সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে মামলা রেকর্ড করলো পুলিশ

নিউজ রুম / ১২৬ বার পড়ছে
আপলোড : রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ন

বিডি প্রতিবেদক পেকুয়া :
কক্সবাজারের পেকুয়ায় ছুরিকাঘাতে দিনমজুর আবদুল মালেক হত্যার ঘটনায় সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে মামলা রেকর্ডের অভিযোগ ওঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। লাশ হস্তান্তরের নাম করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে পুলিশ মনগড়া এজাহার তৈরি করেছে বলে দাবী করেছেন মামলার বাদী ফাতেমা বেগম। এতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৪ জন আসামী বাদ পড়েছে বলেও দাবী করেন তিনি।

মঙ্গলবার এসব অভিযোগ উল্লেখ করে তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তনসহ বাদ পড়া আসামীদের মামলায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন ফাতেমা বেগম। অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জাহেদ হোসাইন।

এবিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবি ফখরুল ইসলাম গুন্দু বলেন ‘মামলার এজাহার তৈরিতে যে পুলিশ কর্মকর্তা পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছেন তিনিই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বাদী ওই কর্মকর্তা পরিবর্তনের পাশাপাশি বাদ পড়ে যাওয়া আসামীদের অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেছেন। ব আদালত তা আমলে নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ সুপার কক্সবাজারকে নির্দেশ দিয়েছেন।’

আবেদনে মামলার বাদী ফাতেমা বেগম উল্লেখ করেন, স্বামী হত্যার ঘটনায় রুজু হওয়া মামলাটির এজাহার পুলিশ মনগড়া তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করেছে। এতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকা চারজন আসামী বাদ পড়েছেন। তাঁরা হলেন, উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের বাজার পাড়া এলাকার মৃত আবদু ছাত্তারের ছেলে নুর মোহাম্মদ মাদু (৪৮), বাইন্যাঘোনা এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মো. কাদের (৩৮), বাজার পাড়া এলাকার আবদুল মাবুদের ছেলে মো. ছাদেক (২৫) ও সাখাওয়াত হোসেন (৩৪)।

আবেদনে ফাতেমা বেগম আরও উল্লেখ করেন, তিনি লেখা-পড়া না জানা নিরক্ষর ব্যক্তি। কোনমতে দস্তখত করতে জানেন। ঘটনার পর পেকুয়া থানার উপপরিদর্শক (এস আই) মোজাম্মেল হোসাইন তাঁর কাছ থেকে তিনটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন। পরে ওই স্বাক্ষরের উপরে এস আই মোজাম্মেল এজাহার তৈরি করেন। যেখানে ঘটনায় জড়িত চার আসামি বাদ পড়েছেন।

এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পেকুয়া থানার উপপরিদর্শক (এস আই) মোজাম্মেল হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মামলার বাদী সজ্ঞানে থানায় উপস্থিত হয়ে এজাহার দিয়েছেন এবং সেই এজাহার তদন্ত করে পুলিশ মামলা রুজু করেছে। আমার ধারণা এখন যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা ৩য় পক্ষের ইন্ধনেই হচ্ছে।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরহাদ আলী বলেন, ‘বাদী যখন আদালতে গেছেন তখন আদালত যেভাবে নির্দেশনা দিবেন সেভাবেই কাজ করবে পুলিশ।’ এজাহার তৈরিতে পুলিশে বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বাদী সশরীরে থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন। পুলিশ সেই এজাহারকেই মামলা রুজু করেছে।
গত রবিবার রাতে পেকুয়ার মগনামায় লুডু খেলাকে কেন্দ্র করে দিনমজুর আব্দুল মালেক (৪৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরের দিন সোমবার ৮ জনকে আসামী করে পেকুয়া থানায় হত্যা মামলা রুজু হয়। এর আগে সোমবার ভোরে মগনামা বাজার পাড়া এলাকা থেকে পুলিশ প্রধান আসামী নুরুল আমিনসহ দুইজনকে আটক করে। ওইদিন গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর