শিরোনাম :
শরীফ উসমান হাদির সুস্থতা কামনায় কক্সবাজারে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সর্বদলীয় ঐক্যমঞ্চের উদ্যোগে গণ দোয়া মাহফিল উখিয়ায় দুস্থ ও শীতার্তদের মাঝে সেনাবাহিনীর শীতবস্ত্র বিতরণ কক্সবাজার প্রেসক্লাবে মহান বিজয় দিবস উদযাপন সামনের নির্বাচন সুষ্টু না হলে সংকট আরো বাড়বে-সুজন কক্সবাজার প্রেসক্লাবে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপন ওসি প্রদীপের সাজানো মামলা প্রত্যাহার ও সাংবাদিক ফরিদুলের পাসপোর্ট ফেরতের দাবি ড্রাইভার কল্যাণ একতা সমিতির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভা সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে কর্মকর্তারা বদ্ধপরিকর ওসি প্রদীপের আক্রোশের শিকার সাংবাদিক ফরিদুলের ৬ মামলা প্রত্যাহার না হওয়ায় অসন্তোষ

কল্যাণ পার্টির দুই প্রার্থীকে চিনে না কোন ভোটার

নিউজ রুম / ১২৬ বার পড়ছে
আপলোড : শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৪১ অপরাহ্ন

বিডি প্রতিবেদক :

আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজারের দুটি আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক ও পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন। কিন্তু উক্ত দুই আসনের সাধারণ ভোটাররা চিনেন না এই দুজনকে। অনেকেই নাম পর্যন্ত শুনেনি। তবে কক্সবাজার ১ আসনে নৌকা না থাকায় যে কোন রকমের নাটকীয় মোড় নেওয়ার কথা বলছেন বিশ্লেষকরা। কল্যান পার্টির দাবী তারা মাঠে সাধারন ভোটারদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার ১ চকরিয়া পেকুয়া আসন থেকে কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক তাদের দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ আসনের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব সালাউদ্দিন আহমদ সিআইপির মনোনয়ন ঋণ খেলাপির কারণে বাতিল হয়ে যায়। যদিওবা তিনি বাতিলের বিরুদ্ধে আবারো আপিল করার কথা বলেছেন। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব জাফর আলম ও তার সন্তান তানভীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। তার ওপর জাতীয় পার্টির জাপাসহ ‌মোট ৭ জন প্রার্থী এখনো মাঠে রয়েছে।

রবিবার মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে কল্যান পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন জাতীয় পার্টি জেপির এ এইচ এম সালাউদ্দিন মাহমুদ মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ।

এই আসনে এখনো প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন, বর্তমান সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব জাফর আলম,

ওয়ার্কার্স পার্টির আবু মোহাম্মদ বশির উল আলম, তানভীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিন, বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন, জাতীয় পার্টি যাপার হোসনে আরা ও কমর উদ্দিন আরমান।

কক্সবাজার ১ আসনে কল্যাণ পার্টি থেকে পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক প্রার্থী হলেও চকরিয়া পেকুয়ার ভোটাররা তাকে চিনেন না।

চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কালাম, একই ইউনিয়নের ৪ নাম্বার ব্লকের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান নামে কাউকে আমরা চিনি না। আমরা যাদের নাম জানি যাদের কে চিনি তাদেরকেই ভোট দেবো।

সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়নের তিন নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম নামে কাউকে আমি চিনিনা। তিনি আমাদের আসনে ভোট করছেন এরকম বিষয়ও জানিনা। এমপি প্রার্থী হিসেবে আমি জাফর আলম ও সালাউদ্দিন সিআইপিকে চিনি।

পেকুয়া সদরের ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, ভোট আসলে অনেকেই প্রার্থী হয়, কিন্তু তাদেরকে মানুষ চিনে কিনা এটা কোনভাবেই চিন্তা করে না। সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম এমপি প্রার্থী হিসেবে এরকম নাম আমি কোনদিন শুনিনি। আমাদের এলাকার সন্তান সিআইপি সালাউদ্দিন, ঋণ খেলাপির কারণে তিনি ভোটে দাঁড়াতে না পারলে আমরা প্রয়োজনে জাফর আলমকে ভোট দেব। কিন্তু অপরিচিত কোনো মানুষকে আমাদের ভোট দেব না।

চকরিয়া হারবাং এলাকার বাসিন্দা মুসলেম উদ্দিন বলেন, সৈয়দ ইব্রাহিম নামে কোন মানুষকে আমরা চিনি না। আমরা ভোট দেবো আমাদের এলাকার লোকদের। বাইরের থেকে এখানে এসে কেউ ভোট করলে আমরা তাকে ভোট দেবো না।

আমাদের এলাকার অনেকগুলো স্বতন্ত্র প্রার্থী আছে। আমরা প্রয়োজনে তাদের ভোট দেবো।

কক্সবাজার ১ আসনের নৌকার মনোনীত প্রার্থী ও কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমদ সিআইপি বলেন, আমার মনোনয়ন বাতিল হওয়ার বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত আমি আইনি লড়াই চালিয়ে যাব।

এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব জাফর আলম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে নৌকা না দিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করার যে সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন, সেজন্য আমি নেত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আমি আমার এলাকার মানুষের সেবা করতে চাই।

এই আসনে নৌকা প্রতীক না থাকায়  নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বেশ কিছু নাটকীয় মোড় নিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে থাকলে কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম হাত ঘড়ি প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের ভোট কতটা নিজের পক্ষে নিতে পারবেন তা নিয়ে নানা প্রশ্নের তৈরি হচ্ছেন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

কল্যান পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন বলেন, সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের দিন ও চকরিয়া পেকুয়ার মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সাধারণ ভোটাররা কল্যান পার্টির পক্ষে থাকবেন বলেও জানান তিনি।

এদিকে কক্সবাজার -৩ কক্সবাজার সদর রামু ঈদগাঁও এলাকা থেকে কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন নির্বাচন করছেন। কিন্তু এই আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল ছাড়াও বিএনএফ এর প্রার্থী মোঃ ইব্রাহিম, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির শামীম আহসান ,জাতীয় পার্টির জাপার মোহাম্মদ তারেক রয়েছেন।

এই আসনের ভোটাররাও চিনেন না কল্যান পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুনকে।

ঈদগাঁও বাজারের ব্যবসায়ী রহিম উল্লাহ বলেন, আব্দুল আউয়াল মামুন নামের কোন প্রার্থীর নাম আমি শুনিনি। যে প্রার্থীর নাম শুনেনি  সেই প্রার্থীকে ভোট কিভাবে দেব।

রামুর গর্জনিয়া এলাকার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম, খোকন ও রমিজ উদ্দিন বলেন, কল্যাণ পার্টির নামেই তো আমরা শুনিনি। সেখানে মামুন এটা আবার কে। আমরা এই এলাকার সংসদ সদস্য হিসেবে কমলের নাম শুনেছি।

কক্সবাজার সদর উপজেলার মোহরীপাড়া এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল আউয়াল মামুন নামে এমপি প্রার্থী এই প্রথম আপনার কাছে শুনলাম। যাকে চিনি না তাকে ভোট কিভাবে দেব। ভোট আমরা আমাদের পরিচিতজনদেরকেই দেব।

এ ব্যাপারে কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন বলেন, আমি মানুষের অনেক সাড়া পাচ্ছি। বর্তমানে যারা আছে তাদের উপর অতিষ্ঠ হয়ে আছে সাধারণ মানুষ। আমি যখন সাধারণ মানুষদের কাছে যাচ্ছি ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।

তিনি বলেন দীর্ঘদিন, দেশের বাইরে থাকার কারণে মানুষের সাথে সেভাবে পরিচিত হয়ে উঠেনি। তবে নির্বাচনে দাঁড়ানোর পর আমি ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।

কক্সবাজার ৩ আসন থেকে নির্বাচিত হলে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলেও জানান তিনি।


আরো বিভিন্ন বিভাগের খবর