বিডি প্রতিবেদক পেকুয়া :
র্যাবের সোর্স পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবী ও ক্রসফায়ারে মারার হুমকির অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের বামুলাপাড়ার জয়নাল ও আনছারের বিরুদ্ধে। তাঁদের হুমকিতে ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এক লবণ ব্যবসায়ী।
বুধবার দুপুর ১২টায় পেকুয়া চৌমুহনীর একটি ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেছেন লবণ ব্যবসায়ী কাশেমের স্ত্রী রোকেয়া বেগম।
জয়নাল আবেদীন বামুলাপাড়া এলাকার রহমত উল্লাহর ছেলে ও আনছার উদ্দিন একই এলাকার আহমদ ছফার ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রোকেয়া বেগম। তিনি বলেন, ‘জয়নাল ও আনছার র্যাবের সোর্স পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চাঁদাবাজি করে আসছে। আমার স্বামী আবুল কাশেম একজন লবণ ব্যবসায়ী। ২০১৯ সালের অক্টোবরের শুরুর দিকে আমার স্বামীর কাছ থেকে জয়নাল পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। সেই দাবী পূরণ না করাতে ওই বছরের ২২ অক্টোবর তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। পরের দিন জানতে পারি আমার স্বামী আবুল কাশেমকে অস্ত্রসহ পেকুয়া থানায় সোপর্দ করেছে র্যাব।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, কারাগার থেকে ফেরার পর সম্প্রতি আবার আমার স্বামীর কাছ থেকে চাঁদা দাবী করছে জয়নাল ও আনছার। এতে ভীত-সন্ত্রস্ত্র হয়ে আমার স্বামী চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ননদের বাসায় চলে যায়। গত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০-২৫ জন সন্ত্রাসী নিয়ে সেখানেও পৌঁছে যায় জয়নাল-আনছার। ঘিরে ফেলে ননদের বসতঘর। ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে আমার স্বামী ও ননদের স্বামী মোজাম্মেল হোসাইনকে মারধর করেন তাঁরা। তখন আমার স্বামীকে র্যাব দিয়ে ক্রসফায়ারের হুমকি দেন জয়নাল। পরে কৌশলে পাশের নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায় আমার স্বামী আবুল কাশেম। এখন তিনি জয়নাল-আনছারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
রোকেয়া বেগম সাংবাদিকদের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, জয়নাল ও আনছার এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও অস্ত্র ব্যবসায়ী। অস্ত্র মামলা, বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা, পুলিশের উপর হামলার মামলাসহ দুই ডজনের অধিক মামলার আসামী তাঁরা। এরকম সন্ত্রাসীরা কিভাবে র্যাবের মতো গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সোর্স হয়?
সংবাদ সম্মেলন শেষে বিভিন্ন অভিযানে র্যাবের সাথে জয়নাল ও আনছারের ছবি তুলে ধরে রোকেয়া বেগম বলেন, র্যাবের সাথে এই দুই সন্ত্রাসী ছবি তুলে নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে। এসব ছবি দেখিয়ে তাঁরা র্যাবের ঘনিষ্ঠ সোর্স পরিচয় দেয় এলাকায়। এই পরিচয়ে তাঁরা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে চাঁদা দাবী করছে প্রতিনিয়ত।
অভিযোগ অস্বীকার করে জয়নাল আবেদীন বলেন, এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমি নয়, তাঁরাই আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আর আমি কোনো র্যাবের সোর্স নই।
এব্যাপারে জানতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে র্যাব-১৫ এর অধিনায়ক খাইরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এখনই এই বিষয়ে উর্ধত্বন কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে।