বিডি প্রতিবেদক পেকুয়া :
কক্সবাজার পেকুয়া উপজেলার চাঞ্চল্যকর শিক্ষক ফরহাদ হত্যা মামলায় এক জনকে মৃত্যুদন্ড এবং অপর একজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। একইসঙ্গে কারাদন্ড প্রাপ্তদের ১৫ লক্ষ টাকা অর্থদন্ডও দেওয়া হয়েছে।
আসামিদের অনুপস্থিতিতে আজ বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কক্সবাজারের বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত এর জজ আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের আবদুল হামিদ সিকদার পাড়ার মৃত মৌলভী নুর আহমদের ছেলে ছালেহ জঙ্গি ছোটন এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আসমাউল হুসনা লিপি তার স্ত্রী।
কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারী কৌঁসুলি মোজাফ্ফর আহমদ হেলালী স্বামী স্ত্রীর সাজাপ্রাপ্তের তথ্য নিশ্চিত করেন।
তথ্যসূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ৬ মে রাত ৯টার দিকে গুলি করে কুপিয়ে হত্যা করা হয় পেকুয়ার কলেজ শিক্ষক ফরহাদ উদ্দিনকে। তাঁর বাড়ি কক্সবাজারের পেকুয়ার সদর ইউনিয়নের আব্দুল হামিদ সিকদারপাড়ায়। তিনি চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি কলেজের গণিত শিক্ষক ছিলেন। ফরহাদের বাবা মোহাম্মদ ইউনুছ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।
মামলার কাগজপত্র থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৬ মে রাত নয়টার দিকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় কলেজ শিক্ষক এস এম ফরহাদ উদ্দিনকে। ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাফিসা নূর। ঘটনার পর ৮ মে তাঁর বাবা মোহাম্মদ ইউনুছ বাদি হয়ে পেকুয়া থানায় স্থানীয় ছালেহ জঙ্গী ওরফে ছোটন, তাঁর স্ত্রী আসমাউল হোসনা লিপি, ছালেহের ভাই সিরাজুল মোস্তফা, নুরুল আবছার ও তাঁর স্ত্রী শাহেদা বেগম এবং মেয়ে শিরিন জন্নাত আঁখির বিরুদ্ধে মামলা করেন। দীর্ঘ তদন্তের পর পেকুয়া থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শহীদ উল্যাহ ছালেহ জঙ্গী ও তাঁর স্ত্রী আসমাউল হোসনা লিপির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। মামলার বাদি মোহাম্মদ ইউনুছ না-রাজি দেন। পরে কক্সবাজার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত মামলার সব আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন।
মামলার বাদি ও ফরহাদের বাবা মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, ‘আমার ছেলেকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করার সাত বছর পেরিয়ে গেছে। আজ পর্যন্ত একজন আসামিও গ্রেপ্তার হননি। সব আসামি চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করছে। বাড়িতে এসে আরও হত্যাকাণ্ড ঘটাবে বলে আমাদের প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। অবশেষে আজ (বৃহস্পতিবার) বিজ্ঞ আদালত প্রধান খুনি ছালেহ জঙ্গির মৃত্যুদন্ড এবং তার স্ত্রী যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেছেন। অনাদায়ে ১৫ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালতের রায়ের প্রতি আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি।
প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাদি আরো বলেন, মামলা শেষ হয়েছে অথচ আসামি এখনো গ্রেফতার হয়নি। যার জন্য তারা সব সময় আতংকে থাকেন। দ্রুত তাদেরকে গ্রেফতার দাবী করেছেন তিঁনি।