বিডি প্রতিবেদক :
কক্সবাজার পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ইমন হাসান মওলা ( ২০) কে ছুরিকাঘাতে হত্যার দায়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া এতে অজ্ঞাতনামা আরো ৭/৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে রবিবার ভোরে মামলার প্রধান আসামী আবদুল খান ওরফে আবদুল্লাহ খানকে টেকনাফ থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।সেই সাথে নিহতের মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করা হয়।
শনিবার মধ্যরাতে নিহতের বাবা মো. হাসান বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। যার নম্বর ৫৫/৪৮১।
আসামীরা হলেন, খাইরুল আহমদের ছেলে আবদুল খান প্রকাশ আবদুল্লাহ খাঁন (২৭) ও তার সহোদর আবদুল্লাহ আহাদ ছোটন (২৪), মৃত আব্দুস সালামের ছেলে ছৈয়দ আকবর (৩৩)ও তার সহোদর রমজান আলী (৩০), মুন্না প্রকাশ ালা মুন্না (২৮), মো. জাফরের ছেলে মো. সানি (২৭), মো. জুয়েল প্রকাশ ফরহাদ (২৫)। এরা সকলেই পৌরসভার ৪ নং ওয়র্ডের পেষকার পাড়ার বাসিন্দা।
মামলার এজাহারে মতে, মৃত ভিকটিম ইমন হাসান মাওলা (২০) কক্সবাজার সরকারি কলেজে ১ম বর্ষের ছাত্র। বিগত কয়েকমাস পূর্বে ভিকটিমের সাথে প্রধান আসামীর ঝগড়া বিবাদ হয়। যা সামাজিকভাবে নিস্পত্তিও হয়েছে। কিন্তু হত্যার মূলহোতা আবদুল্লাহ খান নিজের মনের মধ্যে ভিকটিমের জন্য আক্রোশ মনোভাব পোষণ করত। একারনে ইমনকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি-ভীতিও দেখায় প্রধান অভিযুক্ত আবদুল্লাহ। এক পর্যায়ে ২১ জুলাই রাত সাড়ে ৯ টায় সময় নিহত ইমন মোটর সাইকেল নিয়ে বাসায় ফেরার সময় প্রধান অভিযুক্তের বাড়ির পাশের ছিকু বরফমিলে সামনে পৌছলে মামলায় অভিযুক্ত আসামী ও তাহাদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন আসামীরা ধারালো রাম দা, কিরিচ, ছোরা, চায়নিজ ক্ষুর, লোহার রড, হাতুড়ি, লাঠি দিয়ে ভিকটিমকে মারাত্বকভাবে আঘাত করে। ওইসময় ভিকটিমের শোর চিৎকারে আশেপাশের লেঅকজন এগিয়ে আসলে ভিকটিমের মোটরসাইকেল নিয়ে আসামীরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় জনতায় সহতায় ভিকটিমকে উদ্ধার করে প্রথমে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে ডাক্তারের পরামর্শ মত তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইমন মারা যায়।
এবিষয়ে মামলার বাদী নিহতের বাবা হাসান বলেন, আমার ছেলে মৃত্যুর পূর্বে তাকে হত্যার সাথে জড়িতদের নাম ঠিকানা বলে গেছে। সে যাদের নাম ঠিকানা বলেছেন তাদেরকেই মামলার আসামী করা হয়েছে।
এদিকে মামলার হওয়ার কয়েকঘন্টা পরেই প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এনিয়ে র্যাব ১৫ এর অফিসে রবিবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় একটি সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব ১৫।
ধৃত আদুল্লাহ খানের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব ১৫ এর সহকারি পরিচালক নিত্য নন্দ বলেছেন, নিহতের ইমনের বাবা হাসানের শহরের বাজারঘটায় একটি পলিথিন, পাপস ও কার্পেটের দোকান রয়েছে। সেখানে একটি পাপস কিনতে গিলেই আবদুল্লাহ খান ও ইমনের মধ্যে বিবাদের শুরু। এরই জেরে ইমন ও তার বন্ধুরা মিলে আবদুল্লাহ ও তার সহযোগিদের ২০২১ সালে মারধর করে। ওই ঘটনায় আবদুল্লাহ পরিবার বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ৪১/৬৮১। তবে মামলাটি সামাজিকভাবে নিস্পত্তি হলেও এতে মনক্ষুন্ন ছিল আবদুল্লাহ খাঁন। সে প্রতিশোধ নিতে সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। সে সুযোগ ২১ জুলাই রাতে আবদুল্লাহ পায়।
তিনি আরো বলেন, ধৃতকে ইমন হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা পুলিশ গ্রহন করবে।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি ( তদন্ত ) সেলিম উদ্দিন বলেন, নিহতের বাবার দেয়া এজাহারটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামীকে সোমবার আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। এছাড়া অন্যান্যদের গ্রেফতারেও অভিযান চলছে।