আবু নাছের টিপু :
উত্তরার দিয়াবাড়িস্থ ডিপোতে সারি সারি ট্রেন। পতাকার রঙে সজ্জিত। প্রতিটি সেটে ৬টি করে বগি। ট্রেনের দুপ্রান্তে ইন্জিন। তাই, নো-ঘুরাঘুরি। এরই মাঝে এসে গেছে ১৯ সেট। বাকি ৫ সেট সহসা পৌছবে। প্রস্তুত এশিয়ার বৃহত্তম মেট্রো-ওয়ার্কশপ। প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, অপারেশন সেন্টার, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনসহ ৫২টি স্থাপনা।
দৃষ্টিহীনদের জন্য স্টেশনজুডে হলুদ পথরেখা। বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্যও নানান আয়োজন। লিফটের সুইচটা হাতের নাগালে। হুইল চেয়ারে ট্রেনে উঠার ব্যবস্থা। ভেতরে আছে নির্ধারিত স্থান। স্টেশনে আছে বিশেষ টয়লেট ব্যবস্থা। ট্রেনে উঠতে-নামতে মমতার হাত বাড়াতে প্রস্তুত প্রশিক্ষিত মেট্রো-কর্মি।
গণপরিবহনে নারীদের ভোগান্তি! সে দিকেও নজর আছে। আলাদা করে একটা বগি থাকছে শুধুমাত্র নারীদের জন্য। সকল ট্রেনে, সকল দিনে। তাই বলে অন্য বগিতে চড়তে কোনো বারণ নেই।
মাত্র ৪০ মিনিটে ১৭টি স্টেশন পেরিয়ে ট্রেন পৌঁছবে উত্তরা থেকে মতিঝিল। আপাতত উত্তরা হতে আগারগাঁও। সাড়ে তিন মিনিট পর পর ট্রেন। ঘন্টায় ৬০ হাজার যাত্রী এমুখো-ওমুখো পারাপার। যানজটহীন, স্বস্তিকর, সময়সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব ভ্রমণ।
উত্তরা কিংবা আগারগাঁও নেমে যাত্রীরা কিভাবে গন্তব্যে যাবে? এ প্রশ্নেরও উত্তর মিলেছে। স্টেশন থেকে গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রস্তুত থাকছে বিআরটিসির বাস।
যাত্রীদের ভ্রমণের জন্য থাকছে দীর্ঘমেয়াদি পাস। নিয়মিত টিকেটতো থাকছেই। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে নিজের টিকেট নিজে কাটার ব্যবস্থা। স্টেশনের তৃতীয় তলায় ফ্ল্যাটফর্ম। উঠার জন্য আছে সিঁড়ি, লিফট, চলন্ত সিঁড়ি। আপনার সুবিধার জন্য কত আয়োজন!
আকস্মিক অসুস্থ হলে ডেডিকেটেড ফার্স্ট এইড রুম। নিয়ম না মানা যাত্রীদের বাগে আনতে কাউন্সেলিং রুম। আরো কঠিন করে বলতে হলে ডিটেনশন রুম। তবে তার আগে নিয়মকানুন শেখাতে, দেখাতে খোলা হয়েছে তথ্য ও প্রদর্শনী কেন্দ্র।
ধোঁয়া উড়বে না। শব্দদূষণ হবে না। চলবে বিদ্যুৎশক্তিতে। চলারপথে স্থাপন করা হয়েছে শব্দ নিরোধক বা সাউন্ড ব্যারিয়ার।
এসব ঢাকা মেট্রোরেলের কথকথা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকারের সাফল্যের মুকুটে যোগ হতে যাচ্ছে আরেকটি সোনালী পালক। মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর নিবিড় তদারকিতে বাধার-বিন্দ্যাচল পেরিয়ে হুইসেল বাজানোর অপেক্ষায় গৌরবের আরেক মাইলফলক। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। বাণিজ্যিক চলাচলের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে দেশের প্রথম মেট্রোরেল রুট-৬।