শিরোনাম :
পেকুয়ায় গুলি বর্ষণের ঘটনায় ১৪ জনকে আসামি করে মামলা কোস্ট গার্ড ও র্যাবের অভিযান : শাহপরীর দ্বীপ উপকূল থেকে এক লাখ পিস ইয়াবা সহ ৫ ইয়াবা কারবারি আটক জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ রোহিঙ্গা সংকটের উপর প্রস্তাব গ্রহণ গভীর সাগরে ভাসতে থাকা ২২ মাঝিমাল্লা সহ ফিশিং বোট উদ্ধার পেকুয়ায় লবণমাঠ দখলে নিতে ফাঁকা গুলি ছুটলো র্দূবৃত্তরাঃআহত-১৬ চকরিয়া ডাকাতি মামলার তিন আসামীকে গ্রেফতার করেন পুলিশ গভীর সাগরে বিকল ১২ জেলে সহ ফিশিং ট্রলার উদ্ধার কক্সবাজারে বিশ্ব আবহাওয়া দিবস পালিত রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলার ডুবি : নিখোঁজ হয়ে মৃত উদ্ধার বিজিবি সদস্য চকরিয়ায় অস্ত্র,মাদক ও টমটম চুরি মামলা মিলে ৪ আসামী গ্রেফতার

সাঈদীর গায়েবী জানাজা নিয়ে চকরিয়া পেকুয়ায় সংঘর্ষ : নিহত ১ : পুলিশ সহ আহত ২৮

নিউজ রুম / ৫৯ বার পড়ছে
আপলোড : শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫, ০৬:০০ পূর্বাহ্ন

বিডি প্রতিবেদক :
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়াতে পৃথক সংঘর্ষ,
ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ২২ পুলিশ সহ আহত হয়েছে ২৮ জন।

মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪ টায় চকরিয়ার লামার চিরিংগায় ঘটনার সূত্রপাত হয় বলে জানিয়েছেন চকরিয়া থানার ওসি জাবেদ মাহমুদ।

চকরিয়ার স্থানীয় লোকজন, পুলিশ জানিয়েছে, চকরিয়া সরকারি হাইস্কুল মাঠে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজা করার পূর্ব ঘোষণা দেয়া হয় স্থানীয় জামাতের পক্ষ থেকে। কিন্তু অনুমতি না থাকায় পুলিশ সেখানে জানাজা পড়তে দেয়নি। কিন্তু হঠাৎ করে বিকাল সাড়ে ৪ টায় কয়েক হাজার লোক চকরিয়া পৌরসভার লামার চিরিংগা এলাকায় জড়ো হয়ে জানাজা শুরু করে। এসময় অজ্ঞাত মুখোশধারী অর্ধশত লোক গিয়ে গুলি বর্ষণ শুরু করে। যেখানে জানাজা পন্ড হয়ে গেলে অজ্ঞাত লোকজন গুলি বর্ষণ করতে করতে লাঠি দিয়ে কয়েকজনকে মারধর করে। পুলিশ আসার আগেই এসব লোকজন পালিয়ে যায়। পরে জানাজায় আসা লোকজন ইটপটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় পুলিশের একটি গাড়ি ও চলাচলরত অপর একটি গাড়ি ভাংচুর করা হয়। পুলিশ জানায়, চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়ে এ সময়।

চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক ছৈয়দ ইফতেখারুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত এক ব্যক্তির মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে। একই সঙ্গে গুলিবিদ্ধ সহ ৭ জন আহত চিকিৎসা নিচ্ছে।

নিহত ব্যক্তি মোহাম্মদ ফোরকান (৬০), তিনি চকরিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল ফজলের ছেলে বলে নিশ্চিত করেছেন ডাক্তার ছৈয়দ ইফতেখারুল ইসলাম।

বিষয়টি নিয়ে চকরিয়া থানা ওসি জাবেদ মাহমুদ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিনি নিজে সহ পুলিশের ৬ সদস্য আহত হয়েছেন। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘটিত ঘটনা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে। তবে ২ পক্ষের মধ্যে কোনটা কাদের তা নিশ্চিত নন তিনি।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম জানান, আমাদের পুলিশ খুবই ধৈর্য ধারণ করেছিল। গায়েবী জানাজা শেষে তাদের নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা পুলিশদের উপর তারা হামলা চালায়, চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তার গাড়ি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহ সাত পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার কথা জানান পুলিশ সুপার। পুলিশ সুপার বলেন, আমার পুলিশ কোন গুলি চালায় নি। ফলে ফোরকান উদ্দিন কিভাবে মারা গেছে, তা ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরেই বলা যাবে।
নিহত ফোরখান উদ্দিনের মৃতদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশসহ আহতদের চকরিয়া, খ্রিস্টান মেমোরিয়াল হাসপাতাল সহ বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান বলেন, নিষেধ করা সত্বেও স্থান পরিবর্তন করে গায়েবানা জানাজা পড়ে। পরি মিছিল নিয়ে পৌরশহরের সহাসড়কে পুলিশের উপর হামলা চালায়। ভাংচুর করা হয় পুলিশ ও পাবলিকের গাড়ী। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মৃত্যুর ব্যাপারে ইউএনও বলেন, হয়ত নিজেদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে হতাহত হতে পারে। তা তদন্ত করা হবে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পৌরশহরে ইউএনও জেপি দেওয়ান, চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রাকিব-উর-রাজা’র নেতৃত্বে বিপুল পুলিশ ও আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্য নিরাপত্তা ও সম্ভাব্য হাঙ্গামা দমাতে সড়কে অবস্থান করছেন।

এদিকে পেকুয়ায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজা শেষে পুলিশের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ওসি সহ ১৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার বারবাকিয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আহত পুলিশ সদস্যদের পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

হামলায় আহতরা হলেন, পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দার, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্য, উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ শাহিনুল ইসলাম, অমর চন্দ্র বিশ্বাস, মফিজুল ইসলাম, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. জসিম উদ্দিন, কনস্টেবল আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া, প্রদীপ কুমার দে, মো. সবুর মিয়া, রবি উল্লাহ, ইমরান হোসেন, রামকৃষ্ণ দাশ, তৌহিদুল ইসলাম, রিপন মিয়া, রিয়াজুল ইসলাম। এদের মধ্যে এসআই শাহিনুল ইসলামের হাত ও অমর চন্দ্র বিশ্বাসের পায়ের আঘাত গুরুতর।

পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দার ঘটনার সত্য নিশ্চিত করে জানান, পেকুয়া সদরের একটি মাঠে সাঈদীর গায়েবানা জানাজার প্রস্তুতি নেয়া হলে। ওখানে অনুমতি না থাকায় বাঁধা প্রদান করা হয়। ওখান থেকে লোকজন নিয়ে বারবাকিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাওলানা বদিউল আলম জিহাদির নেতৃত্বে লোকজন বারবাকিয়া বাজারে চলে যায়। ওখানে সাঈদীর গায়েবানা জানাজার নামাজ শুরু করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে পুলিশের একটি টহল টিম বাজারে উপস্থিত ছিল। নামাজ চলাকালিন সময় হঠাৎ করে পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান ওসি। এসময় জানাজায় আগত লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে তিনি সহ ১৫ জন পুলিশ আহত হন।

মোহাম্মদ ওমর হায়দার বলেন, পুলিশ ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর