বিডি প্রতিবেদক :
কক্সবাজারের টেকনাফের পাহাড়ি এলাকার ক্ষেতে কাজ করার সময় অপহৃত মোহাম্মদ ছৈয়দকে তিন লাখ টাকা ‘মুক্তিপণের বিনিময়ে’ চারদিন পর ছেড়ে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা।
তবে মোহাম্মদ ছৈয়দকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনাস্থলের আশপাশের এলাকা থেকে একই সময়ে রহমত উল্লাহ নামের আরও একজনকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে।
অপহৃত রহমত উল্লাহ (৩৮) টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া ন্যাচারাল পার্ক এলাকার বাসিন্দা হাবিবুর রহমানের ছেলে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী।
গত সোমবার সকাল ১০টার দিকে টেকনাফ উপজেলা হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোরা জুম্মাপাড়া পাহাড়ি এলাকায় খেতে কাজ করার সময় অপহরণের শিকার হন রোহিঙ্গা মোহাম্মদ ছৈয়দ। ক্ষেতে কাজ করার সময় মুখোশ পরা একদল দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তার আর কোন খোঁজ মেলেনি।
মোহাম্মদ ছৈয়দ হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা জুম্মাপাড়ার বাসিন্দা ও তিনি বাংলাদেশে আসা পুরাতন রোহিঙ্গাদের একজন।
ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ইউনিয়নের দমদমিয়া ন্যাচারাল পার্ক এলাকায় দূর্বৃত্তরা মোহাম্মদ ছৈয়দকে ছেড়ে দেয়। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে বাড়ী নিয়ে যায়।
ভূক্তভোগী ব্যক্তির স্ত্রী হাসিনা বেগমের বরাতে তিনি বলেন, ” সোমবার বিকেলে দিকে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা অপহৃত ব্যক্তির স্ত্রীর মুঠোফোনে কল দিয়ে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। অন্যথায় মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। পরে অপহৃত রোহিঙ্গার পরিবারটি বিষয়টি গোপন রেখে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে ছাড়িয়ে এনেছে। ”
মোহাম্মদ আলম জানান, ” রাতে মোহাম্মদ ছৈয়দকে ছেড়ে দেওয়া ঘটনাস্থলের সামান্য দূরের এলাকায় একই সময়ে দুর্বৃত্তরা রহমত উল্লাহ নামের স্থানীয় আরেক যুবককে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে গহীন পাহাড়ের দিকে নিয়ে যান। রাত ১১টা পর্যন্ত রহমত উল্লাহর কোন খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি। এমনকি এখন পর্যন্ত কোন ধরনের মুক্তিপণ দাবির খবর পাওয়া যায়নি। ”
তবে রহমত উল্লাহ’র অপহরণের প্রকৃত কারণ নিশ্চিত নন বলে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী।
এ ব্যাপারে টেকনাফ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ নাসির উদ্দিন মজুমদার বলেন, মোহাম্মদ ছৈয়দ অপহরণ হওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকে তাকে উদ্ধারে পুলিশ অভিযান শুরু করে। এতে পুলিশের একাধিক দলের পাশাপাশি র্যাব সদস্যরা অভিযান চালায়। এ নিয়ে চাপের মুখে পড়ে দূর্বৃত্তরা অপহৃত ব্যক্তিকে ছেড়ে দিয়েছে।
তবে ভূক্তভোগীর স্বজনদের মুক্তিপণ দেওয়ার বিষয়টি অবহিত নন জানিয়ে তিনি বলেন, ” পুলিশের আন্তরিক প্রচেষ্টার পরও ভূক্তভোগী ব্যক্তির স্বজনরা পুলিশকে তথ্য দিয়ে যথাযথ সহায়তা করেননি। মুক্তিপণের বিষয় নিয়ে পরিবারটি পুলিশকে কোন কিছু অবহিত করেননি। ”
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে টেকনাফের দমদমিয়া ন্যাচারপার্ক এলাকা থেকে রহমত উল্লাহ নামের আরও একজনকে অপহরণের ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোন ধরণের অভিযোগ আসেনি বলে জানান পরিদর্শক নাছির উদ্দিন।