বিডি প্রতিবেদক :
কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হয়ে পর্যটন নগরী কক্সবাজার যাওয়া আসার পথে চকরিয়ার খুটাখালীতে সড়কের দু’পাশে চোখে পড়ে মেদাকচ্ছপিয়া ন্যাশনাল পার্ক বা জাতীয় উদ্যান। দেশের প্রথম এবং সর্ববৃহৎ এই উদ্যানের ৩৯৬ হেক্টর বনভূমিজুড়ে খাতা কলমে দাঁড়িয়ে আছে অন্তত ১০ হাজার ৩৩৭টি শতবর্ষী মাদার ট্রি (মা গর্জনগাছ)। পাশাপাশি অন্যান্য প্রজাতির গাছও রয়েছে এখানে। তবে বর্তমানে সাড়ে ৫ হাজার মাদার গর্জন গাছ নেই।
বনকর্মীদের যোগসাজশে মাদার গর্জন গাছ পাচারের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মূল্যবান গাছ কেটে পাচারের পাশাপাশি জমি দখলের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে আগুন দিয়ে বনের গাছপালা ও ঝোপঝাড় পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে মাদার গর্জন বাগানটি। আর এসবের পেছনের নায়ক যুবদল নেতা মোহাম্মদ ফারুক (৩০)।
তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধ্যানে নেমে বিস্তর তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৩১ মামলা। যেখানে একটি ডাবল মার্ডারসহ চার মামলায় গ্রেপ্তারী পরোয়ানা রয়েছে। ১৭ মামলায় বন দখল ও ভূমিদস্যুতার। এসব মামলার আসামী হয়েও দাপিয়ে বেড়ানো এ বন খেকোকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে র্যাব।
বুধবার দুপুরে বনের রাজা খ্যাত ফারুককে চকরিয়ার খুটাখালীর সেগুন বাগিচা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর সিপিএসসি কমান্ডার এএসপি জামিলুল হক।
গ্রেপ্তার ফারুক চকরিয়ার খুটাখালী ইউনিয়নের সেগুন বাগিচা এলাকার নুরুল আলমের ছেলে। তিনি যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
র্যাব-১৫ এর সিপিএসসি কমান্ডার এএসপি জামিলুল হক জানান, এলাকার সাধারন মানুষের অভিযোগ তদন্তে গিয়ে বেরিয়ে আসে ৩১ মামলার তথ্য। তার বিরুদ্ধে ডাবল মার্ডার সহ চার মামলায় ওয়ারেন্ট ছিল। বুধবার ভোরে তাকে গ্রেপ্তারের পর বন দখল ও সাধারন মানুষের ভূমি দখলের বিস্তর তথ্য মিলেছে। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
দিকে, তার গ্রেপ্তারের খবরে এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করেছে সাধারন মানুষ। কারণ তার নির্যাতনে পাহাড়ের পাশ্ববর্তী এলাকায় বসবাসরত মানুষ অতিষ্ট ছিল। দখলের উদ্দেশ্যেই ফারুকের চক্র পরিকল্পিতভাবে বনে আগুন দিয়ে থাকে। আগুনে গাছপালা পুড়ে সাফ হয়ে গেলে সুবিধাজনক সময়ে সেখানে ঘর নির্মাণ করে বনভূমি দখলে নেওয়া হয়। পরে তা স্ট্যাম্প মূলে দখল স্বত্ব বিক্রি করে চক্রটি। ৩১ মামলার আসামী হয়েও প্রকাশ্যে এসব অপকর্ম করছিল ফারুক।