, ঠিক বুঝতে পারেননি। কিছু সময় পর তার পুত্রবধূ এসে জানান, ইসমাইল মেঝেতে পড়ে আছেন। তখন তিনিসহ পরিবারের সদস্যরা ওই ঘরে গিয়ে দেখেন, তার ছেলে ঘরের মেঝেতে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। শরীর ছুঁয়ে দেখেন ঠান্ডা বরফের মতো হয়ে আছে। তাৎক্ষণিক তারা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে চৌমুহনীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
ছায়েদুল হক অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘মৃত ঘোষণার পর তারা লাশ বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরে সোমবার দুপুরের দিকে দাফনের জন্য লাশের গোসল করাতে নেওয়া হয়। গোসলের এক পর্যায়ে উপস্থিত লোকজন দেখেন তার ছেলের গলায় কালো দাগ। তখন তিনিসহ পরিবারের সদস্যরাও বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেন। পরে তারা বেগমগঞ্জ মডেল থানায় খবর দিলে পুলিশ দুপুরে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।’
নিহতের পিতা ছায়েদুল হকের অভিযোগ, ছেলের স্ত্রীই বলতে পারবেন তার ছেলে কীভাবে মারা গেছেন। ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন এবং বিষয়টি তদন্ত করে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন ও দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান।
এদিকে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর আগে লিমা আক্তারের সঙ্গে সৌদি আরব প্রবাসী মো. ইসমাইল হোসেনের বিয়ে হয়। দুই বছর বিদেশে থাকার পর সম্প্রতি তিনি দেশে আসেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী বেগমগঞ্জ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলাশ দাশ বলেন, ‘সুরতহাল প্রতিবেদনে মরদেহের গলায় কালো দাগ দেখা গেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সোমবার বিকেলে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বলেন, ‘পরিবারের তরফ থেকে থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং তার স্ত্রী লিমা আক্তারকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি প্রতিনিধিদলও ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে। এ ঘটনায় পরিবারের অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।’