শিরোনাম :
ঈদগাঁওতে বৃদ্ধকে গুলি করে হত্যা অনরার দু:খ কষ্ট বুঝিলইবার লাই ও আইস্সে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব, শুনলেন গণহত্যার বর্ণনা প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে ইফতার করবেন প্রতি ব্লকের ৭০ রোহিঙ্গা রোহিঙ্গাদের তৈরি শিল্পকর্ম দেখলেন জাতিসংঘ মহাসচিব কক্সবাজার বিমানবন্দর ও খুরুশকুল পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শনে প্রধান উপদেষ্টা চকরিয়ায় হাইওয়ে পুলিশের জীপ খাদে পড়ে পুলিশ সদস্য নিহত, এসআইসহ আহত ৪ রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়: গুতেরেস রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ইফতার করলেন প্রধান উপদেষ্টা ও জাতিসংঘ মহাসচিব আছিয়ার ধর্ষকদের সবোর্চ্চ শাস্তির দাবিতে পেকুয়ায় ছাত্রদের মানববন্ধন

অবসরে যাওয়া একজন শিক্ষকের ৩৩ বছরের অভিজ্ঞতার কিছু কথা কিছু স্মৃতি

নিউজ রুম / ৬৮ বার পড়ছে
আপলোড : শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০১:৪৪ অপরাহ্ন

নাছির উদ্দিন :

অবসর পরবর্তি ছুটির (Post Retirement Leave/PRL) একমাস অতিক্রান্ত। আলহামদু লিল্লাহ।
১৯৯১ সালে শিক্ষকতার মত মহান পেশায় প্রবেশ। দীর্ঘ ৩৩বছর শিক্ষা, শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবক সাথে নিয়ে আলোকিত পথ চলা। শিক্ষকতার মত পবিত্র আলোক মিশনে আত্মনিয়োগ করার মাধ্যমে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছিলাম। ভালোবেসে ফেলেছিলাম শিক্ষা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর শিক্ষার্থীদেরকে। শিক্ষার্থীদের সাফল্য আর ব্যর্থতা হৃদয় ছুঁয়েছে নিয়ত। অনগ্রসরকে অগ্রসর করা, অগ্রসরকে আরও অগ্রসর করার চ্যালেঞ্জ নিতে গিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা, অনেক শিখন ঘটেছে। সবচেয়ে ভাল লাগত যখন একজন শিক্ষার্থীর মনকে বদলে দেয়ার মাধ্যমে তার জীবনকে বদলে দিতে পারতাম তখন। মনের মাঝে আত্মবিশ্বাস আর স্বপ্ন জাগিয়ে তোলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে তাদের ও তাদের পিতা-মাতার কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পরিসীমায় পৌঁছে দেয়ার অনেক অভিজ্ঞতা আমার আছে। প্রত্যেক শিক্ষকের থাকে। আজ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষকতা জীবন শেষ করে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়। সারদেশের যেখানেই যাই আমার শিক্ষার্থীরূপী সন্তানেরা আমাকে হাতছানি দেয়, আমাকে পুর্ণতায় ভরিয়ে তোলে। এদের মধ্যে ডাক্তার, প্রকৌশলী, বিচারক, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, ব্যাংকার, এনজিওকর্মি, ব্যবসায়ি, রেমিটেন্স যোদ্ধা, সাংবাদিক সবই আছে। আমার শিক্ষার্থীরা আজ বিশ্ববিস্তৃত।
আমি আবারও ভাগ্যবান-শিক্ষকতা জীবন শেষ করে ২০২১ সালে দায়িত্ব পেলাম জেলা শিক্ষা অফিসার এর। এ যে আর এক জগত-আরও বৃহত্তর, আরও মহিমার। এক স্কুল ছেড়ে জেলার প্রায় সাড়ে ছয়শ’ স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, পরিদর্শন ও নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে পুরো জেলা শিক্ষার অভিভাবক হিসেবে কাজ করার সুযোগ এলো। ঝাঁপিয়ে পড়লাম নিজের সমস্ত সদিচ্ছা আর যোগ্যতা নিয়ে। ছুটে চললাম সারা জেলায় উপজেলা থেকে উপজেলায়, প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিষ্ঠানে। একটা ইতিবাচক জাগরণ আনার চেষ্টা করলাম প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে। শিক্ষক, অভিভাবক, কমিটি সকলের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সহযোগিতার মনোভাব তৈরির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোতে উন্নত ও শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করে গেলাম ক্লান্তিহীনভাবে। সবচেয়ে বড় কথা আমার সকল দায়িত্ব পালনে শতভাগ সততা, নিষ্ঠা, দায়িত্বশীলতা এবং সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত করেছি। আমার সকল কাজে আমার সার্বক্ষণিক সহযোগি ছিলেন আমার অফিসের (জেলা ও উপজেলা) প্রত্যেক কর্মকর্তা, কর্মচারি এবং সম্মানিত শিক্ষকগণ। বিশেষ করে সম্মানিত প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সহযোগিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। আমার উপজেলা কর্মকর্তাগণ বিরামহীন সহযোগিতা করেছেন আমাকে।
আমার মহা পরিচালক স্যারসহ মাউশি’র সকল কর্মকর্তা, আঞ্চলিক উপপরিচালক স্যার, মান্যবর জেলা প্রশাসক মহোদয়গণ (আলী হোসেন স্যার, কামাল হোসেন স্যার, মামুনুর রশিদ স্যার, শাহীন ইমরান স্যার, বর্তমান মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন স্যার) আমাকে যে সম্মান ও সহযোগিতা করেছেন তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা। এমনকি প্রত্যেক সম্মানিত জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তার কাছে তাঁদের অন্তরিকতা ও সহযোগিতার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।
একজন মানুষের প্রতি আমি আমরণ কৃতজ্ঞ। তিনি জনাব মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন,উপপরিচালক,মাউশি, ঢাকা। তিনি আমার বন্ধু, সহপাঠি, সহকর্মি যিনি আমার চাকুরজীবনে সকল সাফল্যের অংশীদার।
আমার চাকুরিজীবনের পাশাপাশি বিভিন্ন সামামাজিক, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা আমাকে সমৃদ্ধ করেছে, দিয়েছে পুর্ণতা।
গত ২৯ নভেম্বর ২০২৪ আমার অবসর প্রস্তুতি ছুটি (PRL) শুরু হয়েছিল। আজ একমাস পুর্ণ হল। এভাবেই একদিন হয়তো জীবন থেকেই অবসর নেয়ার মুহূর্ত এসে যাবে।
এখন আমার অসুস্থ বড় ভাই (এম. সালাহ উদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা)কে নিয়ে ব্যস্ত আছি। আল্লাহ তাকে সুস্থ করলে নতুন কোন মিশন শুরু করব ইনশা আল্লাহ। আমি ক্লান্ত হতে চাই না, থেমে যেতে চাই না। মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আমি সৃষ্টি করে যেতে চাই, সেবা করে যেতে চাই।
আপনাদের দোয়াই আমার পাথেয়।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর