শিরোনাম :
শরীফ উসমান হাদির সুস্থতা কামনায় কক্সবাজারে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সর্বদলীয় ঐক্যমঞ্চের উদ্যোগে গণ দোয়া মাহফিল উখিয়ায় দুস্থ ও শীতার্তদের মাঝে সেনাবাহিনীর শীতবস্ত্র বিতরণ কক্সবাজার প্রেসক্লাবে মহান বিজয় দিবস উদযাপন সামনের নির্বাচন সুষ্টু না হলে সংকট আরো বাড়বে-সুজন কক্সবাজার প্রেসক্লাবে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপন ওসি প্রদীপের সাজানো মামলা প্রত্যাহার ও সাংবাদিক ফরিদুলের পাসপোর্ট ফেরতের দাবি ড্রাইভার কল্যাণ একতা সমিতির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভা সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে কর্মকর্তারা বদ্ধপরিকর ওসি প্রদীপের আক্রোশের শিকার সাংবাদিক ফরিদুলের ৬ মামলা প্রত্যাহার না হওয়ায় অসন্তোষ

হেলাল ভাই ভুল সময়ের সাক্ষী হয়ে ছিলেন

নিউজ রুম / ১১০ বার পড়ছে
আপলোড : শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:২২ পূর্বাহ্ন

হামিদ উল্লাহ :
সংবাদ এর স্টাফ রিপোর্টার। ছয়মাস যেতেই নতুন পত্রিকা সমকাল এ কাজ করার হাতছানি। ৮ মাসের মাথায় চলে আসি সমকাল এ। ব্যুরো প্রধান হেলাল উদ্দিন চৌধুরী। বায়োডাটা দেখে হেলাল ভাই আমার দিকে তাকিয়ে বলেন, তোয়ার বাড়ি হাসসোবাজার? অথচ উনার সঙ্গে হর হামেশা দেখা আর কথা হয়। হেলাল ভাইয়ের বাড়ি কক্সবাজারের টেকপাড়া।
হেলাল ভাই আড়াই দশকের বেশি সময় দৈনিক আজাদীতে সাংবাদিকতা করেছেন। সর্বশেষ প্রধান প্রতিবেদক ছিলেন। সেসব ছেড়ে ২০০৪ সালে সমকাল এর ব্যুরো প্রধান ও বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করেন। সেই সময়ে চট্টগ্রামে যে ক’জন সাংবাদিক সবচেয়ে বেশি বেতন পেতেন, সমকালের হেলাল ভাই তাদেরই একজন ছিলেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই ছিটকে গেলেন। কারণ হেলাল ভাই যাদের চাকরি দিয়েছিলেন, তাদেরই কেউ কেউ লেগে গেলেন তাঁর পেছনে। তারা বলতে লাগলেন-এই পদের জন্য হেলাল ভাই ভুল মানুষ। আসলে হেলাল ভাই-ই সহকর্মী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন ভুল মানুষদের। হেলাল ভাইয়ের সুসময় থাকতেই আমি সমকালের ৮ মাসের মাথায় চলে আসি প্রথম আলোতে।এরপর সেখানে ৮ বছর।
ফর্সা রঙের মেদহীন মানুষ হেলাল ভাই যখন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, পরতেন মোটা ফ্রেমের পাওয়ার চশমা। গোফযুক্ত উনাকে খুব ভারী মানুষ মনে হতো। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই একদিন আমি আর বন্ধু রুহুল আমিন রানা আসলাম প্রেসক্লাবে। রানার ইচ্ছে হেলাল ভাইয়ের সঙ্গে পরিচিত হবে। কিন্তু সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসা হেলাল ভাইয়ের ব্যক্তিত্ব দেখে আমি আর সাহস করিনি। পরবর্তীতে উনার সান্নিধ্যে এসে দেখলাম, পানির মতো সরল একজন মানুষ। প্রকৃতপক্ষে এই সরলতার জন্য এই সমাজের এই সময়ের চোখে তিনি একজন অসফল মানুষ। আজাদী ছাড়ার ক্ষেত্রে তাঁর সামনে প্রধান হাতছানি ছিল আর্থিকভাবে লাভবান হওয়াও। সমকালের দেওয়া উচ্চ বেতনে তিনি সাময়িকভাবে সেটা হয়েছিলেন। কিন্তু সেই চাকরি ছাড়ার পর …, নাহ! আর কিছু বলতে চাই না! এরমধ্যে ছোট ছেলেকে হারিয়ে তিনি আরো নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন।
ব্যক্তি হেলাল উদ্দিন চৌধুরী সারাজীবন সাংবাদিকতা করে গেছেন, এই পেশাকে কলুষিত করেননি এক চুল পরিমাণও।কারো ক্ষতি করার মানুষও ছিলেন না। আজাদীর ছায়া থেকে বেরিয়ে মুহূর্তেই তিনি ভুলে পড়ে যান। অথচ হেলাল ভাইয়ের সংস্পর্শ কতজনকে তিলোত্তমা করেছে। হেলাল ভাই সহকর্মী হিসেবে আক্ষরিক অর্থেই ছিলেন লিডার। তিনি সহকর্মীদের ভুলের দায়ভার নিজ কাধে নিতেন। কিন্তু কাজে বাধা দিতে দেখিনি।
হেলাল উদ্দিন চৌধুরী যখন আজাদীতে ছিলেন, তখন সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী তাঁকে অত্যধিক স্নেহ করতেন। সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী নিতেন নিয়মিত খবর। মাহমুদু্ন্নবী চৌধুরীর নামে কী যেন করতেনও! আরো অনেকেই খবর নিতেন হেলাল ভাইয়ের। কিন্তু আজাদী কিংবা সমকালে না থাকা হেলাল ভাই ছিলেন একা। আজ মিছকিন শাহ মাজার মসজিদে সেই হেলাল ভাই একাই খাটিয়ায় শুয়েছিলেন। তাকে ভালোবাসার মানুষগুলো এসেছিলেন সেখানে। এমনকি যারা বলেছিলেন সমকালের ব্যুরো প্রধান হিসেবে হেলাল ভাই ভুল মানুষ তারাও!অতীতে হেলাল ভাই চুপ ছিলেন। আর আজ তারা সবাই চুপ!
তবে যারা হেলাল ভাইকে সারাজীবন ব্যবহার করেছেন, তাদের আজ জানাজার নামাজে দেখিনি।

লেখক : দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর