ফরিদুল আলম দেওয়ান :
খড় খুঁটোর এক বাসা বাঁধলাম বাবুই পাখির মত,
এই হৃদয়ের ভালোবাসা দিলেম আছে যতো, একটা ময়না পাখি সেই বাসায়—
পুষেছিলাম কত আশায়,
তারে চোখে চোখে রাখি,
উইড়া যেন না যায় আমার
পোষা ময়না পাখি।
কিন্তু না। সত্যিই পোষা পাখি পোষ মানেনি। উড়ে গেছে খাঁছা ছেড়ে। শুন্য খাঁছাটিও আর রইল না। জীবনের শেষ যাত্রায় চিতার অনলে পুড়ে ছারখার হয়ে গেল লালিত সব স্বপ্ন।
যার জন্যে এতো সব উপমা তিনি বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী মহেশখালী উপজেলা সংসদ এর সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, তরঙ্গ সংগীত নিকেতনের নিয়মিত দোতারা বাদক ও মহেশখালী শিল্পকলা একাডেমীর সদস্য বাবু নিরব দে (৫৫)। গতকাল ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন আজীবন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্রহ্মচারী এই গুণী দোতারা শিল্পী। উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের কেরুনতলী গ্রামে তার পৈতৃক নিবাস হলেও সংস্কৃতি চর্চার সুবিধার্থে তিনি উপজেলা সদরেই বসবাস করতেন। তিনি অতি শান্ত শিষ্ট নম্র ভদ্র মিষ্টি হাসির স্বভাব সুলভ আচরণের সাংস্কৃতি পাগল গুণী দোতারা শিল্পী ছিলেন।
নিরব দে’র কৈশোর থেকে অমীয় ঝোক ছিল বাদ্য যন্ত্র দোতারার প্রতি। দোতারার সেই অন্তর স্পর্শী টোন যেন তাকে পাগল করে দিত। তাইতো কৈশোরে এসে তার সেই অদম্য স্পৃহায় হাতে তুলে নেয় শখের দোতারা। গ্রামের বিভিন্ন অনুষ্ঠান সহ শিল্পীদের সাথে স্কুল কলেজ ও অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দোতারা বাজিয়ে অন্তরে লালন করে আসছিল আদি যুগের বাদ্য যন্ত্র দোতারার ঐতিহ্য। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি তিন সন্তানের জনক ছিলেন। গত সন্ধ্যায় মহেশখালী পৌর এলাকার দক্ষিণ হিন্দু পারায় তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।