মুকুল কান্তি দাশ,চকরিয়া:
বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি কৃষক-শ্রমিক ও সাধারণ মেহনতি মানুষদের নিয়ে। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করবো উনার আদর্শ মানবো না সেটা আওয়ামীলীগের রাজনীতি হতে পারে না। আমরা গুটিকয়েক নেতা বড় বড় পদ-পদবী নিয়ে, নিজের আত্মীয়-পরিজন ও কিছু চামছা বাহিনী নিয়ে আওয়ামীলীগ করবো এর নাম বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগ না। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি মানে একজন সাধারণ মানুষকে বুকে আলিঙ্গন করে আওয়ামীলীগের পতাকা তলে নিয়ে আসা। আওয়ামীলীগকে কারো বাপ-দাদার সম্পত্তি বানানো যাবেনা।
শনিবার (১০সেপ্টেম্বর) চকরিয়া সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদের হুইপ ও আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এসব কথা বলেন।
চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব জাফর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন- আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, আজিজুর রহমান, যুগ্ন-সম্পাদক অ্যাড.রনজিত দাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান, মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মকছুদুল হক ছুট্টু, পেকুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শহিদুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের নব-নির্বাচিত সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কাউছার উদ্দিন কছিরসহ আওয়ামীলীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বপন আরও বলেন, ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তখন দেশের অবস্থা করুণ ছিলো। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে গেছে। উনার সময় দেশ সর্বোচ্চ ৯.৬৩ শতাংশ পর্যন্ত জিডিপি অর্জন করেছিলো। বঙ্গবন্ধুকে স্ব-পরিবারে হত্যার পর সে অগ্রযাত্রা থেমে যায়। পরে ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর সেই জিডিপি আবারও ৯ শতাংশের উপরে উন্নিত করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, উনার সন্তান সজিব ও পুতুল সারাদেশে নৌকার ভোট বাড়ানোর জন্য নিরলশভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু কিছু কিছু নেতা সেই অর্জনকে অ¤øান করে যাচ্ছে। নিজেদের পছন্দের লোকজনকে দিয়ে আলাদা বলয় সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। এসব বাদ দিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে নৌকার ভোট বাড়ানোর জন্য কাজ করতে হবে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৯ বছর চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্টিত হয়।
এই সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী, মেযর আলমগীর চৌধুরীসহ একটি পক্ষ এই সম্মেলন বর্জন করেন। গতকাল শুক্রবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাফর আলমের বিরুদ্ধে কাউন্সিলর তালিকা তৈরীতে নানা অভিযোগ আনেন। তিনি কাউন্সিলর তালিকা সংশোধন করে সম্মেলনের তারিখ পিছানোর জন্য কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতাদের কাছে আবেদন করেন।
শুক্রবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাফর আলম সম্মেলনে নিজের লোকদের জয়ী করার জন্য বিভিন্ন ইউনিয়ননের সভাপতি-সম্পাদককে অস্ত্রের মুখে জিম্মী করে সংগঠনের খালি প্যাডে স্বাক্ষর নেন। পরে ওই প্যাডে নিজের পছন্দের লোকদের কাউন্সিলর করেন।
চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের দ্বিতীয় অধিবেশন কাউন্সিল অনুষ্টিত হয়। এই কাউন্সিলে বিনা প্রতিদ্ব›দ্ধীতায় আবারও সভাপতি নির্বাচিত হন জাফর আলম ও প্রত্যক্ষ ভোটে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আবু মুছা।###