বিডি প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগ পালাবার দল নয়, কারও হুমকী-ধমকীতে ভয় পাওয়ার দল নয়; উল্লেখ করে দলটির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ” বিএনপি একটি জনবিচ্ছিন্ন দল, কারণ দলটির বিগত দিনের সকল কার্যকলাপ মানুষের হৃদয় থেকে মুছে যায়নি, হৃদয় থেকে মুছে যাবার নয়। বিএনপির শব্দবোমা দিয়ে মানুষকে আতংকিত করা যাবে, মানুষ যে শান্তিতে রয়েছে; সেই মানুষকে অশান্তিতে টেলে দেওয়া যাবে আর কিছু করা সম্ভব নয়। ”
শুক্রবার রাত ৮ টায় কক্সবাজার শহরের অভিজাত এক হোটেলে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বুধবার চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশে দলটির মহাসচিচ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ” সরকারকে পদত্যাগ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠান করতে হবে। অন্যথায় আওয়ামী লীগ সরকার পালাবার পথ খুঁজে পাবে না। ”
এ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ” রাজনীতিতে একটি সংস্কৃতি রয়েছে। এই শিষ্টাচারের বাইরে আসলে কারও কথা বলা উচিত না। বিএনপি যে ভাষায় কথা বলছে, আওয়ামী লীগ একটি দায়িত্বশীল দল হিসেবে সেই ভাষায় কথা বলা উচিত না। ”
বিএনপিকে একটি জনবিচ্ছিন্ন দল হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ পালাবার দল না। এই দল কারও হুমকী ধমকীতে ভয় পাওয়ার দল না।
” তাদের (বিএনপি) যদি গণআন্দোলন বা গণবিস্ফোরণ ঘটানোর মত সুযোগ থাকতো তাহলে অনেক আগেই ঘটাতে পারতেন। কারণ তারা (বিএনপি) জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন একটি রাজনৈতিক দল। এই দলটির বিগত দিনের সকল কার্যকলাপ মানুষের হৃদয় থেকে মুছে যায়নি, হৃদয় থেকে মুছে যাবার নয়। কাজেই এই দলটি একটি জনবিচ্ছিন্ন দল। ”
বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাসমাবেশে ১০ লক্ষাধিক জনসমাগমের ঘোষণা দিয়েও হাজার পেরিয়ে লাখের কাছাকাছিও মানুষ নিয়ে সমাবেশই জনবিচ্ছিন্নতার বহির্প্রকাশ বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর এ সদস্য।
এদিকে আগামী ১৭ অক্টোবর অনুষ্টিতব্য জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোস্তাক আহমেদ চৌধুরীকে বিজয়ী করার জন্য জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহবান জানান জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেন, ” সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী আওয়ামী লীগ তথা শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী। কাজেই আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে যদি দলের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত কোন জনপ্রতিনিধি বা নেতা, এমনকি যে কোন সহযোগী সংগঠনের কোন পর্যায়ের কোন নেতা কাজ করেন; তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ”
জেলা আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ৮ টি উপজেলা, ৪ টি পৌরসভা এবং ৭১ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মেয়ররা অংশগ্রহন করেন।
অন্যদিকে শুক্রবার বিকালে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরী ও ইন্সটিটিউটের শহীদ দৌলত ময়দানে জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে আয়োজিত ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ বিরোধী সমাবেশে’ও প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানের সঞ্চালনায় অনুষ্টিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তাফা, ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় সংসদের সাবেক সহ সভাপতি প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া, ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক ও সাইমুম সরওয়ার কমল, কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশে ৫ সহস্রাধিক ছাত্রলীগের নেতাকর্মি মিছিল সহকারে অংশগ্রহণ করেন।