পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শুধুমাত্র বাংলাদেশে নয়, ভারতেও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা প্রবেশ করেছে। এরই মধ্যে ভারত থেকে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিয়েছে মিয়ানমার। আমাদের দেশে অনুপ্রবেশকারীদেরও নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
শনিবার ১০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট-বন্দর সড়ক সংলগ্ন ডিসি পার্কে জেলা প্রশাসন আয়োজিত মাল্টি কালচারাল ফেস্টিভ্যাল এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
‘মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের প্রভাব বাংলাদেশে পড়ছে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর এমন বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমরা রাখি না। যেটি ঘটছে সেটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেখানে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সাথে আরাকান বাহিনীসহ অন্যদের সংঘাত চলছে। সেই সংঘাতের কারণে দু’জন মানুষেরও মৃত্যু হয়েছে, এটা সঠিক। এ সবের বিরুদ্ধে সম্প্রতি মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
‘বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী কারাগারে থাকা বিএনপি নেতাদের মৃত্যুর ঘটনা পরিকল্পিত বলে দাবি করেছেন’ এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আসলে বিএনপি’র দুই-তিনজন নেতা টেলিভিশনে কথা বলেন, সেখানেই শুধু তারা আছে, অন্য কোথাও বিএনপির অবস্থান নাই। তারা এই সমস্ত কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করেন। কারাগারে মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যু অনেকেরই হয়। কারাগারে থাকা আমাদের দলেরও অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে । এসব কথা বলে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোন সুযোগ নাই।
তিনি বলেন, আসলে বিএনপি’র এখন কোনো রাজনীতি নেই। নির্বাচনে অংশ না নিয়ে তারা যে ভুল করেছে এজন্য তাদের নেতারা এখন কর্মীদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের কর্মীরা এখন প্রচণ্ডভাবে হতাশ, সেই হতাশা কাটানোর জন্য নানা ধরনের বক্তব্য দিয়ে তারা যে এখনও টিকে আছে সেটিই প্রমাণ করার চেষ্টা করছে এবং নানা ধরনের কর্মসূচির পরিকল্পনা তারা করছে।
শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের ডিসি পার্কে জেলা প্রশাসন আয়োজিত মাল্টি কালচারাল ফেস্টিভ্যাল এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ড. হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত লিও টিটল আউসান জুনিয়র, এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাহবুবুল আলম ও ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ড. রাজীব রঞ্জন।
চট্টগ্রামের উন্নয়ন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য গত ১৫ বছরে বহু প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ভারতীয় উপমহাদেশের নদীর তলদেশ দিয়ে প্রথম টানেল হয়েছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে। এখানে বে-টার্মিমাল নির্মিত হতে যাচ্ছে। সেটি নির্মিত হলে এটি আরেকটি চট্টগ্রাম বন্দর হবে। এখন চট্টগ্রাম বন্দরের সব মিলিয়ে দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৬ কিলোমিটার। আর বে-টার্মিনাল হবে ১০ কিলোমিটার, এর ড্রাফট হবে ১২ মিটার। সেটির কার্যক্রম সহসা শুরু হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হবে। এরপর এখানে যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে সেটি অভাবনীয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ফৌজদারার থেকে চট্টগ্রাম বন্দর লিঙ্ক রোড ফোর লেন করা হবে। এই রাস্তার সাথে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরের সংযোগ ঘটানো হবে।
চট্টগ্রামের ডেপুটি কমিশনার আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।