বিডি প্রতিবেদক :
কক্সবাজারে পাহাড় কেটে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র ধংসের অপরাধে সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক জেলা পরিষদ সদস্য সহ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীতে দেড় কোটি ঘনফুট পাহাড় কাটার ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদের সদস্য মাহমুদুল করিম মাদুসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এ মামলায় আলোচিত শীর্ষ পাহাড়খেকো ও ১৩ মামলার আসামি ওবায়দুল করিমকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলায় অন্যান্য আসামিরা হলেন জেলা পরিষদের সদস্য মাহমুদুল করিম মাদুর ভাই সাবেক ফুটবলার মামুন,পিএমখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল কাদের,ছনখোলার সুলতান আহমদ মেম্বারের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম, তোতকখালীর আমিন চেয়ারম্যানের ছেলে জোসেফ, তোতকখালীর সাবেক ইউপি সদস্য তাজমহল, হানিফ সিকদারের ছেলে কায়েস সিকদার, দক্ষিণ খুনিয়াপালংয়ের নুরুল কবির বাবুল, ছনখোলার ঘোনারপাড়ার লুৎফর রহমান, সোনা আলী প্রমূখ।
সবাই স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী এবং তাদের বিরুদ্ধে কয়েকবছর ধরে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির অভিযোগ রয়েছে বলে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের তাজমহলের ঘোনা, ঘোনারপাড়া, ছনখোলা ও পশ্চিম পাড়া এলাকায় আনুমানিক ১০ একর আয়তনের সরকারি একাধিক পাহাড় কেটে ডাম্পার ট্রাক ভর্তি করে দেড় কোটি ঘনফুট বালু ও মাটি বিক্রির অভিযোগ আনা হয়।
এ ছাড়া পাহাড় কাটার ঘটনা নিয়ে পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপল, কক্সবাজার সচেতন নাগরিক আন্দোলন ও পরিবেশবাদীরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে দীর্ঘ দিন থেকে। কক্সবাজার সচেতন নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব মোরশেদ আলম বলেন, প্রায় তিন মাস আগে পিএমখালীতে পাহাড় কাটার ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছিল। কিন্তু মামলায় চিহ্নিত কয়েকজন পাহাড়খেকোকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপল এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, ‘পাহাড় কাটার মতো গুরুতর অপরাধের মামলাগুলোতে আসামি শাস্তি না পাওয়ায় পাহাড় কাটা বন্ধ হচ্ছে না। এক্ষেত্রে মামলায় আসামি, স্বাক্ষী, অপরাধের ধরণ, ক্ষয়ক্ষতি, আলামত, আসামির সংশ্লিষ্টতা, ঘটনার পারিপার্শ্বিক অবস্থা, অভিযোগপত্র ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অনেক সময় মামলার দূর্বল এজাহার ও অভিযোগপত্রের কারণে প্রকৃত অপরাধী পার পেয়ে যায়।’
মামলার বাদী ও পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মামলাটি পরিবেশ অধিদপ্তর তদন্ত করবে। তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’#