বিডি প্রতিবেদক :
বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবেনা’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর সফল বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে আজ বুধবার (২২ মার্চ) সারাদেশে ২,৩৫,৪২২ টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে ২ শতাংশ করে জমি ও ঘর প্রদান করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় কক্সবাজারে চতুর্থ দফায় আজ ১০৭১ পরিবারকে দেয়া হবে দলিল ও ঘর। সারাদেশের সাথে কক্সবাজারেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উক্ত ঘর উদ্বোধন করবেন।
৮ উপজেলার নিবার্হী কর্মকর্তাগণ স্ব স্ব উপজেলায় উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন এবং এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন জেলা প্রশাসন। চকরিয়াকে শতভাগ গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করার জন্য সকল প্রস্তুতি ও গ্রহন করেছে জেলা প্রশাসন। আজ ২২ মার্চ সকাল ১০টায় চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত গৃহহীনমুক্ত উপজেলা ঘোষণা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান।
গত ২০মার্চ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব মোঃ জাহিদ ইকবালের সঞ্চালনায় এ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে জেলা প্রশাসক বলেন কক্সবাজারে আমরা ৪৮৫৭টি পরিবারকে গৃহহীন হিসাবে তালিকাভুক্তি করেছি এরমধ্যে প্রথম, ২য় ও তয় দফায় ১৪২৩টি ঘর দেয়া হয়। ৩য় পর্যায়ে ১৪৬৩টির মধ্যে উদ্বোাধন করা হয় ১২৫২টি। অবশিষ্ট ছিল ২১১টি। চতুর্থ ধাপে বরাদ্দ দেয়া হয় ১৬১০টি। এরমধ্যে প্রস্তুত হয়েছে ৮৬০টি। তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় অবশিষ্ট থাকা ১০৭১টি গৃহ আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশের সাথে কক্সবাজারেও উদ্ধোধন করবেন। চকরিয়া উপজেলায় গৃহহীন ছিল ৮৭৪টি পরিবার। ৩ দফায় ৬৮০টি পরিবারকে আগে ঘর দেয়া হয়। আজ ১৯২টি হস্তান্তর হওয়ার পর চকরিয়া হবে জেলার প্রথম গৃহহীনমুক্ত উপজেলা। এছাড়া চলতি বছরের শেষ নাগাদ পুরো কক্সবাজার গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করার লক্ষ্যে কাজ করছেন প্রশাসন এমনটি দাবি করেন জেলা প্রশাসক। উক্ত সভায় প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক বিভীষণ কান্তি দাশ,অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আবু সুফিয়ান. কক্সবাজার সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোঃ জাকারিয়া, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম।
এদিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব জাহিদ ইকবাল বলেন-ইতোমধ্যে ১০৭১টি বাড়ি ও তাদের দলিল হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিভিন্ন উপজেলায় নির্মিত বাড়ি পরির্দশন করে কাজের সন্তোষ প্রকাশ করেন। যারা চতুর্থ দফায় বাদ পড়বে তাদের পর্যায়ক্রমে গৃহ নির্মান শেষে হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া কক্সবাজার জেলাকে আগামি ডিসেম্বরের মধ্যে শতভাগ গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করার জন্য জেলা প্রশাসন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলেও তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর মুজিববর্ষের উপহার হিসাবে এ বাড়ি প্রদান করা হচ্ছে।
মোঃ জাহিদ ইকবাল জানান, ২মাস আগে থেকে বাড়ি নির্মানের কার্যক্রম শুরু হয়। ৮ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের দ্রুত কাজ শেষ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য লিখিত নির্দেশনা দেওয়া হয়। বাড়ি নির্মান কাজের অগ্রগতি দেখতে উক্ত কর্মকর্তা ইতোমধ্যে সদর ও টেকনাফ উপজেলায় র্নিমানাধীন বাড়ি গুলো পরিদর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রীর অত্যান্ত অগ্রাধিকার প্রকল্প যেহেতু অসহায়দের সহায় হবে বাড়িসমুহ। প্রতিটি বাড়ির জন্য ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন কমিটির সার্বিক তত্বাবধানে ১০৭১টি বাড়ি নির্মান করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখাসুত্রে জানা যায়, প্রতিটি বাড়ির নির্মানে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা । চতুর্থ ধাপে বরাদ্দ দেয়া উপজেলা ভিত্তিক বাড়ির সংখ্যা হলো কক্সবাজার সদরে ১৬৫টি। কাজের অগ্রগতি হয়েছে ১০০ শতাংশ। চকরিয়ায় নির্মিত হয়েছে ১৯২টি বাড়ি। পেকুয়ায় ২৭ টি বাড়ি। রামুতে ১৩২টি বাড়ি। মহেশখালীতে ১৩৫টি। উখিয়ায় ১০০টি। টেকনাফে ৮৭টি। কুতুবদিয়ায় ২২টি ।
মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ি ২ শতাংশ পরিমান জমির মালিক, জমি পাওয়া সাপেক্ষে হিজড়া, বেদে, বাউল ,আদিবাসী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি, গৃহহীন অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, নদী ভ্ঙ্গন, প্রাকৃতিক দূর্যোগে গৃহহীন, বিধবা,তালাকপ্রাপ্তা, প্রতিবন্ধী এবং পরিবারে উর্পাক্ষম লোক নেই এমন লোককে উক্ত বাড়ি দেওয়া হচ্ছে যা তালিকায় প্রতীয়মান রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে অনেক অসহায় পরিবার মাথাগুজার ঠাঁই পাবে। পূরণ হবে বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন।